আপডেট :

        প্রাইজবন্ডে প্রথম পুরস্কার

        পাউবোর ৩৭০ বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন

        সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় বিদ্যুৎহীন

        সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা সন্ধ্যায়

        সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা সন্ধ্যায়

        ভিসা অব্যাহতি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ

        সুন্দরবনে সন্ধ্যায়ও বিক্ষিপ্তভাবে অর্ধশতাধিক স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়

        সুন্দরবনে সন্ধ্যায়ও বিক্ষিপ্তভাবে অর্ধশতাধিক স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়

        উচ্চশিক্ষাকে ডিজিটালাইজেশনে আওতায় আনার সিদ্ধান্ত

        কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওপরে ড্রোন, পাহারায় পুলিশ’

        বাংলাদেশের গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয় বরং উন্মুক্ত

        বাংলাদেশের গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয় বরং উন্মুক্ত

        দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছয় দিন ধরে হতে পারে ঝড়-বৃষ্টি

        দীর্ঘ সময় পর ঢাকা-জয়দেবপুরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

        জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পারফর্ম বিবেচনা করে বিশ্বকাপ ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে

        জবিতে আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাড মেকিং প্রতিযোগিতা

        মিয়ানমারের আরও ৪০ সীমান্তরক্ষী টেকনাফে

        রাজউকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ এলো নতুন বিধিমালা

        সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু

        চুক্তিতে যেতে আগ্রহ নন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন

সাগরে ৫ ঘণ্টা সাঁতার কেটেও বাঁচতে পারেননি শামীম

সাগরে ৫ ঘণ্টা সাঁতার কেটেও বাঁচতে পারেননি শামীম

ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবির পর বেঁচে ছিলেন আহসান হাবিব শামীম। কয়েকজনের সঙ্গে একটি বয়া ধরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সাঁতার কাটেন তিনি। কিন্তু এতক্ষণ সাঁতারের পর ক্লান্ত হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন শামীম। আরও কয়েকজনের মতো বয়া থেকে হাত ফসকে ডুবে যান তিনি। তীরে উঠে সহযাত্রী মাছুম অন্যদের এই তথ্য জানান। এই খবরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের বাদেভুকশিমইল গ্রামে শামীমের বাড়িতে এখন শোকের মাতম। তার লাশ কখন বাড়িতে আসবে সেই অপেক্ষায় রয়েছেন পরিবার ও গ্রামবাসী।
আহসান হাবিব শামীম বাদেভুকশিমইল গ্রামের মৃত হাফিজ আবদুল খালিকের ছেলে। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই। ভাইদের মধ্যে দুই ভাই ফ্রান্স ও তিন ভাই থাকেন মধ্যপ্রাচ্যে। বড় ভাই হাজী আবু সাইদ বাচ্চু সৌদি আরবে থাকলেও এখন দেশের বাড়িতে আছেন।
আবু সাইদ বাচ্চু জানান, ‘শামীম ছিল কোরআনে হাফেজ। সিলেট গোটাটিকরে একটি মাদ্রাসায় পড়ছিল সে। গত বছর তার দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তার বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাড়ির কেউ জানতো না। পরিবারের কোনও সদস্যকে না জানিয়ে শামীম লিবিয়া চলে যায়। লিবিয়া থেকে তালতো ভাই সিলেটের গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ কদুপুরের মাছুম আহমদ ও মারুফ আহমদসহ আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে নৌকায় ওঠে ইতালি হয়ে ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য। ফ্রান্সে আমাদের দুই ভাই সেলিম ও সুমনের কাছে যেতে চেয়েছিল তারা। ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি হলে সাগরের পানিতে এই তিনজন একটি বয়ায় প্রায় ৫ ঘণ্টা সাঁতার কাটে। একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে বয়া থেকে হাত ফসকে পড়ে শামীম ও মারুফ সাগরে নিখোঁজ হয়। মাছুমসহ কয়েকজন বেঁচে যায়। বেঁচে যাওয়া মাছুম আহমদ ও নিখোঁজ মারুফ আহমদ আপন ভাই।’
তিনি আরও জানান, গত ৭ মে মা রাজনা বেগমের কাছে ফোন করেছিল শামীম। জানিয়েছিল পরদিন ৮ মে ফ্রান্সের উদ্দেশে রওনা দেবে। এরপর থেকে শামীমের আর কোনও যোগাযোগ হয়নি পরিবারের সঙ্গে।
নিখোঁজ শামীমের বড় ভাইয়ের ছেলে কামরান হোসেন ও মেয়ে ফারজানা ইসলাম দিপা, নাহিদ কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘ছোট চাচা খুবই প্রিয়। তিন মাস আগে বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে যান। আমাদের প্রিয় বাইসাইকেলটি বিকাল বেলায় আর কখনই চালাবেন না চাচা। কষ্ট হচ্ছে।’
পরিবারের সদস্যরা দ্রুত শামীমের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি অবেদন জানান।
এলাকাবাসী জানান, শামীম গত কয়েক বছর রমজান মাসে তারাবির নামাজের ইমামতি করতেন বাড়ির কাছে বায়তুস সালাম জামে মসজিদে।
বাদেভুকশিমইল গ্রামের রফিক মিয়া জানান, ‘শামীমের মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার খবর শোনার পর থেকে গ্রামবাসী শোকাহত। তার পরিবারও বাকরুদ্ধ।’
শামীমের সাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাদেভুকশিমইল মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফিজ রেজাউল করিম জানান, ‘২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসার প্রথম দিকের ব্যাচের ছাত্র ছিলেন হাফেজ আহসান হাবীব শামীম। ২০১৩ সালে তার হিফজ শেষ হলে অনেক মসজিদেই তারাবির নামাজ বেশ সুনামের সঙ্গে পড়িয়েছেন। হাফিজি শেষ হওয়ার পর শামীম সিলেটের একটি আলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। ন¤্র ও ভদ্র স্বভাবের প্রিয় ছাত্রের এমন দুর্ঘটনায় আমরা শোকে বিহ্বল। নিখোঁজের খবর আসার পর থেকেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোরআনে খতম শেষে দোয়া হচ্ছে।’
শামীমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৮ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল শামীমের। সিলেটের রাজা ম্যানশনের ইয়াহইয়া ওভারসিজ এজেন্সির সঙ্গে এমন চুক্তি হয়েছিল তাদের। এই এজেন্সির মালিক এনাম আহমদের বাড়ি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। এলাকার পরিচয়ের সুবাদেই এ চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তারা। ফেঞ্চুগঞ্জের আরও কয়েকজন এই এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বলেও জানা গেছে।
নিখোঁজের মধ্যে রয়েছেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের শ্যালক ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমদের ছোট ভাই মারুফ আহমদ। তিনি গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কদুপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কটালপুর এলাকার মুয়িদপুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আবদুল আজিজ (২৫), একই গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ (২৪) এবং সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন (২৪) নিখোঁজ আছেন। এ ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের দিনপুর গ্রামের আরেকজন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি।


শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত