আপডেট :

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল

        মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য উন্নতি

        প্রচণ্ড এই গরম থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়ে দোয়া

        যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার

        এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো

        মার্কিন বিমান আটকে দিলো ‘যুদ্ধবিরোধী’ কুমির!

        চিতাবাঘের আক্রমণে আহত জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হুইটাল

        যুক্তরাষ্ট্রে গরুর দুধেও বার্ড ফ্লু শনাক্ত

        পবিত্র হজ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

        গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

        পার্লামেন্টে জুতা চুরি, খালি পায়ে ঘরে ফিরলেন পাকিস্তানের এমপিরা

        অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

        কুড়িগ্রামে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু

        চীন সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        দেশে একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম আরও কিছুটা কমানো হয়েছে

        ২৮ এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চলছে

        ইউক্রেনে গোপনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

        আবহাওয়া বিবেচনায় খোলা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

        ‘ব্ল্যাক’ ফিরে যাচ্ছে পুরনো লাইনআপে!

        অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি কামনায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ

কবিতা

কবিতা

 

 

এক মেডের গপ্পো
অঞ্জলি দে নন্দী

আমার ফ্ল্যাটের গেট।
কলিং বেল বাজছে।
আমার সিট ছিল সোফা সেট।
সামনে ছুটন্ত, বলন্ত টিভি।
আমি দিল্লীর বাঙালী বিবি।
কর্তা বাইরে বেরোবে বলে সাজছে।
কোন এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাবে।
রাতে ওখানেই খাবে।
ডিনার সেরে এখানে আসবে ফিরে।
এখন দিনের আলো কমছে ধীরে ধীরে ধীরে।
আমি সোফা থেকে উঠে খুললাম গেট।
এক মলিন শাড়ি নারী।
ও হাতজোড় করে বলল, নমস্তে ম্যাডাম জী!
ও করল মাথা হেঁট।
আমি বললাম, কি দরকার?
ও বলল, বিহার আমার বাড়ি।
কাজের খোঁজে এসেছি। ম্যাডাম জী।
আমি বললাম, হ্যাঁ হ্যাঁ আমার দরকার।
কাল থেকে ও আমার বর্তন ও ঘর সাফ করবে।
আর বেকফাস্টেও নিজের পেট ভরবে।
মাইনে দেড় হাজার টাকা মাসে।
আর ছুটি চার দিন।
ও কাজ করতে আসে।
সঙ্গে ওর মেয়েও আসে।
জেনেছি, ওর নাম নীতি।
আর ওর নাম ইতি।
গ্রামে ও খাটত ক্ষেতে।
এভাবেই ওরা পেট রোজ খেতে।
বরটা মরেছে সবে, রেখে গেছে ঋণ।
ধার করে সে দারু খেত হর দিন।
আর বৌ পেটাতো রাতে ফিরে মাটির ঘরে।
ও আমার সঙ্গে চা খায় বসে আমার পায়ের পাশে।
অনেক গল্পও ও করে।
ওর মেয়েটা ক্লাস নাইনে পড়ছিল।
ছাড়িয়ে দিয়ে এখানে এসেছে নিয়ে।
ও তো গ্রামে টিউশনিও করছিল।
বরটা গেল ক্যান্সারে মরে।
ভাসুর-জা আর থাকতে দিল না ঘরে।
দেওরটা বউটাকে গ্রামে রেখে আসে বিয়ে করে।
ও থাকে এখানে, ঘর ভাড়া করে।
এক কলেজে পড়ে।
এই বৌদী গ্রাম থেকে ওর পড়ার খরচ চালাতো।
আবার ওর বউয়েরও খরচ চালাতো।
আর এখনও ও-ই দুজনের খরচ চালায়।
থাকে একসাথে।
দেওরের ভাড়া ঘরে।
দিনে কাজ করে।
শোয় রাতে।
দেওরটা ওকে খুব জ্বালায়।
অত্যাচারও করে।
মারে বড় বৌদিকে, আবার মার খায়ও ওর বউ।
ও, ওর মেয়ে, দেওর ও দেওরের বউ।
সংসার বড়। আর একজনই তো রোজগার করে।
আমি বললাম, মেয়েকে ফের দে স্কুলে ভর্তি করে।
আমি হেল্প করবো,
পড়া দেখিয়ে দব।
ও বলল, খরচ চালাতে পারব না গো ম্যাডাম জী!
গ্রামে তো ও টিউশনি করে
আপন পড়ার খরচ চালাতো। ম্যাডাম জী!
আমি ভাবি,
ও কত মহতী ভাবী।
নিজের বেটির পড়া বন্ধ রেখে
দেবরের পড়ার খরচ করে।
এর কিছুদিন পরে
ওর মেয়েকে আমার এক বান্ধবী নিল ডেকে।
চব্বিশ ঘন্টা তার ঘরে থেকে
সংসারের সব কাজ করতে হবে।
মাসে পাঁচ হাজার টাকা মাইনে
ও চার বেলা খেতে দেবে।
আমি আশ্চর্য হই ভেবে -
এদের ইতিহাস কে আর লেখে কবে?
এরা তো চিরতরেই অপ্রকাশ্যই রবে।
আমরা তো কোনদিনই এদের দিকে ঘুরে চাই নে।
নিজেরদের প্রকাশ করি, আপন সাইনে।
পৃথিবী সেদিন সুখের হবে তবে
যেদিন এরা ফোকাসে রবে।
জানি না কবে সেসুদিনের উদয় হবে?
আমাদের এ জীবন্ত ভবে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত