ট্রাম্পের বাণিজ্য চাপের মুখে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তা
রুশনীতির কাছে যুক্তরাষ্ট্র পরাজিত!
ভ্লাদিমির পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের
নিজেদের মূল্যবোধ সারাবিশ্বের ওপর
চাপিয়ে দিতে পারে না। কয়েকটি পশ্চিমা শক্তি
তাদের কথিত গণতন্ত্র অন্য দেশের ওপর
চাপিয়ে দেয়ার যে চেষ্টা করছে তার
বিরুদ্ধেও তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, আফ্রিকা ও
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি
করার কোনো অধিকার পশ্চিমা কয়েকটি
দেশের নেতার নেই। তিনি বলেন, আপনারা
ভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি এবং প্রথার মানুষের ওপর
নিজেদের ভার্সনের গণতন্ত্র যান্ত্রিক
উপায়ে কিংবা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চাপিয়ে দিতে
পারেন না।
একটি ডকুমেন্টারিতে প্রেসিডেন্ট পুতিন এসব
কথা বলেছেন। গত রোববার ওই ডকুমেন্টারি
রাশিয়ার টেলিভিশনে সম্প্রচার হয়েছে। এতে
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বৈধ
কোনো সরকারকে খাটো করা উচিত নয়;
সে সরকার যদি অসম্পূর্ণ হয় তাহলেও
রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা ঠিক নয়। সিরিয়া
সংকটের কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন,
সেখানকার সমস্যা সমাধানের জন্য রাশিয়া সব
পক্ষকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত
রয়েছে।
এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দশকের
সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর অন্যতম
সিরিয়া সংকট। গত পাঁচ বছরের সহিংসতায়
গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় মারা গেছে দুই লাখ
পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ। ঘরছাড়া হয়েছে
আরও কয়েক লাখ। দীর্ঘদিন ধরে
সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে
আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে আন্তর্জাতিকভাবে
এই সংকটের অবসান ঘটেনি। বিগত
বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ইসলামি
স্টেটবিরোধী অভিযানের নামে সিরিয়ার
পরিস্থিতি আরও খারাপ করে ফেলে। সংকট দূর
হওয়া তো দূরের কথা বরং সেই সংকট
বেড়েছে আরও বহু গুণে।
সিরিয়ায় পশ্চিমা স্বার্থের সংশ্লিষ্টতা অনেকেই
বোঝতে পেরেছেন। দীর্ঘদিন
আইএসবিরোধী অভিযান পরিচালনার নামে
সেখানে আইএসকে মদদ দেওয়া এবং তাদের
কাছ থেকে তেল কেনার ব্যাপারটিও একসময়
ফাঁস হয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট বাশার আল
আসাদের সমর্থন দেওয়া রাশিয়া গত ৩০
সেপ্টেম্বর বিমান হামলা চালায় সিরিয়ার আইএস
ঘাঁটিতে। সিরিয়ায় রুশ বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর
থেকে সে হামলা কতটা তীব্র ও কার্যকরী
তা সবাই দেখেছে। রাশিয়ার হামলার চিত্র কেমন
তা বিদ্রোহীদের পালানোর ঘটনার মধ্যদিয়ে
অনেকটা পরিষ্কারও হয়ে যাচ্ছে। সে সময়
রাশিয়ার এই অভিযানে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো ও
তাদের মিত্রদের গায়ে তীব্র জ্বালা
ধরেছে। কারণ পুতিনের সিরিয়া হামলা শুরু
থেকেই পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো বিরোধিতা শুরু
করে। আর তাদের বিরোধিতার কারণও এখন
সবার সামনে বেশ পরিষ্কার। মাত্র এক মাসেরও
কম সময়ে রুশবাহিনী আইএস জেহাদিদের
প্রায় কাবু করতে সমর্থ হয়েছিল।
রুশবিরোধী যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে
সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সম্মত হতে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার লক্ষ্যে
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একসঙ্গে কাজ করতে রাজি
হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে বাশার
আল আসাদের থাকা না থাকার বিষয়টি সে
দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে রাশিয়ার এই দাবি
আপাতত মেনে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রুশ
প্রেসিডেন্ট ভøাাদিমির পুতিনের সঙ্গে
মস্কোয় তিন ঘণ্টার বৈঠকে অংশ নেন মার্কিন
পরর্রামন্ত্রী জন কেরি। জন কেরি ও
পুতিনের সে আলোচনায় সিরিয়া সংকট নিয়ে দুই
দেশের মধ্যে বিবদমান দূরত্ব কিছুটা হলেও
কমেছে। আর এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়ার নীতির কাছে মাথানত করল।
অন্যদিকে, সিরিয়া নিয়ে আপাতত পুতিনের
কথাকেই মেনে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিজেদের নীতি থেকে বরাবরই সরে আসার
অভ্যাস রয়েছে এই পরাশক্তির। রাশিয়ার
পরর্রামন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, তারা
ইন্টারন্যাশনাল সিরিয়া সাপোর্ট গ্রুপের মন্ত্রী
পর্যায়ের আলোচনার পক্ষে।
শেয়ার করুন