ট্রাম্পের বাণিজ্য চাপের মুখে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তা
উদ্ভট যত ক্ষমতার অধিকারী রানি এলিজাবেথ
রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়-এর দারুণ
কিছু ক্ষমতা আছে। এগুলোর একচ্ছত্র
মালিক তিনি। অনেকে চোখে এসব
ক্ষমতা বড়ই অদ্ভুত বা বিদঘুটে মনে
হতে পারে। তার এসব ক্ষমতার কথা
অনেকেই জানেন না। বিজনেস
ইনসাইডারের প্রতিবেদনে জেনে
নিন।
১. টেমস নদীর সব রাজহাঁসের মালিক
রানি এলিজাবেথ। এ নদীর মুক্ত
পানিতে যেসব হাঁস ঘুরে বেড়াবে তা
সব রানির। তথ্যটি উঠে এসেছে যখন
এই হাঁসগুলোকে মানুষ ধরতে শুরু
করেছে।
২. রানি গোটা জলধারা এবং জলজ
প্রাণীর মালিক। রানির অধীনে আছে
তিমি, ডলফিন এবং অন্যান্য প্রাণী।
এই নিয়ম ১৩২৪ সাল থেকে কার্যকর।
কিং এডওয়ার্ড দ্বিতীয় এর আমল তখন।
জলজ প্রাণী নিধন বন্ধে এই নিয়মের
প্রয়োগ ঘটে।
৩. ব্রিটেনের একমাত্র রানিই
ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি
চালাতে পারেন। রেজিস্ট্রেশন
নম্বরও প্রয়োজন নেই তার গাড়িতে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এলিজাবেথ
ড্রাইভিং শিখেছেন। লাইসেন্স না
থাকলেও গাড়ি চালাতে দারুণ
পারদর্শী তিনি।
৪. রানির পাসপোর্টও নেই। রাজ
পরিবারের সদস্য হওয়াতে তাকে
নাগরিকত্বের প্রমাণ রাখার প্রয়োজন
নেই। এটি ছাড়াই তিনি বিশ্বের
বিভিন্ন দেশে ঘুরতে পারেন।
৫. রানির ব্যক্তিগত কবি আছে।
ব্রিটিশ সোসাইটির মাধ্যমে
রাজকবির নিয়োগ দেন। এই কবির
কার্যক্রম জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তার বাৎসরিক বেতন ২০০ পাউন্ড।
সঙ্গে এক পিপে ক্যানারি ওয়াইন
বোনাস।
৬. আইনের খসড়াকে সত্যিকার আইনে
পরিণত করতে রানির স্বাক্ষর
প্রয়োজন। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে
কোনো আইন পাস হওয়ার পর তা
বাস্তবিক আইনে রূপ নিতে রানির
স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়।
৭. ব্রিটেনের উচ্চকক্ষে লর্ড
নিয়োগের ক্ষমতা আছে রানির। তবে
এই ব্যক্তিকে মনোনীত করতে
নির্বাচিত মন্ত্রীদের পরামর্শ নিতে
হয়।
৮. রানিকে ট্যাক্স প্রদান করতে হয়
না।
৯. আগে রানি বর্তমান
পার্লামেন্টকে বাতিল করে নতুন
নির্বাচনের আদেশ দিতে পারতেন।
তবে ২০১১ সাল থেকে এ কাজটি
করতে হাউজ অব কমোনসের দুই-
তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন পড়ে।
১০. বীর নাইটরা আগের মতো ঘোড়ায়
চড়ে ঘুরে না বেড়ালেও এখনো তাদের
অস্তিত্ব রয়েছে। রানি যাদের লর্ডস
মনোনীত করেন, তাদের নাইট বানিয়ে
নেন ব্যক্তিগতভাবে।
১১. রাজ পরিবারের কোনো তথ্য
চেয়ে কেউ অনুরোধ করলে তা
দেওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। এটি হয়
দ্য গার্ডিয়ান এবং সরকারের মধ্যে
এক আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। এর
মাধ্যমে তথ্য দেওয়া হয়
গার্ডিয়ানকে। তার মানে এই নয় যে,
এটি ভবিষ্যতে আবারো হতে পারে।
১২. 'গ্রেভ কনস্টিটিউশনাল ক্রাইসিস'
পরিস্থিতিতে রানি মন্ত্রীদের
পরামর্শ না শুনেও সিদ্ধান্ত নিতে
পারেন। তবে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে
স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও
বিষয়টির অস্তিত্ব রয়েছে।
১৩. অস্ট্রেলিয়ার হেড অব স্টেট
হওয়ার কারণে সে দেশের
সরকারপ্রধানকে বরখাস্ত করতে
পারেন রানি। ১৯৭৫ সালে
অস্ট্রেলিয়া অবস্থানরত রানির
প্রতিনিধি স্যার জন কের সে দেশের
প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। একই
ক্ষমতাবলে রানি যেসব দেশের
প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে
পারেন তাদের মধ্যে রয়েছে
অ্যান্টিগা, বারবুডা, বাহামাস,
বারবাডোস, কানাডা, গ্রেনাডা,
জ্যামাইকা, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া
নিউ গিনি, সেইন্ট কিটস অ্যান্ড
নেভিস, সেইন্ট লুসিয়া, সেইন্ট
ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডাইনস,
সলোমন আইল্যান্ডস এবং টুভালু হেড
অব স্টেট।
১৪. ইংল্যান্ডের চার্চের প্রধান কুইন
এলিজাবেথ দ্বিতীয়। তার টাইটেলটি
হলো 'ডিফেন্ডার অব দ্য ফেইথ অ্যান্ড
সুপ্রিম গভর্নর অব দ্য চার্চ অব
ইংল্যান্ড'।
১৫. প্রতিবছর রানি যে বয়সে পা
রাখেন, সে কয়টি বিশেষ সিলভার
কয়েন পেনশনভোগীদের প্রদান করেন
ইস্টারে আয়োজিত বিশেষ
আয়োজনে। এ বছর তিনি ৮৯ বছরে পা
রাখবেন এবং ইস্টারে ৮৯টি রৌপ্য
মুদ্রা প্রদান করবেন।
১৬. এ যুগে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হলেও
রানি আইনের উর্দ্ধে এবং তিনি
আদালতে কোনো প্রমাণপত্র জমা
দিতে বাধ্য নন।
১৭. 'গ্রেভ কনস্টিটিউশনাল ক্রাইসিস'
পরিস্থিতিতে রানি মন্ত্রীদের
পরামর্শ নিতে পারেন, তাদের সাহস
দিতে পারেন এবং তাদের সাবধান
করতে পারেন। এটি সংঘটিত হয়
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠকের
মাধ্যমে।
১৮. ঐতিহাসিকভাবে বেশ কিছু নিয়ম
এখনো রানির জন্যে পালনীয় বলে
গণ্য হয়। যেমন- মাছ ধরা এবং মাঠে
পশু চড়ানোর জন্যে হাঙ্গারফোর্ড
নামের বাজার এলাকাকে একটি লাল
গোলাপ প্রদান করতে হয় রানিকে।
রানি ডেকে পাঠানোমাত্র ডিউক অব
অ্যাথলকে একটি গোলাপ পাঠাতে
হয়। রানি ভিক্টোরিয়ার আমলেও তা
পালন করা হতো। স্যাভারনেক
ফরেস্টের মালিক মারকুইস অব
এলিসবুরি। রানি এই জঙ্গলের পাশ
দিয়ে যাওয়ার সময় মারকুইস অব
এলিসবুরিকে একটি হর্ন বাজাতে হয়।
একইভাবে আয়ারল্যান্ডের
ডানল্যাম্বার্ট ক্যাসলকে প্রাচীন
বিউগল ধ্বনি বাজাতে হয়।
১৯. ব্রিটেনের জমির মালিকদের
'কুইট-রেন্ট' নামে বিশেষ এক ধরনের
ট্যাক্স প্রদান করতে হয়। শুলজলেম্যুইর
ক্যাসলের জমির মালিকদের নিউ
ইয়ারস ইভ এর সময় তিনটি পোর্ট গ্লাস
প্রদান করতে হয় রানিকে। গ্রীষ্মের
মাঝামাঝিতে হলেও ফোলিসের
জমির মালিকদের বরফের একটি বল
প্রদান করতে হয় রানিকে। সিটি অব
গ্লসেস্টারকে জমির জন্যে রানিকে
বিপুল পরিমাণে ইল পাই শস্য প্রদান
করতে হয়। গ্রেট ইয়ারমাউথকে ১০০টি
হেরিং মাছ দিয়ে ২৪টি পেস্ট্রি
তৈরি করে শেরিফকে পাঠাতে হয়।
শেরিফ তা লর্ড ম্যানরের কাছে
পাঠান। আর সেখান থেকে সেই
পেস্ট্রি চলে যায় রানির কাছে।
শেয়ার করুন