আপডেট :

        ধর্ষণ মামলায় হার্ভকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০২০ সালে দেওয়া রায় বাতিল

        ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের জেরে স্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল করল সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

        ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

        যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে মারমুখী পুলিশ

        ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেফতার শতাধিক

        পশ্চিম ভারত মহাসাগর অঞ্চলে মাদক পাচার এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে

        গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর যুক্তরাষ্ট্রের !

        রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করার নির্দেশ

        জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান কখনোই ভুলবার নয়

        ৮৮ আসনে দুপুর পর্যন্ত কত ভোট পড়লো

        ২৬ জেলার ওপর তাপপ্রবাহ

        চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

        চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

        কেন্দ্রীয় কি ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে, প্রশ্ন টিআইবির

        ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

        বিমান হামলায় নিহত এক নারীর গর্ভ থেকে প্রসব হওয়া সন্তানটি মারা গেছে

        ফেনীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কিশোর গ্যাং গ্রেফতার

        তাপ্প্রবাহে ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড

        তিন দিনের সফরে বর্তমানে চীনে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        ভারতীয় দলে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বিরাট কোহলি নেই

ইশতেহার বাস্তবায়নই সরকারের চ্যালেঞ্জ

ইশতেহার বাস্তবায়নই সরকারের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। গত কয়েক বছর ধরে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আগামীতে এই সমৃদ্ধ ধরে রেখে নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন করাই নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এবার সরকারের অন্যতম কাজ হবে মানুষের আয় বাড়ানো, দারিদ্র্যবিমোচন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। তবে নতুন সরকার জানান দেবে আগামী ৫ বছরে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কতটুকু বাস্তবায়ন হয় তার ভেতর দিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গতকাল সোমবার নতুন মন্ত্রিসভার ৪৭ সদস্য শপথ নিয়েছেন। বেলা সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শপথ পড়ান। রীতি অনুযায়ী, প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন। এ শপথের মধ্যে দিয়ে টানা তৃতীয়বার এবং চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।এদিকে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে অভাবনীয় জয়ের পর টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করতে গিয়ে পুরোনো সারথীদের অধিকাংশকেই মন্ত্রিসভায় রাখেননি শেখ হাসিনা। এই প্রথম তার সরকারে শরিক দলের কারও জায়গা হলো না। টানা তিনবার বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্ব দেওয়া শেখ হাসিনা সমৃদ্ধ বাংলাদেশে’ পৌঁছানোর অভিযাত্রায় নতুন সরকার সাজিয়েছেন মূলত নতুনদের নিয়ে। শপথ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত তার বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেত্রী সাজেদা চৌধুরী ও কয়েকজনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিচারপতিরা, শিক্ষক, কূটনীতিকরাসহ এক হাজারের মতো অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এই মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ ৩১। পুরোনোদের মধ্যে ৩৬ জন বাদ পড়েছেন। বেলা সোয়া তিনটায় বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেই নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রায় সবাই বঙ্গভবনে চলে আসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।গত রোববার বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন ২৪ জন। তারা হলেন আ ক ম মোজাম্মেল হক (মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক), ওবায়দুল কাদের (সড়ক পরিবহন ও সেতু), আব্দুর রাজ্জাক (কৃষি), আসাদুজ্জামান খান কামাল (স্বরাষ্ট্র), হাছান মাহমুদ (তথ্য), আনিসুল হক (আইন), আ হ ম মুস্তফা কামাল (অর্থ), তাজুল ইসলাম (স্থানীয় সরকার), দীপু মনি (শিক্ষা), এ কে আবদুল মোমেন (পররাষ্ট্র), এম এ মান্নান (পরিকল্পনা), নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (শিল্প), গোলাম দস্তগীর গাজী (বস্ত্র ও পাট), জাহিদ মালেক (স্বাস্থ্য), সাধন চন্দ্র মজুমদার (খাদ্য), টিপু মুনশি (বাণিজ্য), নুরুজ্জামান আহমেদ (সমাজকল্যাণ), শ ম রেজাউল করিম (গণপূর্ত), মো. শাহাব উদ্দিন (পরিবেশ ও বন), বীর বাহাদুর উ শৈ সিং (পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক),  সাইফুজ্জামান চৌধুরী (ভূমি), নুরুল ইসলাম সুজন (রেলপথ), ইয়াফেস ওসমান টেকনোক্র্যাট (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), মোস্তাফা জব্বার টেকনোক্র্যাট (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি)।১৯ জন প্রতিমন্ত্রী হলেন কামাল আহমেদ মজুমদার (শিল্প), ইমরান আহমেদ (প্রবাসীকল্যাণ), জাহিদ আহসান রাসেল (যুব ও ক্রীড়া), নসরুল হামিদ (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি), আশরাফ আলী খান খসরু (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ), মন্নুজান সুফিয়ান (শ্রম), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌপরিবহন), জাকির হোসেন (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), শাহরিয়ার আলম (পররাষ্ট্র), জুনাইদ আহমেদ পলক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি), ফরহাদ হোসেন (জনপ্রশাসন), স্বপন ভট্টাচার্য (স্থানীয় সরকার), জাহিদ ফারুক (পানিসম্পদ), মো. মুরাদ হাসান (স্বাস্থ্য), শরীফ আহমেদ (সমাজকল্যাণ), কে এম খালিদ (সংস্কৃতি), এনামুর রহমান (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ), মাহবুব আলী (বিমান), শেখ মো. আবদুল্লাহ টেকনোক্র্যাট (ধর্ম)।৩ উপমন্ত্রী হলেন হাবিবুন নাহার (পরিবেশ), এ কে এম এনামুল হক শামীম (পানিসম্পদ), মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (শিক্ষা)।

রেকর্ডে ভরপুর শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন : টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে আরও একটি রেকর্ড গড়লেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী থাকা ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা থাকার রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। গতকাল টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এই শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে সর্বশেষ রেকর্ডটি গড়েন তিনি।অষড়তা ছাড়া টানা প্রায় ৩৮ বছর ধরে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। চারবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার এমন দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে আর নেই। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রধান বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ২০০৮ থেকে ২০১৪, ২০১৪ থেকে ২০১৯ মেয়াদে দুই বারে ১০ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গতকাল ৭ জানুয়ারি চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে পরপর তিন বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এবং ৪ বার প্রধানমন্ত্রী থাকার নজির আর কারও নেই।

বিরোধীদলীয় নেতা: বাংলাদেশের তিনটি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদে, ১৯৯১ সালে পঞ্চম এবং ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা। তার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। সে সময় শেখ হাসিনা ও তার বোন বিদেশে থাকায় বেঁচে যান। এরপর ৬ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালে ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবেই দেশে ফেরেন।

উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর দলের দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন ১৯৮৬ সালে। মিডিয়া ক্যু করে এরশাদের সামরিক সরকার আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দেন। তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা। পরে স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসেন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করেন তিনি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারলেও ভোট বাড়ে আওয়ামী লীগের। সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে সংসদে বসেন শেখ হাসিনা। এরপর নবম সংসদ নির্বাচন থেকে একাদশ সংসদ পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নবম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬৪টিতেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট জয়লাভ করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশে ‘দিন বদলের শুরু’ হয়। দেশের প্রতিটি খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি শুরু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার জয়রথ চলমান থাকে দশম সংসদ নির্বাচনেও। ওই বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হয়ে টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীত্বের শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, পূর্ণ মেয়াদে সরকার পরিচালনা করতে পারবেন না শেখ হাসিনা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চাপের মুখে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য হবেন তিনি। কিন্তু তাদের সবার ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন-জ্বালাও পোড়াও মোকাবেলা করে পূর্ণ মেয়াদ সরকার পরিচালনা করেন শেখ হাসিনা। মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী জোট আবারও সংসদ ভেঙে নির্বাচনের দাবি জানায়। কিন্তু সংবিধানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, সংসদ বহাল রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের জন্য টানা এক সপ্তাহ দেশের সক্রিয় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে বসেন তিনি। ফলে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট। এই নির্বাচনেও ঐক্যফ্রন্ট মাত্র ৭টি আসনে জয়ী হয়। আর ২৮৮টি আসন পায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর