ভিসা থাকার পরও ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি’র বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে দিলো ইমিগ্রেশন
স্টুডেন্ট ভিসা থাকা সত্ত্বেও ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’তে অধ্যয়নরত এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন বিভাগ। গত রোববার লস এঞ্জেলেস এয়ারপোর্টে এই ঘটনা ঘট। বাংলাদেশের খুলনার অধিবাসী ওই শিক্ষার্থীর নাম মো.আরিফুল ইসলাম (৩৩)। রোববারই তাকে ঢাকার পথে একটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগ। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন লস এঞ্জেলেস প্রবাসীরা।
ইমিগ্রেশন অফিসের উদ্ধৃতি দিয়ে লস এঞ্জেলেস প্রবাসী কমিউনিটি নেতা মুমিনুল হক বাচ্চু এলএ বাংলাটাইমসে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা যায়, দুই বছর আগে থেকে আরিফ লস এঞ্জেলেসে অবস্থিত ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র নিয়মিত ছাত্র। সম্প্রতি বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরার পথে আটকে যান আরিফুল।
লস এঞ্জেলেস এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তার কাছে জানতে চান, কেন তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করেছেন? সে ধরনের অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) তার কাছে নেই কেন? এমন জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আরিফুলকে তার ভিসা বাতিলের সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়। এরপর তাকে ঢাকার পথে একটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
ইমিগ্রেশন বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে জানায়, “ইমিগ্র্যান্ট, নন-ইমিগ্র্যান্ট অথবা ট্যুরিস্ট ভিসার অপব্যবহারকারীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। যারা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে ‘গ্রীনকার্ড’ পেয়েছেন, তারা যদি বছরের অধিকাংশ সময়ই যুক্তরাষ্ট্রে না থাকেন, তাহলে গ্রীনকার্ডের প্রয়োজন নেই বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে।”
ইমিগ্রেশন বিষয়ক এটর্নিদের কাছ থেকে জানা যায়, নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং গ্রীনকার্ডধারীরা বাংলাদেশে যাতায়াতকালে যেন অবশ্যই অভিজ্ঞজনদের পরামর্শ নেন। বিশেষ করে যারা ট্যুরিস্ট অথবা বিজনেস ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চান, তাদের উচিত হবে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সাথে রাখা। কার সাথে কী ব্যবসা করবেন বা করছেন, তারও ডক্যুমেন্ট থাকা উচিত।
এ বিষয়ে আরও জানা যায়, যারা গ্রীনকার্ড নিয়ে ঘন ঘন দেশে যাতায়াত করেন, তাদেরও বিশ্বাসযোগ্য বক্তব্য দিতে হবে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষকে। এক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের অসুস্থতা কিংবা নিজের অসুস্থতার কথা বলতে হলে অবশ্যই চিকৎসার কাগজপত্র সাথে রাখা জরুরী। দেশে কারও সহায়-সম্পদ অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে কিনা, সেগুলোর তদারকি করতে হলেও এর সমর্থনে কাগজপত্র রাখা দরকার। অন্যথায় গ্রীনকার্ড কেড়ে নিয়ে ফিরতি ফ্লাইটেই পাঠিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা এবং নন-সিটিজেনদের নানাভাবে যাচাই করছে এবং একটু ফাঁক পেলেই তাদেরকে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। বিশেষ করে মুসলিম ইমিগ্র্যান্টরা এয়ারপোর্টে নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
বি.দ্র. : আরিফুলকে নিয়ে আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান করছে এলএ বাংলা টাইমস। বিস্তারিত জানা গেলে আরও সমৃদ্ধভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
শেয়ার করুন