আপডেট :

        চার গুণীজনকে একান্নবর্তী-রণজিৎ বিশ্বাস স্মৃতি সম্মাননা প্রদান

        চীনের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ করল ইরান

        শেঙেন ভাঙনের ইঙ্গিত? সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়ছে

        ডিএমপি: সচিবালয়, যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ

        তৃতীয় বিয়ের গুঞ্জনে আমির খান, গৌরীকে নিয়ে কী বললেন?

        মুজিবুল হক চুন্নুই বৈধ মহাসচিব — মত ব্যারিস্টার আনিসুলের

        ত্রিমুখী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ডিবি: মুরাদনগরের মা-ছেলে-মেয়ে হত্যার মামলা

        ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেস

        অলিখিত ফাইনালের লড়াইয়ে প্রথমে বল করছে বাংলাদেশ

        চকলেট দিবসে চমক দিন! তৈরি করুন মজাদার কোকোনাট বল

        ভালোবাসার শহরে গড়ে উঠছে লৌহকঙ্কাল—নতুন নির্মাণে বদলে যাচ্ছে চেহারা

        শুল্ক আরোপ নিয়ে প্রেস সচিব যা বললেন

        আকুর দায় মেটানোর পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের নিচে

        ব্যক্তিগত সহকারীসহ ডিপজলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা

        বাংলাদেশি পণ্য আমেরিকায় উৎপাদন হলে শুল্ক মুক্তির আশ্বাস ট্রাম্পের

        চাঁদা প্রসঙ্গে ইলিয়াস: ‘কারা নিচ্ছেন বলবো না, সাবধানে নিয়েন’

        বিশ্বকাপে খেলতে মুখিয়ে আফঈদা, আস্থার বার্তা ঋতুপর্ণার

        হিমছড়িতে সাগরে ভেসে গেলেন চবির ৩ ছাত্র, একজনের লাশ উদ্ধার

        যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা শুরু হচ্ছে বুধবার: জানালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা

        চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো দুই জিকা রোগী শনাক্ত

হাসপাতাল থেকে ‘বিতাড়িত’, গাছ তলায় সন্তান প্রসব

হাসপাতাল থেকে ‘বিতাড়িত’, গাছ তলায় সন্তান প্রসব

পঞ্চগড়ের বোদায় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার পর হাসপাতালের গাছের নিচে সন্তান প্রসব করেছেন রীনা বেগম নামে এক প্রসূতি। স্বজনদের অভিযোগ, প্রসব ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এমন অজুহাতে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

শনিবার দুপুরে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোগীসহ স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তবে ঘটনার পর অভিযুক্ত নার্সকে তাৎক্ষণিক শোকজ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সাথে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও করা হয়েছে।

রোগীর স্বজনরা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের বালাভিড় গোয়ালপাড়া বাসিন্দা রীনা বেগমের প্রসব বেদনা উঠে। শনিবার সকাল আটটায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হাসপাতাল কর্তপক্ষ রীনার আগে একটি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের কথা শুনে দুপুরের দিকে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে পঞ্চগড় অথবা ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন নার্স সাবানা বেগম। এ সময় প্রসূতির স্বামী জাহিদুল ইসলাম টাকা ও গাড়ির ব্যবস্থা করছিলেন।
ছাড়পত্র দেওয়ার পরও রোগী হাসপাতাল ত্যাগ না করায় তাদেরকে চাপ দিতে থাকেন নার্স সাবানা বেগম। কিন্তু স্বামী ফিরে আসার অপেক্ষায় বসে ছিলেন ওই প্রসূতি। এক পর্যায়ে ওই নার্স তাদের হাসপাতাল থেকে তাকে বের করেন দেন।

টিকতে না পেরে প্রসূতি তার ননদ রেজিনাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে হাসপাতালের সামনের একটি গাছের নিচে অপেক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষণ পর সেখানেই একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান জন্ম দেন তিনি।

এর আগে দুই সন্তানের প্রথমটি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা রিনার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয় স্বাভাবিক প্রসবে। পরে হাসপাতলের পরিচ্ছন্নকর্মী সোহাগী নবজাতক ও প্রসূতিক হাসপাতালের ওয়ার্ডে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে স্থানীয়রা।
মুহূর্তে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালে ছুটে আসেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন আফরোজা বেগম রীনা ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান প্রসূতিকে দেখতে যান। এ ঘটনায় প্রসূতির পরিবারসহ স্থানীয়রা দোষীদের বিচার দাবি করেছেন।

প্রসূতি রীনা বেগম বলেন, ‘ছাড়পত্র দেওয়ার পর আমি আমার স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু নার্স সাবানা আমাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। নিরুপায় হয়ে আমি আমার ননদ রেজিনা আক্তারকে নিয়ে হাসপাতালে বাইরের একটি গাছের নিচে আশ্রয় নেই। সেখানেই আমার সন্তান প্রসব হয়।’

রীনার স্বামী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তা অমানবিক। আমরা চাই তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে আর কোন প্রসূতি মাকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে না হয়।’

অভিযোগ অস্বীকার করে মিডওয়াইফ নার্স সাবানা বেগম বলেন, ‘রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া প্রসূতিকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল।’

বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসআইএম রাজিউল করিম রাজু বলেন, ‘এ ঘটনায় মিডওয়াইফ নার্স সাবানা বেগমকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার কারণ জানতে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জাহিদ হাসানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে আমি দ্রুত হাসপাতালে তাকে দেখতে যাই। এ সময় তাকে আর্থিক সহায়তাও করা হয়। বিষয়টি যথাযথ নিয়মে স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে।’

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত