ব্র্যান্ড ও বুটিক হাউস গুলো মূল্যছাড় দিয়ে বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করছে ।
কোরবানির ঈদে পশুর হাটের দিকেই সবার মনোযোগ থাকে বেশি। সেই তুলনায় নতুন পোশাক কেনায় আগ্রহ থাকে কম। এরপরও সারা বছর যে পোশাক বিক্রি হয়, তার ১০-১৫ শতাংশ বিক্রি হয় এই ঈদে। ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলও তৈরি পোশাকের ব্র্যান্ড ও বুটিক হাউসগুলো। তবে অন্যবারের তুলনায় ক্রেতার আনাগোনা কিছুটা কম। দু-চারটি ছাড়া পোশাকের অধিকাংশ ব্র্যান্ড ও বুটিক হাউসই মূল্যছাড় দিয়ে বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এতেও কিছু ব্র্যান্ড ও বুটিক হাউস বাদে অন্যদের বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না।
পোশাকের ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তারা বলছেন, গত বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরে ভালো ব্যবসা হওয়ার পর এবারও ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হয়নি। তাতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে অনেক পোশাক অবিক্রীত থেকে যায়। আবার রোজার ঈদের পর বিক্রিতে ধস নামে। অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তাই পবিত্র ঈদুল আজহায় পোশাকের বিক্রি বাড়াতে মূল্যছাড়ের পথে হেঁটেছে অনেকে। এরপরও গত বছরের তুলনায় অনেকের বিক্রি ১৫-২০ শতাংশ কম হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্দিষ্ট পোশাকে সেইলর, টুয়েলভ, টেক্সমার্ট, সুলতান, কে ক্রাফট ও বিশ্বরঙ ৫০ শতাংশ, জেন্টল পার্ক ৭০, ক্যাটস আই ৪০, রঙ বাংলাদেশ ১০ থেকে ৫০, ডিমান্ড ৩০-৬০ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছে। যদিও আড়ং, সারা লাইফস্টাইল, লা রিভের মতো কয়েকটি ব্র্যান্ড মূল্যছাড়ের দিকে যায়নি।
কোরবানি ঈদ সামনে রেখে রাজধানীতে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে গত শুক্রবার থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। ওই দিন–রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে গিয়ে দেখা যায়, মূল্যছাড় দিয়েছে, এমন ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে বেশি ভিড়। সেইলরে ৫০ শতাংশ মূল্যছাড়ে পোশাক কিনে মূল্য পরিশোধে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইনেও অপেক্ষা করতে দেখা যায়। দেশী দশেও ক্রেতাদের ভালো উপস্থিতি ছিল।
বুটিক হাউস রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাশ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তা ছাড়া কোরবানির পশু কেনার জন্যও বড় অঙ্কের বাজেট রাখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে মধ্যবিত্ত মানুষ আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যে আছেন। মূল্যছাড় দেওয়ার পরও বিক্রি সেভাবে বাড়েনি।
টেক্সমার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুশফিক হাসান বলেন, পোশাক তৈরি ও বিক্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ খরচ কমিয়ে দিয়েছে। তাই মূল্যছাড় দিতে হয়েছে। এরপরও মনে হচ্ছে গত কোরবানির ঈদের তুলনায় এবার বিক্রি ২০ শতাংশ কম হবে।
মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও রুচির পরিবর্তন হওয়ায় ব্র্যান্ডের পোশাকের দিকেই এখন ঝুঁকছেন। ফলে গত এক দশকে দেশে বেশ কিছু পোশাকের ব্র্যান্ড গড়ে উঠেছে। তারা রাজধানীর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শহরেও বিক্রয়কেন্দ্র খুলছে।
সারা লাইফস্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ বলেন, ‘আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাকের প্রফিট মার্জিন খুবই কম। তাই সচরাচর মূল্যছাড় দিতে পারি না।’ ঈদের বেচাবিক্রি বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। ফলে মানুষের মধ্যে খরচের প্রবণতা কিছুটা কম।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড আড়ংয়ের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমাদের বিক্রি মন্দ না। ছুটির দিনে প্রচুর ক্রেতা সমাগম হয়েছিল। গতবারের তুলনায় বিক্রয়কেন্দ্র চারটি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের বিক্রি বাড়বে প্রায় ১৫-২০ শতাংশ।’
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন