মালয়েশিয়া ‘জঙ্গি’ সন্দেহে ৩৬ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার; ঢাকা দিচ্ছে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি
ভারতের গুজরাট দাঙ্গায় ২৪ জন দোষী সাব্যস্ত, খালাস ৩৬
গুজরাট দাঙ্গা ২০০২
ভারতের একটি বিশেষ আদালত গুজরাট দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
আহমেদাবাদ শহরে গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একই সাথে আদালত ৩৬ জনকে খালাস দিয়েছে।
২০০২ সালে মুসলিম বিরোধী ওই দাঙ্গার সময় গুলবার্গ সোসাইটি কমপ্লেক্সে আক্রমণের পর কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে অন্তত ৬৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।
গুজরাট দাঙ্গা ছিল স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাঙ্গার ঘটনা।
ওই দাঙ্গায় প্রায় এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল যার বেশিরভাগই ছিল মুসলিম।
একটি ট্রেনে আগুনে ৬০ জন হিন্দু তীর্থযাত্রীর প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে দাঙ্গার সূচনা হয়।
হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনার জন্য মুসলমানদের দায়ী করে হিন্দু দাঙ্গাকারীরা মুসলমানদের বাড়িঘরে হামলা চালায় তিনদিন ধরে। প্রতিশোধ নিতে গুজরাটের শহরে ও গ্রামে মুসলিমদের লক্ষ্য করে যে ব্যাপক হামলা চালানো হয় তার মধ্যে বড় ধরনের হামলা হয়েছিল গুলবার্গ আবাসিক কমপ্লেক্সে।
২৮ ফেব্রুয়ারির ওই হামলায় ৬৯ জন মুসলিমকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা ছাড়াও কমপ্লেক্সের বাংলো ও ফ্ল্যাটে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়- চালানো হয় ব্যাপক লুটপাট। নিহতদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেস এমপি এহসান জাফ্রি। তার স্ত্রী যাকিয়া জাফ্রি আজকের রায়কে স্বাগত জানালেও বলেছেন ন্যায়বিচারের জন্য তার লড়াই এখনো চলবে।
তিনি বলছেন, 'গত ১৫ বছর যেভাবে আমি লড়াই চালিয়ে গেছি- সে লড়াই চলবে- এখানেই তা থামবে না। আমি রায়ে সন্তুষ্ট - তবে ৩৬ জনকে যে খালাস দেওয়া হয়েছে তাতে আমি খুবই হতাশ। আমি মনে করি ন্যায়বিচারের মাত্র অর্ধেক অর্জিত হয়েছে। আর সে কারণেই আমি লড়াই চালিয়ে যাব।'
জাকিয়া জাফ্রি জানান দাঙ্গাকারীদের হামলার মুখে তার স্বামী সেদিন নরেন্দ্র মোদির কাছে সাহায্য চেয়ে ফোন করেছিলেন- কিন্তু কোনো সাহায্য কখনই আসেনি। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সে ঘটনার সময় তিনি নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এমন অভিযোগও রয়েছে।
তবে নরেন্দ্র মোদি সবসময়েই তার তরফে কোনোরকম অন্যায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। তিনি কোনোদিন এই দাঙ্গার জন্য দুঃখপ্রকাশও করেননি।
সুপ্রিম কোর্টের একটি প্যানেল ২০১৩ সালে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় তুলতেও অস্বীকার করেছিল সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব এই যুক্তি দেখিয়ে।
কংগ্রেস দলের একজন মুখপাত্র টম ভাডাক্কান বলেছেন যাদের প্রাণরক্ষা পেয়েছিল এই রায় তাদের জন্য অন্তত কিছুটা হলেও ন্যায়বিচার এনে দিয়েছে।
আজকের রায়ে ওই হামলার জন্য ১১ জন অভিযুক্তকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বাকি ১৩ জনকে লঘু অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত যারা হয়েছে তাদের মধ্যে কট্টর হিন্দু সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্থানীয় একজন নেতাও রয়েছেন। সোমবার দোষীদের সাজা ঘোষণা করা হবে।
শেয়ার করুন