আপডেট :

        ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ দাবানল, ৫ জনের মৃত্যু

        গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হয়েছে হামাস

        ইসরায়েলে মার্কিন গোলাবারুদের একটি চালান থামাল বাইডেন প্রশাসন

        জো বাইডেন ‘গেস্টাপো প্রশাসন’ চালাচ্ছেন, অভিযোগ ট্রাম্পের

        বাংলাদেশি তরুণ উইন নিহতের ভিডিও প্রকাশ

        টাইটানিক সিনেমার অভিনেতা বার্নার্ড হিল মারা গেছেন

        অধ্যাপকের পাঁজরের ৯টি হাড় ও হাত ভেঙে দিয়েছে পুলিশ

        ব্রাজিলে বন্যায় ৭০ হাজার মানুষব্রাজিলে বন্যায় ৭০ হাজার মানুষ বাড়ি ছাড়া

        দুবাইয়ে সারা বছর লেগে থাকে পর্যটকদের ভিড়

        উচ্চ আদালতের নির্দেশে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) তালিকা প্রস্তুত

        সৌদি আরবে তেলের দাম বৃদ্ধি

        রাশিয়ায় বিমান হামলা, নিহত ৭

        শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে বয়সসীমা বাড়ানোর একটি পত্র পেয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী

        ৫ মে বৈশ্বিক এই আসরের সূচি প্রকাশ করেছে আইসিসি

        বিলাসবহুল রেল স্টেশন পরিণত হয়েছে বিনোদনকেন্দ্রে, চলে গেছে টিকটকাদের দখলে

        ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন-স্টপ জেনোসাইড’ স্লোগানে ছাত্রলীগ

        ধান কাটার সময় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

        নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

        অফিস শেষে নিমন্ত্রণ রক্ষায় করনীয়

        আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই

এখনো চলছে বর্ণবাদ

এখনো চলছে বর্ণবাদ

এলএ বাংলা টাইমস


ফর্সা বা কালো হওয়ার উপর কারো হাত নেই। মানুষ কালো বা ফর্সা হওয়ার জন্য দায়ী মেলানিন নামক এক ধরণের রাসায়নিক রঞ্জক পদার্থ। এই পদার্থের তারতম্যের কারণেই মানুষের গায়ের রঙ বিভিন্ন হয়। যাদের ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকে তাদের গায়ের রং কালো হয়। অন্য দিকে যাদের ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ কম তাদের গায়ের রঙ ফর্সা হয়। এভাবেই সমাজ ও রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে বর্ণবাদের। আমাদের কাছে বর্ণবাদ মানেই মধ্যযুগীয় ব্যাপার মনে হয়। মনে হয় আমাদের বর্তমান মানবসভ্যতা বর্ণবাদ থেকে বহু দূরে। কিন্তু তাই কি?


ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর লোকজন এখনো তীব্র বর্ণবাদের শিকার হচ্ছে বলে জানায় দেশটির সমতা ও মানবাধিকার কমিশন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার সুপারিশ করে সংস্থাটি। ব্রিটিশ সংস্থাটি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ এবং সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর অবস্থা পর্যালোচনা করে। এতে চাকরি, আবাসন, মজুরি, অপরাধের বিচার—এ কয়েকটি খাতে আতঙ্কিত হওয়ার মতো চিত্র ধরা পড়ে।

কমিশনের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ইংল্যান্ডে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের খুন হওয়ার ঝুঁকি তিন গুণ বেশি। একই রকম প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অর্জনের পরও কর্মক্ষেত্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গের আয় শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির চেয়ে ২৩.১ শতাংশ কম। এছাড়া সাধারণ শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর সদস্যের দারিদ্র্য ও বেকারত্বের হার খুব বেশি এবং দেশের ক্ষমতা কাঠামোয় তাদের প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত কম।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ও প্রশাসনের এমন চরিত্র যে একে বর্ণবাদী ব্যতিরেকে অন্য কিছু বলা চলে না। অথচ অভিবাসীদের নিয়ে হিসাব করলে দেখা যায় যে, কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি ও হিস্পানিদের সংখ্যা সমাজে নেহাত কম নয়। ওবামার দীর্ঘ শাসন সমাজে গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। পারেনি প্রশাসনেও। বিশেষ করে দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলোতে। দক্ষিণের এই সংকীর্ণতা, রক্ষণশীলতা ও অমানবিকতার কারণ যেমন অর্থনৈতিক, তেমনি সমাজিক। সেই সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী শ্বেতাঙ্গ মানসিকতার প্রভাব। যে জন্য অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য যে সেখানাকার বিচারব্যবস্থাও এ কুপ্রভাব থেকে মুক্ত নয়। সমাজ ও রাজনীতির বিশ্লেষণে উল্লিখিত পত্রিকার প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৫০ বছর পর ১০০ সিনেটরের মধ্যে মাত্র দুজন কৃষ্ণাঙ্গ। ৫০০টি কোম্পানির মধ্যে ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গ সিইও, পাঁচ শতাধিক কোটিপতির মধ্যে মাত্র দুজন কৃষ্ণাঙ্গ, আর সেইসাথে এখনো পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশের হাতে নিহত। বলা বাহুল্য, এই পুলিশ সদস্যদের সবাই শ্বেতাঙ্গ। 

ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়া অস্থিরতা নিয়ে নীরবতা ভেঙে বর্ণবাদ ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য ও শান্তিরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসের শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার হাটুর চাপে দমবন্ধ হয়ে কৃষ্নাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনা মর্মান্তিক উল্লেখ করে পোপ বলেন, ‘বর্ণবাদের মতো পাপে’ এভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া প্রত্যেকের জন্যই তিনি প্রার্থনা করছেন। ভ্যাটিকান সিটিতে সপ্তাহিক প্রার্থনাসভায় পোপ বলেন, আমরা বর্ণবাদ কিংবা কোনোরকম বঞ্চনা, বৈষম্যে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না এবং প্রতিটি মানবজীবন রক্ষার দাবি জানান তিনি। আর যুক্তরাষ্ট্রে চলমান এই ঘটনা থেকে খুব সহজেই অনুধাবন করা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে এখনো বর্ণবাদ এখনো শেষ হয়নি। বর্ণবাদ আমাদের সকলের অগোচরেই চলছে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত