আপডেট :

        সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন

        রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-ইরান-প্যালেস্টাইনের যুদ্ধ বন্ধ করতে উদাত্ত আহ্বান

        হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার

        সরকারি ব্যাংকের ছয় উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে অন্য ব্যাংকে বদলি করা হয়েছে

        ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৫ দিন পর কবর থেকে এক ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ তুলা হলো

        মেটার রে-ব্যান স্মার্ট রোদচশমা,করা যাবে ভিডিও কল

        পানিসংকটের শঙ্কা ও শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে পূর্বনির্ধারিত গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল

        শেয়ারবাজারের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

সিসিক নির্বাচন : দলীয় সিদ্ধান্তে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা

সিসিক নির্বাচন : দলীয় সিদ্ধান্তে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা

একদিকে দলীয় ‘কঠোর’ সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে ‘জনগণের ভালোবাসা’- এই দুইয়ের মধ্যে কোনটাকে প্রাধান্য দিবেন তারা? পড়েছেন চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে- বিভ্রতকর বিপাকে।

আগামী ২১ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এর কয়েক মাস পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ অবস্থায় বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে- বর্তমান সরকারের অধীনে স্থানীয়-জাতীয় কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে না। এ সিদ্ধান্তে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্ব আর বিপাকে পড়েছেন আসন্ন সিসিক নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া বিএনপি নেতারা। বিশেষ করে বর্তমান কাউন্সিরদের মধ্যে যারা বিএনপি নেতা তারা পড়েছেন বেশি বিপদে। না পারছেন দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করতে- আর না পারছেন জনগণের ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করতে।

তবে বিএনপি নেতাদের মধ্যে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী কয়েকজন বলেছেন, তারা আশা করছেন- শেষ সময়ে এ বিষয়ে দলের হাই কমান্ড ‘কঠোর’ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার আভাস পেয়ে তাঁদের প্রার্থিতা ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। কেন্দ্রের নির্দেশনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অনুরোধও জানানো হচ্ছে তাদের।

এছাড়াও গত বুধবার (১০ মে) সন্ধ্যরাতে সিলেট মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাতকালে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসময় তিনি সিলেটের নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেন।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, সিলেটসহ পাঁচ সিটি নির্বাচনে মেয়র কিংবা কাউন্সিলর- কোনো পদেই দলের নেতাকর্মীর প্রার্থী হওয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চান না। তাঁর পক্ষ থেকে সিলেটে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ হলে তার বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যত বড় নেতা হোন না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে দলের উচ্চ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে।

ওই সূত্রটি আরও জানায়- দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনায় সিসিকে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ইচ্ছুক বিএনপির ২৫ নেতার নাম উল্লেখ করে একটি প্রাথমিক তালিকা করে কেন্দ্রীয় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পাশাপাশি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিলে এসব নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এই তালিকায় থাকা ২৫ নেতার মধ্যে ৮ জনই বর্তমান কাউন্সিলর। তাঁরা হলেন- ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রেজাউল হাসান লোদী (কয়েস লোদী), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরহাদ চৌধুরী (শামীম), ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম (মুনিম), ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এ বি এম জিল্লুর রহমান (উজ্জ্বল), ২১ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রকিব (তুহিন) এবং সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের আহ্বায়ক রোকসানা বেগম।

এছাড়া তালিকায় সাবেক মহানগর বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম আহমদ (রনি), ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ মিছবা উদ্দিন, সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির (সেফি) এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর দিনার খান (হাসু)।

তালিকার অন্য নেতারা হলেন- ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা যুবদলের সাবেক নেতা সুমন সিকদার ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বজলুর রহমান, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ছাত্রদলের সাবেক নেতা আবদুল হাসিব, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন (সুমন), ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনির, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে দিলওয়ার হোসেন, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ছাত্রদল নেতা দিলওয়ার হোসেন ও বিএনপি নেতা গৌস উদ্দিন, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে যুবদল নেতা কামাল আহমদ ও বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি মামুনুর রহমান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আমীর হোসেন।

দলীয় সিদ্ধান্ত ও নিজের প্রার্থিতা নিয়ে গত চারবারের এক সিসিক কাউন্সিলর- সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শুক্রবার (১২ মে) রাতে বলেন- ‘খুবই জটিল অবস্থায় পড়েছি। আমি গত ২০ বছর ধরে আমার ওয়ার্ডের জনগণের ভালোবাসা-ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এ ক্ষেত্রে আমার পরিচয় দলীয় নয়। এখন হঠাৎ করে জনগণের ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো কতটা কঠিন তা শুধু আমার মতো একজন প্রার্থীই বুঝবেন।’

ওই কাউন্সিলর আরও বলেন- ‘তবে এটাও ঠিক যে- বর্তমান স্বৈরাচার সরকারকে পতনের অন্যতম একটি বিপ্লব হলো ভোটবর্জন। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই নির্বাচনে না যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত। সেদিক থেকে দলের সিদ্ধান্তটি সঠিক।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ‘আমরা আশার করছি- আমাদের মতো প্রার্থীদের কথা বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত দলের হাই কমান্ড কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন।’

মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রত্যাশী এই নেতা আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন- ‘এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগছি। প্রার্থী হবো কি-না, ঠিক এখনই বলা যাচ্ছে না। এখনও মনোনয়ন সংগ্রহ করিনি। অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।’ বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার নির্দেশনার কথা জেনে ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষের তার কাছে ছুটে আসছেন উল্লেখ করে ওই কাউন্সিলর বলেন- ‘ওয়ার্ডবাসীর একটাই দাবি- আমি যেন নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়াই। এই অবস্থায় এত এত মানুষের ভালোবাসাকে উপেক্ষা করা প্রায় অসম্ভব।’

সিসিকের আরেকজন বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য বলেন- ‘আমি জিয়ার আদর্শের সৈনিক। তাই দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান করতেই হবে। বিষয়টি নিয়ে ভাববো। তবে দুবারের কাউন্সিলর হওয়ায় এলাকাবাসী প্রার্থী হতে চাপ দিচ্ছেন। এটিও উপেক্ষা করা কঠিন।’ উল্লেখ্য, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন।

নির্বাচন উপলক্ষে এ পর্যন্ত মেয়র পদে ৫ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আর কাউন্সিলর পদে ৩৮১ জন মহিলা ও পুরুষ মনোনয়ন কিনেছেন। গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন প্রার্থীরা। সংগ্রহ করা যাবে ২৩ মে পর্যন্ত।

আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে- বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকাল ৪টা পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মোট ৩৮৬ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৫ ও কাউন্সিলর পদে ৩৮১ জন। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে দুজন দলীয়ভাবে ও তিনজন স্বতন্ত্র হিসেবে কিনেছেন মনোনয়ন। মেয়র পদে মনোনয়ন কেনা পাঁচজন হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাত পাখা), মোহাম্মদ আবদুল হানিফ ওরফে কুটু (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান (স্বতন্ত্র) ও সামছুন নুর তালুকদার (স্বতন্ত্র)।

কাউন্সিলর পদে ৩৮১ জনের মধ্যে ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (মহিলা কাউন্সিলর) ৮১ জন এবং ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে (পুরুষ কাউন্সিলর) ৩০০ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

 


এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত