নরওয়াকে পালশালার বাইরে গুলি বর্ষণের ঘটনায় দুইজন আহত, বন্দুকধারীকে খুঁজছে পুলিশ
গুলশানে হামলাকারী জঙ্গিদের নিয়ে আইএস’র নতুন ভিডিও
মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশের ওপর একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে। গত জুলাই মাসে রাজধানীর গুলশানে হলি আটিজেন রেস্তোরাঁয় হামলার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন পাঁচ জঙ্গির কথাবার্তা, হামলার ঘটনা এবং আইএস এর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরা হয় বাংলা ভাষায় তৈরি এই ভিডিওতে। ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, কয়েকজন ধর্মীয় নেতাসহ বেশ কয়েকজনের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
গুলশান হামলার প্রায় তিন মাসের কাছাকাছি সময়ে এসে হামলাকারী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মৃতদেহ গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দাফন করা হয়। এরপর আইএস এই ভিডিও প্রকাশ করে। বিবিসির প্রতিবেদনে ভিডিওটি থেকে একটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়নি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের একটি ভিডিও দেওয়া হবে বলে আইসিসের বাংলা একটা ওয়েবসাইটে প্রথমে ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরবি ভাষায় একটি ওয়েবসাইটে এটি প্রথম রিলিজ করা হয়।
আইএস-সহ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতার দিকে নজর রাখেন সাংবাদিক তাসনিম খলিল। ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে তিনি বলছিলেন, ভিডিওতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন ধর্মীয় নেতার কথা বলা হয়েছে। যেমন শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ইমাম ফরিদউদ্দিন মাসুদকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে যে, তিনি আসলে সরকারের পক্ষের লোক। এছাড়া শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া দু’জনকেই উদ্দেশ করে ভিডিওতে বলা হয়েছে, তারা তাগুদ বা ইসলামের শত্রু।
ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশে গুলশান হামলার ঘটনায় নিহত পাঁচজন জঙ্গি কালো পাঞ্জাবি এবং মাথায় বিশেষ ধরনের স্কার্প পরে আইএস এর পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। এ ধরনের স্থির চিত্র আগে প্রকাশ হয়েছিল। এখন ভিডিওতে তারা কথা বলছেন। তারা একজন করে কথা বলছেন, তখন তার হাতে একে ৪৭ রাইফেল এবং ছুরি দেখা যায়। তারা কোরান-হাদিস থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলা করার পক্ষে তারা তাদের যুক্তিও তুলে ধরেন।
নিহত হওয়ার পর এই জঙ্গিদের যে নাম বা পরিচয় সকলে জেনেছে সেই নাম নয়। ভিডিওতে তাদের পোশাকি নাম ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু গুলশান হামলার ঘটনার প্রায় তিন মাস পর এসে কেন এই ভিডিও প্রকাশ করা হলো এবং এর পিছনে কি কারণ থাকতে পারে-এসব প্রশ্নে তাসনীম খলিলের বক্তব্য হচ্ছে, ‘আইএস এর এবং এ ধরনের জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের কোনো সদস্য কোথাও হামলা করে নিহত হলে, নিহতদের দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর এ ধরনের ভিডিও প্রচার করে থাকে। গুলশানে হামলাকারী জঙ্গিদের ক্ষেত্রেও তাই করা হলো। তাদের মৃতদেহ দাফন হওয়ার পর ভিডিও প্রকাশ হলো।’
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, এরা সাধারণত কোনো জঙ্গি তৎপরতা বা হামলা চালানোর আগে কিছু বার্তা ভিডিও করে রাখে। গুলশানের হামলাকারীরাও বাংলাদেশের কোনো গ্রাম থেকে ভিডিও করেছিল বলে এটি দেখে তার ধারণা হয়েছে। বাচ্চাদের চিৎকার, গরু-বাছুরের ডাকের আওয়াজ শোনা গেছে।
গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনার ছবিও ভিডিওতে আছে, সে ব্যাপারে তাসনিম খলিল বলেন, ‘গুলশানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মৃতদেহ পড়ে আছে। এমন ছোট একটা দৃশ্য ভিডিওতে দেখা যায়। এতে আমি একটু অবাকই হয়েছি। কারণ এই ভিডিওটার ব্যাপারে আইএস এর একসেস থাকার কথা না। এই ধরনের ভিডিও সাধারণত বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী করে এমন ঘটনার পরে। তো সেটা আইসিসের ভিডিওতে কিভাবে এলো, সেটা একটা রহস্য।’
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন