নিউইয়র্কে সিলেটিদের প্রতিবাদ: উন্নয়ন বঞ্চনায় ক্ষোভ
আমি চোট থাকতে থাকি দেখিয়া আইলাম সিলেট বৈষম্যের শিকার। কোন উন্নতি অয়-না। সরকারি পক্ক থেকে আমরা কিচ্চু পাইনা। এমনে নামে কয় সিলেট দ্বিতীয় লন্ডন, বাট সিলেটে লন্ড-নর কিছু নাই। আমরার সিলেটে সব প্রাকৃতিক সম্পদ আছে। অনেক আগ থাকি আমরার সিলেটিরা লন্ডনে বা অন্যাইন্য দেশে থাকে। আরা শুধু রেমিটেন্স পাডাইলাম কিন্তু সিলেটের কোন উন্নতি অয় না।
আমরার ট্রেইন ষ্টেশনর দরকার, আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দরকার, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নের দরকার। অতার লাগি আমরা আন্দো-ল-ন নামছি।। আমরা এখন আর থামতাম না, আন্দোলন খরমু। আমরা দাবী আদায় করিয়া ছাড়মু।
বুধবার বিকালে বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্কের শাহবাগখ্যাত জেকসন হাইটস্ এর ডাইভারসিটি প্লাজায় উন্নয়ন বঞ্চিত সিলেটিদের প্রতিবাদী অবস্থানে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিবেশবাদী সংগঠক ব্যাবসায়ী সেলিনা উদ্দিন। একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কর্মসূচী চলাকালে বক্তব্য প্রদানকারীরা।
বিরক্ত সিলেটবাসীর ব্যানারে আয়োজিত "প্রতিবাদী অবস্থান" কর্মসূচীতে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সমাজিক সংগঠনের ও পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ। এসময় অংশগ্রহণকারীরা সিলেট নিয়ে বৈষম্য কেনো?, সিলেট নিয়ে ষড়যন্ত্র কেনো?, সিলেট আমার পবিত্র মাটি, সিলেট কেনো বঞ্চিত, সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নুতন ট্রেন চাই, আমরা বঞ্চনার অবসান চাই, আমরা সিলেটের উন্নয়ন চাই- প্রভৃতি শ্লোগান সম্বলিত পোষ্টার ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
সাংবাদিক ও সংগঠক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- সিলেটের গণমানুষের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবরুল হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাবেক সেক্রেটারি রানা ফেরদৌস চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান, টাইম টেলিভিশনের সিইউও আবু তাহের, পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা-ধরা ইউএসএ'র সমন্বয়ক সেলিনা উদ্দিন, সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মঈনুল হক হেলাল, এমদাদ দিপু, সাইফুল্যাহ, আতিক রহমান, আলিম উদ্দিন, শেখ আতিকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নেতৃবন্দ।
কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন নিউইয়র্ক স্টেট এসেম্বলি মেম্বার প্রার্থী মেরি জোবাইদা সিলেটের উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে বক্তারা বলেন- সিলেট অঞ্চল প্রাকৃতিক সম্পদের অপরূপ সম্ভার, পর্যটন এলাকা। সিলেট থেকে দেশের ৪০ ভাগ গ্যাস সরবরাহ করা হয়। সিলেটের চা, পাথর, মাটি, বালু, বিদ্যুৎ সবই আছে। আর আমরা সিলেটিরা শুধু রেমিটেন্স পাঠাবো কিন্তু উন্নয়ন পাবো না, এটা কেমন কথা।
সিলেটে বাস-ট্রেন তথা সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দাবী দীর্ঘদিনের। নামকাওয়াস্তে শুধু লন্ডন থেকে বাংলাদেশ বিমান গিয়ে নামে। তাও ভাড়া দ্বিগুন। আমাদের রেমিটেন্সের টাকায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। অথচ; সিলেটে উন্নয়ন হয়না। এটি হতে পারেনা।
বক্তরা বলেন- দেশের একটি থানায়ও হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সিলেট বিভাগ ছিটেফোটাও পায়না। উন্নয়ন নিয়ে এমন বৈষম্য কেনো? আমরা গুরুত্ব বিবেচনায় সকল অঞ্চলের মতো সিলেটে সমান বরাদ্দের দাবী জানাই। এই আওয়াজ নিউইয়র্ক থেকে নয়, বিশ্বব্যাপী তুলতে হবে। যেখানে যেখানে সিলেটি আছে সেখান থেকে।
বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- আপনারা যখন নির্বাচন করেন, ক্ষমতায় যান তখন হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজারে যান। সেখান থেকে দোয়া নিয়ে আসেন। কিন্তু আমরা (সিলেটবাসী) কোন উন্নয়ন পাইনা। আমাদের দাবীগুলো মেনে নিবেন। আমাদেরকে ক্ষুব্ধ হতে দিবেননা আশাকরি।
সাংবাদিক ও সংগঠক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন বলেন, সরকারে যে আছেন, যে আসবেন- আমরা রাজনীতি বুঝিনা। সিলেটের উন্নয়ন নিশ্চিত করা না পর্যন্ত উন্নয়নের ধারাবাহিক লড়াই চলবে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন