আপডেট :

        ট্রাম্পের বাণিজ্য চাপের মুখে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তা

        “ফরিদপুরে এ.কে. আজাদ বাড়িতে বিএনপি মিছিল নিয়ে চড়াও, গণসংহতি আন্দোলনের তীব্র প্রতিবাদ

        ক্লাব বিশ্বকাপে খেলায় Musiala ইনজুরিতে পরাজিত বায়ার্ন — PSG সেমিতে জয়ী

        করোনা ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ছে: একদিনে ২৯৪ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত, একজনের মৃত্যু

        “সাইফুল হক: রাজনৈতিক মতপার্থক্যের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে”

        পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং-ঝড় তোলায় দম বন্ধ করা পরিবেশ

        কার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন শ্রীলেখা

        “পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানে আফগান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ৩০ সদস্য নিহত”

        টেকনাফে ভারী বর্ষণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ ১৫০০ ঘরবাড়ি ডুবে গেছে

        ঢাকাতে উল্টো পথে রথ টেনে সম্পন্ন রথ উৎসব—ভক্তদের আনন্দ ও ধর্মীয় আবেগের মেলবন্ধন

        সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ

        “দীর্ঘ মন্দা ভেঙে ঢেউ উঠছে: ১১ মাস পর শেয়ারদরের পুনর্গতি”

        “পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু—কারবালার শোক ও উপবাসের দিন আজ”

        “পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু—কারবালার শোক ও উপবাসের দিন আজ”

        “মঈন খান: ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গুম-হত্যা ছিল রুটিন কাজ”

        মালয়েশিয়া ‘জঙ্গি’ সন্দেহে ৩৬ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার; ঢাকা দিচ্ছে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি

        মালয়েশিয়া পুলিশের সতর্কতা: ভাঙলেও বাংলাদেশের জঙ্গি হুমকি মুছে যায়নি

        এশিয়ান কাপ বাছাই শেষ করল বাংলাদেশ নারী দল

        স্কুলে মোবাইল নিষেধাজ্ঞা কার্যকর: নেদারল্যান্ডে ফোকাস ও ফলাফলে বৃদ্ধি

        মঈন খান আ’লীগকে ‘পলায়নকারী শক্তি’ বললেন

বিজয় দিবসে বন্ধুদেশের উপহার!

বিজয় দিবসে বন্ধুদেশের উপহার!

অনেকদিন পরে দুটি কথা না লিখে পারলাম না!

লাশ উপহার বন্ধু দেশের থেকে আমরা স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই অব্যাহতভাবে পেয়ে আসছি। এমন উপহার নেপাল ভুটান ও পাকিস্তানের কপালে জোটে না। লাশ উপহার দেয়াটাও বড় কথা নয়, তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে- এই উপহারটি আমরা কিভাবে গ্রহণ করলাম। আমাদের বৈদেশিক প্রতিনিধি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ''বাংলাদেশীরা  বন্দুক ও বোমা নিয়ে বর্ডার ক্রস করে ভারতের অনেক ভেতরে চলে যায়! তখন বন্দুক ও বোমার ভয়ে বিএসএফ গুলি করতে বাধ্য হয়! ভারতীয়দের একতরফা দোষ দিলে চলবেনা, আমাদেরও দোষ আছে...!"

অনেক দিন ধরেই দেশের কোনোকিছু নিয়ে লিখছিনা। শুধু নিরব পাঠক হয়ে পড়ে যাচ্ছি, নিরব শ্রোতা হয়ে শুনে যাচ্ছি, নিরব দর্শক হয়ে দেখে যাচ্ছি হযরত মাওলানা মুফতী শাহরিয়ার কবির-গংদের ফতোয়াবাজী ও দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা! কিন্তু আমার প্রিয় জন্মভূমির গজিয়ে ওঠা এতবড় দেশপ্রেমিকের উক্তি নিয়ে দুটি কথা না বলে পারছিনা।

দুনিয়ায় এমন কোনো দেশ পাওয়া যাবেনা, যেদেশের কোনো শীর্ষ নেতা নিজ দেশের জনগণকে 'চোর' ও 'সন্ত্রাসী' সাব্যস্ত করে কথা বলে। ইভেন দো জলদস্যু দেশ হিসেবে পরিচিত সোমালিয়ার নেতারাও আজ পর্যন্ত স্বীকার করেনি, তার দেশের জনতা যুগের পর যুগ ধরে আরব সাগরে, গাল্ফ অব এডেনে জলদস্যুবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগছে যে, টিপু সুলতানের বিশ্বাসঘাতক উজির মীর সাদিক, মীর মঈনুদ্দিন, নবাব সিরাজের বিশ্বাসঘাতক উজির মীর জাফর, উমিচাঁদ, এমনকি মুসলিম স্পেনের শেষ শাসক আবু আব্দুল্লাহর বিশ্বাসঘাতক উজির আবুল কাশিমের চেয়েও আজ বাংলায় বড় বড় বিশ্বাসঘাতক, মোনাফেক ও জাতিদ্রোহী উজিরের পয়দা হয়েছে!

এমন অনুগত ভৃত্য যদি কোনদেশের থাকে, ভৌগোলিক ভাবে সেদেশকে কারো দখলে নেয়ার প্রয়োজন পরেনা। বাংলার বৈদেশিক উজিরের বক্তব্য অনুযায়ী বাংলাদেশের জনতা নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তানিদের চেয়েও খারাপ। তাই বর্ডারে প্রতিনিয়ত এই চোরাকারবারি জাতিকে পাখির মতো গুলি করে মারা হচ্ছে! নেপাল ভুটানের জনগণ আমাদের চেয়ে ভালো, তারা চোরাকারবারি নহে! ফেলানির নিকটেও নিশয়ই বন্দুক ও বোমা ছিলো। তাই তাকে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিলো। বর্ডার ক্রস করে এপার এসে যাদের মারা হয়, তাদের নিকটেও ভারতীয় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দ্বারা বোমা ও বন্দুকের দেখা মিলতো!

-দেশের খেয়ে, দেশের পড়ে, দেশের মানুষকে যারা আন্তর্জাতিক মহলে এমন চোরের জাতি প্রমাণে দ্বিধা করেনা, তাদের ঔদ্ধত্য আজ সীমা ছাড়িয়ে অসীমে পৌঁছে গিয়েছে। আর আমরাও এমন কপালপোড়া জাতি যে, স্বৈরাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে এই ঔদ্ধত্যের নিন্দাবাদ করার যোগ্যতাটাও হারিয়েছি ফেলেছি। আজ গুগোল'ও আপডেট দিচ্ছে, 'ডেঞ্জারাস বর্ডার ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড'-এর তালিকায় বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ান বর্ডার ৫ নম্বরে! একটা বার ভাবুন তো, কি চমৎকার আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব; বন্ধুত্বের কার্যকলাপে আজ আমাদের বর্ডার ডেঞ্জারাস বর্ডারের তালিকায় স্থান পায়! পাক-ভারতের বর্ডার বিশ্বের এক নম্বর ডেঞ্জারাস বর্ডারের তালিকায় রয়েছে। বিশ্ববাসী জানে যে, এই দেশদুটি চিরবৈরী দেশ; কিন্তু আমাদের ইহা কেমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক?

আওয়ামীলীগ সরকার কোনদিন এই সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে কোনো শক্তিশালী প্রতিবাদ দূরে থাক, ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকেও একটা সাদামাটা প্রতিবাদ করতে পারেনি। প্রতিবাদ না করতে পারলেও ইতিপূর্বে তারা ভালোমন্দ কোনো মতামত না দিয়ে খামুশ হয়ে থাকতেন। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে সরাসরি নিঃসংকোচে, নির্ভয়ে ভারতীদের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করে যাচ্ছে! তাদের বক্তব্যের আলোকে আমরা যেন আজ নেপালের চেয়েও অধম হয়ে গেছি! নেপাল'ও আজ ভারতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ড কব্জায় নিয়ে দেশের মানচিত্র পরিবর্তন করে ফেলে৷ উপমহাদেশের রাজনীতিতে ভারতের মোড়লিপনা-সূলভ আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ থেকেও লাথি খেয়ে সিটকে পরেছে ভারত। একমাত্র বাংলাদেশের তাবেদার সরকারের সাথেই মোড়লিপনা টিকিয়ে রাখতে পেরেছে ভারত। ভারতীয় উচ্ছিষ্টভোগী ঐসকল জাতিদ্রোহীদের বদান্যতায় এটা সম্ভব হয়েছে।

ভারতীয় উপমহাদেশে বৃটিশ আগ্রাসনের প্রাক্কালে জাতির গাদ্দার'রা, জাতির গদি লোভী উজিরগণ ইংরেজ সিপাহিদের ছত্রছায়ায় গদি লাভের স্বপ্ন দেখতো। জনবিচ্ছিন্ন কেউবা গদি টেকানোর স্বপ্ন দেখতো। জাতির জনবিচ্ছিন্ন ভাগ্য ত্রাতাগণ বৃটিশদের ভাগ্যত্রাতা হিসেবে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা চালাতো। শুধু বাংলার নবাব সিরাজুদ্দৌলা কিম্বা মহীশুরের টিপু সুলতানই নহে, মারাঠা সামন্ত রাজাদের অনেকেও বুঝতে পেরেছিলো, ইংরেজ বেনিয়ারা এদেশের ভাগ্যত্রাতা নয়, ইংরেজ এদেশের নতুন বর্গি, নতুন আগ্রাসী শক্তি৷ কিন্তু হায়দারাবাদের নিজামুল মুলক, দিল্লীর নজিবুদ্দৌলা, মারাঠা রাজা নানা ফার্নাবিস, হরিপন্থ ও অপরাপর কিছু মারাঠা রাজন্যবর্গের জাতিদ্রোহীতার ফলে ভারতীয় স্বাধীনতার সূর্য পৌনে দুইশত বছর অস্তমিত ছিলো৷

বাংলার নব্য এই জাতিদ্রোহীদের আস্ফালন দেখে ইতিহাস সচেতন প্রতিটি দেশপ্রেমিক  মানুষের হৃদয় কেঁপে ওঠে। স্বজাতিকে ছোট করে এমন বক্তব্য সভ্য দুনিয়ার কোনো পররাষ্ট্রনীতিতে দেখা যায়না। এটা পররাষ্ট্রনীতির ভাষা নয়। প্রতিটি দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে কৌশলগত কিছু গোপন এজেন্ডা থাকে, সরকার পরিবর্তন হলেও তাহা পরিবর্তন হয়না। সরকার পরিবর্তন হলেও সেগুলি কেহ প্রকাশ করেনা। পরিবর্তিত সরকারের পছন্দ না হলে বড়জোর ঐ ভূ-কৌশলগত ফাইল চাঁপা দিয়ে রাখা হয়। ভারত কোনদিন স্বীকার করবেনা তারা পার্বত্যচট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্র দিতো। চায়না কোনদিন স্বীকার করবেনা তারা শন্তু লার্মাকে অস্রের জোগান দিতো। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকারকে ইতিপূর্বে নজিরবিহীন ভাবে পররাষ্ট্রনীতির সুস্পষ্ট খেলাফ এই কাজটি করতে দেখা গিয়েছে। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় জাতীয় নেতাদের সাথে রাষ্ট্রীয় গোয়ান্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের ফাঁসিয়ে দিয়েছে!

এই কূটনৈতিক রীতিনীতির খেলাফের খেসারত এই জাতিকে দীর্ঘদিন বয়ে বেড়াতে হবে। ভবিষ্যৎ ঐতিহাসিকদের নিকটে এর জবাবদিহিতা একমাত্র আওয়ামীলীগকেই করতে হইবে।

 

আহমেদ ফয়সাল, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত