নরওয়াকে পালশালার বাইরে গুলি বর্ষণের ঘটনায় দুইজন আহত, বন্দুকধারীকে খুঁজছে পুলিশ
পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের জন্য অভিন্ন দাবিনামা তৈরির উদ্যোগ
ভারতের বর্তমান এবং পূর্বের সব সরকারই মুসলমানদের অবহেলা করে এসেছে বলে অভিযোগ
আছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ইমাম ও মুসলিম সংগঠনের নেতারা কলকাতায় এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন, রাজ্যের প্রায় তিন কোটি মুসলমানের জন্য তারা একটা অভিন্ন দাবি সনদ তৈরি করবেন।
এই দাবি সনদে মুসলমানদের শিক্ষা, চাকরির সুযোগসহ নানা বিষয় উঠে আসবে। মুসলিম নেতাদের
এই বৈঠকের অন্যতম মূল উদ্যোক্তা ছিলেন কলকাতার রেড রোডে ঈদের নামাজ পরিচালনাকারী
ইমাম ক্বারি ফজলুর রহমান।বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের গরীব ও পিছিয়ে পড়া
মানুষদের জন্য আমরা কিছু করতে চাই, এটা আমাদের দায়িত্ব। সেজন্যই সব মুসলিম
সংগঠনগুলোকে নিয়ে একটা বৈঠক করেছি সবাইকে এক জায়গায় এনে আমরা এগুতে
চাইছি।সমাজকে উন্নত করতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের বাদ দিলে চলবে না। কলকাতার ওই
বৈঠকে হাজির না থাকলেও মুসলিম নেতাদের এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন মৌলানা সিদ্দিকুল্লা
চৌধুরী। তার কথায়, সমাজের উন্নত করতে হলে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের বাদ দিলে চলবে না। সে
জন্যই সকলে চাইছেন একটা অভিন্ন দাবী সনদ তৈরি করে সরকারের কাছে রাখা দরকার, যাতে
নির্বাচনে সেই বিষয়গুলোর ওপর তারা গুরুত্ব দেয়।এই দাবী সনদ তৈরির উদ্যোগে সামিল হয়েছেন
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তণ ভূমিমন্ত্রী ও বর্তমানে সিপিআইএম থেকে বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রেজ্জাক
মোল্লাও। তিনি বলছিলেন, এখন পশ্চিমবঙ্গে যেটা চলছে, সেটা টোকেনিজম ইমাম ভাতা, মোয়াজ্জিন
ভাতা প্রভৃতি দেয়া হচ্ছে। এটা তো সরকারের কাজ না, এটা করবে মুসলিম সমাজ। কিন্তু সেসব
কাজগুলোকেই বড় করে দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজে কতটা মুসলিম দরদি সেটাই দেখাচ্ছেন। এগুলো
মুসলমানদের সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান নয়। ক্বারি ফজলুর রহমান সরাসরি রাজনীতি না করলেও
মাঝে মধ্যেই সরকারের সংখ্যালঘু নীতির সমালোচনা করে থাকেন প্রকাশ্যেই। তিনি বলছিলেন,
তাদের দাবী সনদ তৈরির এই উদ্যোগ পরের বছর নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই নেয়া হয়েছে। তবে
রেজ্জাক মোল্লার আশঙ্কা, যৌথ মঞ্চ তৈরির এই উদ্যোগ নিয়ে যেন মুসলিম সমাজের নেতাদের কেউ
যেন আবার নির্বাচনের আগে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি না শুরু করেন।অভিন্ন দাবি সনদ তৈরির
আগে কয়েকদিনের মধ্যেই গোটা রাজ্য জুড়ে শুরু হবে একটা সমীক্ষা যেখান থেকে মুসলিম নেতারা
একটা সামগ্রিক চিত্র তৈরি করার চেষ্টা করবেন। তবে এর আগে সাচার কমিটির রিপোর্টসহ অনেক
সমীক্ষাতেই দেখা গেছে, শিক্ষা বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা বা ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো পেশাদার
শিক্ষাক্ষেত্র, সরকারি চাকরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মুসলমানরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের
জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই মুসলমান।
শেয়ার করুন