বাংলাদেশর জনগনের স্বার্থে গনতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে : মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটো ভেলস্ নয়েস
ইউই ও এশিয়া বিষয়ক মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর "জুলিয়েটো ভেলস্ নয়েস" এর সাথে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ উপদেষ্টা ও বিএনপি'র বৈদেশিক দূত "জাহিদ এফ সরদার সাদীর" সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । বৈঠকে জুলিয়েটো ভেলস্ নয়েস বলেন মার্কিন যুক্তরারাষ্ট্র, বাংলাদেশের গত ৫ই জানুয়ারী ২০১৪, নির্বাচনের বিষয়ে আগের অবস্থানে আছে এবং বাংলাদেশ ও বাংলাদেশর জনগনের স্বার্থে, সকল দলের অংশগ্রহনে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।তিনি আর বলেন যে, সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশাল বাংলাদেশে যাওয়ার পূর্বয়েই তিনি তার সাথে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন এবং দিকনির্দেশনা দিবেন। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশাল, বাংলাদেশ সফরে আসছেন, এই বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ উপদেষ্টা ও বিএনপি'র বৈদেশিক দূত “জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী” বলেন, উনি বাংলাদেশ সফরে আসবেন। কারন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গত ৫ই জানুয়ারী ২০১৪, নির্বাচনের পর থেকে বিভিন্ন সময় তাদের উদ্বেগের কথা বলে আসছেন, তারেই দারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সফরে আসছেন। উল্লেখ্য যে, গতবছর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ১৬ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হরতাল, অবরোধ ও রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের চেষ্টা করেছিলেন বিসওয়াল। হাসিনা সারকারের একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে সারকার গঠন এবং তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বয়কটের মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অর্ধেকের বেশি আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় ওই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য মনে করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবারও নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
এ সময় জাহিদ এফ সরদার সাদী দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে, দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। গত ১২ই নভেম্বর বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাহিদ এফ সরদার সাদীর সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরারাষ্ট্র বিএনপি'র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপি'র সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু।
এদিকে একই দিনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে, বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা সবারই জানা বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন পাসাকি। পাসকি বলেন, ‘গত ৫ই জানুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বা গণতন্ত্র নিয়ে আমাদের যে উদ্বেগ, তা সবাই জানেন এবং আমরা প্রায়ই তা বলে আসছি। এ বছরের শুরুর দিকে আমরা নির্বাচনের ব্যাপারে একটি বিবৃতি দিয়েছিলাম, যেখানে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে।’ ‘বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী দলগুলোকে একটি সংলাপে বসার জন্য আমরা উৎসাহিত করেছিলাম, যেন জনগণের মতামত দেয়ার একটি উপায় তারা খুঁজে বের করতে পারেন এবং অন্যরা তা শ্রদ্ধা করতে পারেন’ যোগ করেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা উস্কানিমূলক সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এনজিওসমূহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের বিপক্ষে কথা বলেছি এবং এগুলো আমরা নিয়মিতই করে থাকি। আমরা এটা অব্যাহত রাখবো, যতদিন পর্যন্ত আমরা তা ন্যায্য বলে বোধ করবো।’
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশাল, বাংলাদেশ সফরে আসছেন, এই বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ উপদেষ্টা ও বিএনপি'র বৈদেশিক দূত “জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী” জানান, উনি এখন থেকে যে কোন সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে আসবেন। এদিকে গত অক্টোবর মাসে, ডঃ পিয়াস করিম এবং মেজর জেনারেল মনিরউজ্জামান আমেরিকান সিকিউরিটি প্রজেক্ট-এএসপির এক সেমিনারে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরেন। ঐ সেমিনারে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপসহকারী মন্ত্রী ট্রেড ব্রাউন বলেন, গত ৫ই জানুয়ারী ২০১৪ বাংলাদেশর নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়েনি।
উলেখ্য যে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ১৬ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হরতাল, অবরোধ ও রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের চেষ্টা করেছিলেন বিসওয়াল। তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বয়কটের মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অর্ধেকের বেশি আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় ওই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য মনে করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবারও নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
শ্রম ইস্যুতে ঢাকাকে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া বার্তাশ্রম ইস্যুতে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়াতে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতর ইউএসটিআর । তারা বলেছে, ‘শ্রমপরিবেশ নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের কার্যক্রমকে যেভাবে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মকাণ্ড বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিজিএমইএ নেতারা, তা শ্রমবান্ধব নয়। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা বাংলাদেশের শ্রমপরিবেশ সুরক্ষায় ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলবে।’ শ্রম অধিকার সুরক্ষায় সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশটি। ঢাকাকে কড়া বার্তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘বাংলাদেশ যখন শ্রমপরিবেশ উন্নয়নে ক্রেতা দেশগুলোর কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ, তখন শ্রমিকদের ব্যাপারে এ ধরনের তথ্য আতঙ্কজনক এবং সরকারের প্রতিশ্র“তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’ যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, তাদের কাছে সাম্প্রতিক যে রিপোর্ট রয়েছে, তাতে বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার মাত্রা আরও বেড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে জিএসপি-সংক্রান্ত ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়নেও কঠোর মনোভাব পোষণ করা হয়েছে মার্কিন প্রশাসন থেকে।
ইউএসটিআর সরকারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ‘ইপিজেড আইনে ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা যুক্ত করার যে শর্ত রয়েছে (অ্যাকশন প্ল্যানে) তা পূরণ করতেই হবে। অন্যথায় ভেবে নেওয়া হবে, তাদের (ওবামা প্রশাসনের) দেওয়া শর্ত বাস্তবায়নে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ।’
‘নন পেপার জিএসপি রিভিউ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ ধরনের কড়া বার্তা দিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য দফতর ইউএসটিআর। প্রতিবেদনটির একটি সারসংক্ষেপ ৫ নভেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন থেকে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়। মিশনের নোটিসে বলা হয়েছে- জিএসপি-সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের এই পর্যালোচনার জবাব ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দিতে হবে।
এদিকে ১১ নভেম্বর ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মোজেনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ এক পয়সাও শুল্ক দেয় না’।যুক্তরাষ্ট্রের রিভিউ প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে- ‘এখন বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারকদের (উচ্চ পর্যায়ের) এটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হবে যে, শ্রমিকদের ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা তারা আর বরদাশত করছেন না। পাশাপাশি যেসব কারখানায় নির্যাতন ও সহিংসতার মতো ঘটনা ঘটছে, সেখানে বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতিতে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। তদন্ত প্রতিবেদন এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে করে শ্রমবৈষম্য বা নির্যাতনের বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করা যায়।’যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই বার্তা এমন সময়ে দেওয়া হলো, যখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- জিএসপি-সংক্রান্ত যে অ্যাকশন প্ল্যান দেওয়া হয়েছিল তার বেশির ভাগ শর্তই পূরণ করেছে বাংলাদেশ।
শেয়ার করুন