আপডেট :

        নাহিদ ইসলাম বলছেন—বিচার ও সংস্কার শেষ, তারপরই নির্বাচন সম্ভব

        মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে

        টেলিগ্রাফ উদ্ধৃত করে: ইরানের হামলায় পাঁচটি সামরিক স্থাপনে ক্ষতি, ইসরায়েল কিছুই বলেনি

        সালাহউদ্দিন: যারা জামানত হারাবে, তাদেরই দরকার সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন

        বাঁধন ভালো কিছু প্রত্যাশা করেছিলেন

        ১০ জনের দলে যৌন হয়রানি: রুমিন ফারহানা

        রাগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? _ ১১ উপায়

        ওড়না কেড়ে নিয়ে হাত বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতো

        ৮ জুলাই ঢাকায় আসছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পপ্রধান হালুক গরগুন

        জাদুঘরে জুলাই আন্দোলনের স্থিরচিত্র

        আবু সাঈদের রক্তই খুলল আমার কারাগার কেল্লা: রংপুরে এটিএম আজহার

        ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগ

        মোব কালচারে’ নির্বাচনের চেতনা নষ্ট: জামায়াত আমির শফিকুর রহমান

        রেডিয়াল সিদ্ধান্ত: নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে আইএইএ কর্মকর্তাদের তেহরান ত্যাগ

        রেডিয়াল সিদ্ধান্ত: নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে আইএইএ কর্মকর্তাদের তেহরান ত্যাগ

        কারা কফি থেকে বিরত থাকবেন, জেনে নিন—

        পশ্চিমা সমর্থন ছাড়া কি ইসরায়েলের অস্তিত্ব টিকবে? বিশ্লেষকদের মতামত

        নারী ও শিশু নির্যাতন মহামারি পর্যায়েঃ শারমীন মুরশিদ

        ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের তথ্যচিত্র প্রদর্শন ৭ জুলাই

        লিভারপুল ও পর্তুগালের তারকা দিয়াগো জোতা গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত

ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে সমকামী নাইটক্লাবে গুলি, নিহত ৫০

ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে সমকামী নাইটক্লাবে গুলি, নিহত ৫০

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের অরল্যান্ডো শহরে পালস নামে সমকামীদের একটি নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জন। এতে আহত হয়েছে ৫৩ জন।

হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন অরল্যান্ডো শহরের মেয়র বুডি ডায়ের। তিনি শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।

হামলাকারীর পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। হামলাকারী নাম বলা হয়েছে ওমর মাতিন। তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার রাতে বন্দুক হামলায় গায়িকা ক্রিস্টিনা গ্রিমির নিহত হওয়ার শোক কাটতে না কাটতেই ফের বন্দুকধারীর বর্বরতায় কেঁপে উঠল অরল্যান্ডো শহর। ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সমকামীদের নাইটক্লাবে ঢুকে বন্দুক হামলা চালিয়ে হত্যার করা হলো অর্ধশতাধিক লোককে।

 গভীর রাতের এ বন্দুক হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। আশপাশের হাসপাতাল ও ক্লাবগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের হাসপাতালগুলোতে স্বজনদের খুঁজতে ভিড় জমিয়েছেন লোকজন।

  
এ হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ‘সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছে পুলিশ। এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলা হয়েছে।

 কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, কোনো আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাদের হাতে এমন কোনো তথ্য নেই, যা থেকে প্রমাণিত হয় হামলাকারী কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত।

 যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রসম্যান অ্যালান গ্রেসন বলেছেন, সমকামীদের নাইটক্লাবে হামলার সঙ্গে সমসাময়িক ঘটনার কোনো যোগসূত্র নেই।

হামলাকারীর পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি আফগান বংশোদ্ভূত ফ্লোরিডা রাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের বাসিন্দা। নজরদারির তালিকায় থাকা সন্ত্রাসী তালিকায় তার নাম নেই। তবে অন্য একটি ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি তদন্ত করে পুলিশ।

বন্দুক হামলার সময় পালস নাইটক্লাবে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০০ ব্যক্তি, যাদের অধিকাংশই সমকামী। হামলার পর ক্লাবের পক্ষ থেকে তাদের ‘বেরিয়ে যেতে এবং দৌড়ে পালিয়ে যেতে বলা হয়।’

 প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, হামলাকারীর কাছে বোমা ছিল। তবে প্রথমে তিনি এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। রাত ২টার দিকে হামলাকারী ক্লাবে ঢুকে পড়েন।

 হামলার প্রায় চার ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে অরল্যান্ডো পুলিশ তাদের টুইটার পেজে জানায়, ‘পালস বন্দুক হামলা : ক্লাবের মধ্যে হামলাকারী নিহত হয়েছে।’ পুলিশ কর্মকর্তারা এ হামলাকে ‘গণগুলি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

 
ক্লাবে হামলার পর পুলিশ সেখানে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ’ ঘটায়। তবে কেন পুলিশ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। তা ছাড়া পুলিশের এ বিস্ফোরণেই হামলাকারী বন্দুকধারী নিহত হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত করা হয়নি।
 
আরেকটি টুইটে অরল্যান্ডো পুলিশ জানিয়েছে, ‘আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি এটি ‘‘গণ-হতাহতের’’ মতো অবস্থা। স্থানীয়/রাজ্য/কেন্দ্রীয় সংস্থা আমাদের সাহায্য করছে।

 
এদিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও মেডিক্যাল কর্মকর্তাদের দেখা যায়। সেখানে অগ্নিনির্বাপণ টিমের কর্মকর্তা এবং বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যদের দেখা যায়। ক্লাবের সমানে ডগস্কয়াডও দেখা যায়।

স্থানীয় টিভি সাংবাদিক মুর তার টুইটার পেজে লিখেছেন, ‘সূত্র থেকে আমি জানতে পেরেছি, হামলকারীর পোশাকের সঙ্গে বোমা ছিল।’

হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন রিকার্ডো আলমোদোভার নামের এক ব্যক্তি। তিনি জানিয়েছেন, রাত ২টার দিকে হামলা হয়। নাচের ঘরে এবং বারে যারা ছিলেন, তাদের মেঝেতে পড়ে যেতে দেখি। আমাদের মধ্যে যারা পেছনের দরজার কাছে ছিলেন, তারা কোনোমতে সেখানে থেকে বেরিয়ে দৌড়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছি।

 হামলার সময় নাইটক্লাবে উপস্থিত ছিলেন হুয়ান রিভেরা। নিজের টুইটার পেজে তিনি লিখেছেন, ‘মেঝেতে এত বেশি লাশ পড়ে থাকতে দেখেনি কখনো। সৃষ্টিকর্তা মহান, আমি ও আমার বন্ধুরা কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরো কয়েকজনের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, নাইটক্লাবে ভয়াবহ হত্যাকান্ড হয়েছে। কেউ কেউ বলেছে, ড্যান্স ফ্লোরে যারা ছিল, তাদের অধিকাংশকে হত্যা করা হয়েছে।

 এদিকে অরল্যান্ডোর মেয়র হতাহতের কথা বলার সময় উল্লেখ করেন, এ হামলার ভয়াবহতা ২০০৭ সালের ভার্জিনিয়া টেকে যে হামলা হয়েছিল, তাকে ছাপিয়ে গেছে। ভার্জিনিয়া টেকে হামলায় নিহত হয় ৩৭ জন।

 অরল্যান্ডো পুলিশের প্রধান জন মিনা জানিয়েছেন, রোববার প্রথম প্রহরে (শনিবার দিবাগত রাত) রাত ২টার সময় হামলা হয় পালস নাইটক্লাবে। ক্লাবে দায়িত্বপালনকারী একজন পুলিশ কর্মকর্তারা সঙ্গে হামলাকারীর গুলি বিনিয়ম হয়। তবে তা ক্লাবের ভেতরে না বাইরে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

 হামলাকারী ক্লাবের ভেতরে অনেকে জিম্মি করে। জন মিনা জানান, জিম্মি হওয়া কয়েকজনের কাছ থেকে বার্তা ও ফোন কল পেয়ে ভোর ৫টার দিকে আমরা অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নেই। একটি টিমকে আমরা ক্লাবে অভিযানে পাঠাই।

 আমাদের সোয়াত টিমের সঙ্গে সন্দেহভাজন হামলাকারীর গুলি বিনিময় হয়। এতে হামলাকারী নিহত হয়। হামলাকারীর কাছে একটি রাইফেল, একটি হ্যান্ডগান এবং কয়েক ধরনের যন্ত্রাংশ ছিল।

ঘটনাস্থলে বোমা স্কয়াড রোবট দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জীবিত বা মৃত কেউ পড়ে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক হামলা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মাস শুটিং ট্রাকার তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ২০১৫ সালে ৩৭২টি গণগুলির অর্থাৎ বন্দুক হামলা হয়েছে। এসব হামলায় কমপক্ষে চারজন মানুষ আহত বা নিহত হয়েছে। ওই বছর ৪৭৫ জন নিহত ও ১ হাজার ৮৭০ জন আহত হয়।

 এদিকে অরল্যান্ডো শহরের পালস নাইটক্লাব থেকে প্রায় চার মাইল দূরে দি প্লাজা লাইভ কনসার্ট সেন্টারে শুক্রবার রাত ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে গুলিতে নিহত হন ২২ বছর বয়সি গায়িকা গ্রিমি। গ্রিমির হত্যাকারী ২৭ বছর বয়সি কেভিন জেমস লয়বল নিজেই নিজেকে গুলি করে মারা যান। তার হত্যার কারণ এখনো জানা যায়নি।

এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত