নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হওয়া ৪৫ জনকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে বিএনপি
নেপালে মানবিক বিপর্যয়ে সহযোগিতা:লস এঞ্জেলেসের সাহায্যকারী সংগঠন গুলো নীরব কেন ?
নেপালে গত শনিবার ৭ দশমিক ৮ মাত্রার
ভূমিকম্পে নিহতের সর্বশেষ সংখ্যা সাড়ে
চার হাজার পার হইয়া যাইতেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী সুশীল
কৈরালা গতকাল মঙ্গলবার জানাইয়াছেন, এই
সংখ্যা দশ সহস্রাধিক হইতে পারে। ১৯৩৪ সালে
ভয়াবহ আরেকটি ভূমিকম্পে নেপাল-বিহার
মিলাইয়া প্রাণহানি হইয়াছিল ৮৫০০ জনের।
আশঙ্কা হইতেছে, গত একশত বত্সরের মধ্যে
সর্বাধিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হইতে
যাইতেছে এইবার।
এমনিতেই নেপালের
স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো বিশ্বের মধ্যে অন্যতম
দুর্বল। দুই কোটি ৮০ লক্ষ মানুষের বাসভূমি নেপাল
বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলিরও অন্যতম। ২০টি
পারমাণবিক শক্তির এই ভূমিকম্পে নেপালের
চিকিত্সা ব্যবস্থাও ভাঙিয়া পড়িয়াছে।
হাসপাতালে শয্যার তুলনায় আহতের সংখ্যা
অনেকগুণ। ঔষধ বাড়ন্ত। এই ধরনের বিপর্যয়ের পর
ন্যূনতম পর্যায়ের চিকিত্সা না মিলিলে
রোগব্যাধি ছড়াইয়া পড়ে দ্রুতহারে।
প্রকৃতপক্ষে ইহা এমনি এক বিপর্যয়, যাহা উন্নত
দেশে ঘটিলেও প্রাথমিকভাবে সামগ্রিক
পরিস্থিতি সামলাইতে তাহাদেরও হিমশিম খাইতে
হয়। স্বভাবতই নেপালের মানবিক সঙ্কট যে
তীব্রতর হইবে, তাহা অস্বাভাবিক নহে। তাহা
ছাড়া, এই বিপর্যয় সামলাইবার কাজটি এমনই
ব্যাপক ও দুষ্কর যে, একা নেপালের পক্ষে তাহা
সম্ভবপর নহে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ভিন্ন এই
দুর্যোগ হইতে উত্তরণের কোনো সুযোগ নাই। আর সেই
সহযোগিতায় সর্বপ্রথম আগাইয়া আসিতে হয়
প্রতিবেশী দেশসমূহকেই। বাংলাদেশ
প্রাথমিকভাবে সাহায্য ও সহযোগিতার হাত
বাড়াইয়া দিয়াছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর
একটি সি১৩০ পরিবহন বিমান রবিবার জরুরি ঔষধ,
তাঁবু, বিস্কুটসহ টিনজাত শুকনা খাবার, পানি ও
কম্বলসমেত দশ টন ত্রাণসামগ্রী লইয়া নেপালে
পৌঁছাইয়াছে। সেনাবাহিনীর ছয়টি চিকিত্সা দল
ও বিমান বাহিনীর ক্রুরাও রহিয়াছেন এই
প্রতিনিধি দলে। নেপালে ত্রাণ পাঠাইতে আগ্রহী
অন্য দেশসমূহ চাহিলে বাংলাদেশের সৈয়দপুর
বিমানবন্দর ছাড়াও লালমনিরহাটের অব্যবহূত
বিমানবন্দর ব্যবহার করিতে পারিবে, প্রয়োজনে
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং
তেজগাঁওয়ে পুরাতন (কুর্মিটোলা) বিমানবন্দরও
ব্যবহার করিবার ব্যাপারে সম্মতি দিয়াছেন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নেপালের আরও দুই
নিকট প্রতিবেশী ভারত ও চীন ত্রাণকার্যে
ঝাঁপাইয়া পড়িয়াছে। যুক্তরাষ্ট্র সুদূর অবস্থানে
থাকিয়াও প্রথমাবধিই ত্বরিত তত্পরতায়
ত্রাণকার্যে আগাইয়া আসিয়াছে।
কিন্তু নেপালের অবস্থা এমনই ভয়াবহ পর্যায়ে
চলিয়া যাইতেছে যে, এই সকল সহযোগিতা
প্রয়োজনের তুলনায় সাগরের বারিবিন্দুর মতো।
ইউনিসেফ জানাইয়াছে, এই ভূমিকম্পে নেপালে
ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে প্রায় দশ লক্ষ শিশু। লক্ষ লক্ষ
মানুষ খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে রাত
কাটাইতেছে। খাবার ও পানীয় জলের হাহাকার।
জাতিসংঘের তথ্য মোতাবেক নেপালে প্রায় ৬৬ লক্ষ
মানুষ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন। অর্থাত্
নেপালের বেহাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং এই বিপুল
আর্ত মানুষের চিকিত্সা, খাদ্য ও ন্যূনতম পর্যায়ে
রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা এক রকমের সর্বনিম্ন
পর্যায়ে রহিয়াছে। তাহাতে সামগ্রিক বিপর্যয়
আরও প্রকট হইয়া উঠিয়াছে। আতঙ্কে বহু মানুষ
খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাইতেছেন।
যাহাদের বাড়িঘর ধসিয়া গিয়াছে তাহাদের
পাশাপাশি অন্যরা তাঁবুতে থাকিতে বাধ্য
হইতেছেন পরবর্তী ভূমিকম্পের আতঙ্কে। সাধারণ
শুকনো খাবার, বিস্কুট, পানীয় জল বিকাচ্ছে চার-
পাঁচগুণ বেশি দামে। সুতরাং নেপালের জন্য
আমাদের সকলের হাত নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী,
বাড়াইয়া দেওয়া জরুরি। কারণ, মানুষ ই পারে মানুষের বিপর্যয়ে ত্বরিতগতিতে
সবচেয়ে সুন্দরভাবে সহযোগিতা করিতে।
আমাদের লস এঞ্জেলেসের অনেক সুপরিচিত ও স্বনাম ধন্য সংগঠন রয়েছে । তারা দেশে ও বিদেশে
বিভিন্ন মানবিক প্রয়োজনে সহায়তার হাট বাড়িয়ে দেন । তাদের মধ্যে যেমন অন্যতম “বাফলা”।
অনেক রকম সেবামূলক কাজ তারা করে থাকেন । আরও নাম না বলা অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা
চ্যারিটির কাজ করেন। । আবার অনেক হাজার হাজার ডলার খরচ করে আনন্দ উদযাপন করেন ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অল্প কিছু মুহূর্তের আনন্দ উপভোগ করেন । তাদের প্রতি
আহ্বান রইল, নেপালে দুর্যোগ গ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান । “মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের
জন্য”।
শেয়ার করুন