সিলেটে বাসা ভাড়া বাড়ছে নেই কোনও নীতিমালা!
সিলেট মহানগরীতে গত দুই বছরে বাসা ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ। তবে ভাড়া বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নীতিমালা না থাকায় মালিকেরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়াচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। তাঁদের অভিমত, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এলাকার গুরুত্বানুযায়ী ভাড়া নির্ধারণে একটি কার্যকর তালিকা প্রস্তুত করলে ওই ঝামেলা থেকে নাগরিকেরা মুক্ত হতে পারবেন। কাজীটোলা এলাকার তৌহিদুর আহমেদ নামের এক ভাড়াটিয়া স্কুলশিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে নগরে বাসা ভাড়া বেড়েই চলছে। আমরা যারা মধ্যবিত্ত, তাদের বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কোনো নীতিমালা না থাকায় মালিকেরা মাসের পর মাস ভাড়া বাড়িয়ে ভাড়াটিয়াদের জিম্মি করে আসছেন। ’
এমসি কলেজের শিক্ষার্থী নুরুল আমিন বলেন, ‘আমরা সাতজন সহপাঠী ছয় হাজার টাকায় টিলাগড় এলাকায় দুই রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে মেস করে থাকছি। ছয় মাস আগে মালিক ভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভাড়া আরেক দফা ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সুবীর সরকার বলেন, ‘আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করছি। কোনো রকমে একটা মানহীন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছি। প্রতি মাসে বাসা ভাড়া হিসেবে আমাকে পাঁচ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। অথচ গত দুই বছর আগেও এই ভাড়া ছিল তিন হাজার টাকা। বাসা ভাড়া দিতে গিয়েই আয়ের অর্ধেক শেষ, বাকি টাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে চলছে। ’পাঠানটোলা এলাকার একটি মেসে থাকছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থী আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, ‘গত কয় দিন আগেও বাসা ভাড়া বাড়ানো নিয়ে মালিকের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়েছে। ছয় মাস পরপর মালিক খেয়ালখুশিমতো ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যেন দেশে কোনো আইনকানুন নেই। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ’উপশহর এলাকার মকবুল হোসেন নামের এক বাসার মালিক বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য দিন দিন যেভাবে বাড়ছে, তাতে হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা। তাই জীবনযাত্রার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়েই বাসা ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে। ’অনেকে জানান, সিটি করপোরেশন কর্তৃপকে দীর্ঘদিন ধরে নগরে বাসা ভাড়া নির্ধারণে একটি নীতিমালা ও গ্রহণযোগ্য তালিকা প্রস্তুতের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে একাধিকবার বলা হলেও এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদপে নেওয়া হয়নি। সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক বলেন, ‘বাসা ভাড়া নির্ধারণে কোনো ধরনের নীতিমালা না থাকায় নগরে এক এলাকার সঙ্গে আরেক এলাকার বাসা ভাড়ায় বিস্তর অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। মালিকেরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছেন।
শেয়ার করুন