ট্রাম্পের বাণিজ্য চাপের মুখে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তা
ভোলাগঞ্জ যেন এক লুটের রাজ্য
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য ব্রিটিশরা যাকে বলত ‘ইডেন গার্ডেন অফ প্যারাডাইস’—সেই ভোলাগঞ্জ এখন পরিণত হয়েছে লুটের রাজ্যে। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি ও শাহ আরেফিন টিলা এলাকা থেকে প্রতিদিন লুট হচ্ছে কোটি টাকার পাথর ও বালু। সংরক্ষিত বাংকার এলাকাও রেহাই পাচ্ছে না এই লুটপাট থেকে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সুযোগ নিয়ে একটি চক্র এ কাজ করছে অভিযোগ স্থানীয়দের। আর সংশ্লিষ্টরা শোনাচ্ছেন লুট বন্ধে নানা কর্মকাণ্ডের কথা।সিলেট ভ্রমণ প্যাকেজ
ইতিহাস বলছে ব্রিটিশরা ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর উত্তোলন করা শেষে এই এলাকাকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্রাউন্ড লেন্ড হিসেবে ঘোষণা করে। ১৭০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে এই এলাকায় ব্রিটিশরা তাদের পরিবার নিয়ে অবসর সময় কাটাতে আসতেন। তখন এই এলাকাকে বলা হতো ইডেন গার্ডেন অফ পেরাডাইস। বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোর একটি এই ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর।
শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত দিনগুলোতে সীমিত পরিসরে উত্তোলন করা হলেও ৫ আগস্টের পরবর্তী সময় থেকে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি, শাহ আরেফিন টিলা এলাকা থেকে নির্বিচারে উত্তোলন হচ্ছে পাথর ও বালু। কর্তৃপক্ষ না থাকায় সংরক্ষিত বাংকার এলাকার পাথর উত্তোলন করছেন তারা। প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান করলেও অভিযান শেষে আবারও উত্তোলন শুরু করছেন।
যার ফলে হুমকির মুখে দেশের একমাত্র রোপওয়ে বাংকারের স্থাপনা।
এসব ঘটনায় সাথে মাঝেমধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম উঠে আসছে। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ—কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় লুট চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বারকি শ্রমিকরা। আর এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ মহল। প্রশাসন চাইলে একটি পাথরও কেই নিয়ে যেতে পারবে না। লুট বন্ধে প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।
জানাতে চাইলে কোম্পানিগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুন্নাহার বলেন, লুট ঠেকাতে অভিযান অব্যাহত আছে। কিছুদিন পর পর অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে জব্দ করা হচ্ছে অবৈধ মেশিন, ধ্বংস করা হচ্ছে বারকি নৌকা। অনেক সময় করা হচ্ছে জেল-জরিমানা। এতো কিছুর পরও বন্ধ করা যাচ্ছে না লুটের এই ভয়াবহতা। লুট বন্ধে তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার জানান, অনিয়ন্ত্রিত পাথর ও বালু উত্তোলনে পরিবেশের ওপর পড়ছে মারাত্মক প্রভাব। ভোলাগঞ্জ ‘ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া’ হিসেবে ঘোষিত না হওয়ায় সেখানে আইনি পদক্ষেপ সীমিত। জাফলং বা ইসিএ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করার মাধ্য যেভাবে মামলা করা হয় ভোলাগঞ্জের ক্ষেত্রে সেটি করা যাচ্ছে না। তবে ভোলাগঞ্জকে ইসিএ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা যায় কি না সেটি দেখা যেতে পারে।সিলেট ভ্রমণ প্যাকেজ
ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির সঙ্গে জীবিকা জড়িত কয়েক লাখ শ্রমিক। তাই প্রশাসনের তদারকির মাধ্যমে কোয়ারি চালু রাখার সাথে সাথে সংরক্ষিত এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন