আপডেট :

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

        মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী দুই দেশ—ইরান ও ইসরায়েলকে নিয়ে মহাবিপত্তিতে আছে জর্ডান

        বিনা ভোটে জিতে বললেন, ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি’

        বিনা ভোটে জিতে বললেন, ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি’

        অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসার সুদ বা মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহার

        পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান

        ভারতের লাদাখের রাজধানী লেহতে আমরণ অনশনে সোনম ওয়াংচুক

        ভারতের লাদাখের রাজধানী লেহতে আমরণ অনশনে সোনম ওয়াংচুক

        শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার

        কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আলী আকবরকে জিজ্ঞাসাবাদ

        ক্যাসিনোকাণ্ডের প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন

        যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিপরিষদে টিকটক নিষিদ্ধের বিল পাস

        ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, পুলিশের ধরপাকড়

        দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত চালাচ্ছে

        রুমা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ কেএনএফের আরও ৭ সহযোগী গ্রেপ্তার হলেন

        স্বর্ণের দাম কমলো

        ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প এবং সেটি দেখতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষন

দেশের ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

দেশের ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

আগামী কয়েকদিন অব্যাহত ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বন্যায় আক্রান্ত হতে পারও আরও নতুন নতুন জেলাও। যেকোনও মূল্যে এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কোনও অবস্থাতেই যেন বন্যায় কোনও লোক মারা না যান, খাদ্যে কষ্ট না পান বা কোনও দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে বন্যাকবলিত এলাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশের লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার ও নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অবনতি হয়েছে। কারণ হিসেবে সূত্র জানিয়েছে, ভারতের ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বাড়লে যমুনা নদীতে পানি বাড়বে। বিহারে গঙ্গায় পানি বাড়ায় পদ্মার অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। একইসঙ্গে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে দেশের ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ মনিটরিং সেল কাজ শুরু করেছে। সেখান থেকে সব জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বন্যকবলিত অঞ্চলের জেলা প্রশাসকদের কাছে সরকারের জরুরি বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি বরাদ্দ রয়েছে। এরপরও প্রয়োজন হলে ডিও দেওয়া মাত্র তা পৌঁছে যাবে বলেও ডিসিদের আশ্বস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সাইক্লোন শেল্টারসহ উঁচু ভবনের স্কুল-কলেজের কক্ষগুলোতে যেন লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া যায়, সেদিকটি বিচেনায় রেখে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চাবি সংরক্ষণে রাখার বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি বিপদসীমার ওপরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলেই মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে। এ সময় গৃহপালিত পশুপাখি যেন নিরাপদ স্থানে রাখা হয়, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার (১২ জুলাই) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্ট খোলা রাখা হয়েছে। কাল শনিবার (১৩ জুলাই) এ মন্ত্রণালয়সহ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো খোলা থাকবে। শুক্রবার সকালে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ভবিষ্যতে বন্যা আক্রান্ত হতে পারে এমন জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলার নদীতে ৬২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে, তারমধ্যে ২৬টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলোকে ঠিক করার জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এরমধ্যে ৫৫১টি পয়েন্টকে ঝুঁকিমুক্ত করতে কাজ করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জামালপুরে নদীভাঙনের প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। লালমনিহাটে তিস্তা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ শুরু হয়েছে। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সব বিভাগ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আশা করছি কোনও ধরনের দুঃসংবাদ জাতি শুনবে না। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আরও সহায়তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চাহিদা জানানো মাত্রই তা পৌঁছে দেওয়া হবে। ডিসি, টিএনও ও জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ-খবর রাখছেন।’
শুক্রবার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, সাড়ে ১৭ হাজার টন চাল এবং ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে এসব জেলায় ৫০০ তাঁবু পাঠানো হবে। ইতোমধ্যেই বন্যার সময় পানিবাহিত রোগসহ যেকোনও পরিস্থিতি সামলে নিতে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। জেলাগুলোর সিভিল সার্জনকে এ বিষয়ে তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় নেতকর্মীদের একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যেকোনও জরুরি পরিস্থিতিতে একযোগে কাজ করার রেকর্ড রয়েছে। এবারও এর ব্যত্যয় হবে না। দলের পক্ষ থেকে সেভাবেই নির্দেশনা রয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যেই তিনি বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন, বন্যাকবলিত জেলাগুলোর সঙ্গে তিনি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। অতিবৃষ্টির কারণে দেশের যেসব অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সেসব জেলায় বন্যা মোকাবিলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনাও তিনি দিয়েছেন।’

এদিকে, সুনামগঞ্জের ডিসির দায়িত্বে থাকা এডিসি (জেনারেল) শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে এই মুহূর্তে ঢাকায় অবস্থান করছেন।’ তিনি বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। হাওর অঞ্চল বলে এখানে এই সিজনে এমনিতেই পানির প্রবাহ বাড়ে। গত বছর এবারের চেয়ে বেশি পানি ছিল। এখানের ৫টি উপজেলায় বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। টিএনওরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। পানিবন্দি মানুষদের সহায়তায় প্রয়োজনীয় জিআর চাল ও নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে।’

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা এডিসি (রেভিনিউ) আহসান হাবীব বলেন, ‘জেলার ৪টি উপজেলায় পানি বেড়েছে, তবে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার মতো নয়। টিএনওরা কাজ করছেন। ইতোমধ্যেই ১১০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।’ পাটগ্রাম উপজেলায় পানির প্রবাহ কম বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর