আপডেট :

        চুক্তিতে যেতে আগ্রহ নন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন

        গণহত্যার প্রতিবাদে চীন বর্জনের ডাক

        রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আশা

        টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে আবহাওয়ায় ব্যপক পরিবর্তন

        হানিফ ফ্লাইওভারের উপরের যানজটকে সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য সমন্বয় সভা

        মালদায় দেবের হেলিকপ্টারে আগুন

        প্যারিসের সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটি থেকে গাজাপন্থী কিছু শিক্ষার্থীকে সরিয়েছে পুলিশ

        চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা পাকিস্তানের স্যাটেলাইট

        চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা পাকিস্তানের স্যাটেলাইট

        এজলাস কক্ষে এসি স্থাপন সময়ের দাবি

        জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

        জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

        ট্রেনে গুনতে হবে বাড়তি ভাড়া

        রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা

        রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা

        স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নিরুদ্দেশ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব

        কেজরিওয়াল ও রাহুলকে ঘিরে চড়ছে ভোটের পার

        রাজধানী ঢাকায় ঝুম বৃষ্টির সম্ভাবনা

        এক টেবিলে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ১৮ জন!

        এক টেবিলে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ১৮ জন!

মৃত্যুর মুখে সাগরে ভাসছে ৮০০০ অভিবাসী

মৃত্যুর মুখে সাগরে ভাসছে ৮০০০ অভিবাসী

উদ্ধার আরও ১৪০০ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের সমুদ্র উপকূল থেকে
৪৬৯ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসীকে
উদ্ধারের এক দিন পরই উদ্ধার হলেন আরও ১ হাজার
৪০০ অভিবাসী। গতকাল সোমবার মালয়েশিয়া ও
ইন্দোনেশিয়ার উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে
তাঁদের।


থাইল্যান্ডের কাছাকাছি সমুদ্রে বিভিন্ন
নৌযানে ভাসমান অবস্থায় দুর্বিষহ দিন
কাটাচ্ছেন সাত থেকে আট হাজার বাংলাদেশি ও
মিয়ানমারের অভিবাসী। অভিবাসনবিষয়ক
আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল
অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এ তথ্য
জানিয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি, এপি,
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও ব্যাংকক পোস্টের।
মালয়েশিয়ার পুলিশ জানায়, অবকাশকেন্দ্র
লংকাবি দ্বীপের অগভীর পানিতে পাচারকারীরা
নামিয়ে দেওয়ার পর গতকাল সকালে সহস্রাধিক
বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের অভিবাসীকে উদ্ধার
করা হয়। এ দ্বীপের পুলিশের উপপ্রধান জামিল
আহমেদ জানান, তিনটি নৌকায় ১ হাজার ১৮ জন
অভিবাসীকে পাচারকারীরা আনার পর এভাবে
ফেলে গেছে। তবে দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে অনেকে
পালিয়ে থাকায় এ সংখ্যা বাড়তে পারে।
লংকাবির পুলিশ জানায়, ১ হাজার ১৮ জনের মধ্যে
৫৫৫ জন বাংলাদেশি ও ৪৬৩ জন রোহিঙ্গা।
তাঁদের মধ্যে নারী ১০১ জন ও শিশু ৫২টি।
অভিবাসীরা বর্তমানে অভিবাসন কর্মকর্তাদের
তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের একজন ২৫ বছর বয়সী
‘বাংলাদেশি’ যুবক আবদুর রহিম বার্তা সংস্থা
এএফপিকে বলেন, ‘পাচারকারীদের একটি জাহাজে
আমার ২৮ দিন কেটেছে। জাহাজটিতে মানবেতর
পরিস্থিতির মধ্যে শত শত মানুষকে রাখা হয়।
আমাদের খুব সামান্যই খাবার ও পানি দেওয়া
হতো। আমি যখন আরও কিছুটা খাবার চেয়েছি, তখন
আমাকে লাঠি ও রড দিয়ে পেটানো হয়েছে।’
আবদুর রহিমকে বহনকারী ওই নৌযান বাংলাদেশ
থেকে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল বলে জানান
মালয়েশীয় কর্মকর্তারা। অভিবাসী ও কর্মকর্তারা
বলেন, আগের দিন রোববার আচেহ উপকূল থেকে
উদ্ধার করা অভিবাসীদের থাইল্যান্ড থেকে
মালয়েশিয়া নিয়ে যাচ্ছিল পাচারকারীরা। পথে
আচেহ নামিয়ে বলা হয়, মালয়েশিয়া এসে গেছে।
এদিকে গতকাল সকালে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ
প্রদেশের পূর্ব উপকূলে আরেকটি নৌকায় ৪০০
অভিবাসীকে উদ্ধার করেন দেশটির অনুসন্ধান ও
উদ্ধার দলের কর্মীরা। এ দলের প্রধান বুদিওয়ান
বলেন, অভিবাসীরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের
নাগরিক। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
আরও অভিবাসী আসতে পারেন, এমন ধারণায়
উপকূলজুড়ে টহলে সহায়তায় জেলেদের নিযুক্ত করা
হয়েছে জানিয়ে বুদিওয়ান বলেন, ‘সংকেত পাওয়া
মাত্র অভিবাসীদের উদ্ধারে আমরা সার্বক্ষণিক
প্রস্তুত রয়েছি।’
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার
করা অভিবাসীদের মধ্যে শিশু রয়েছে কমপক্ষে
৯২টি।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর মুখপাত্র মানাহান
সিমোরাংকির বলেন, পূর্ব আচেহ উপকূলে উদ্ধার
করা নৌযানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পালিয়ে
গেছে এর চালক।
এ ছাড়া আচেহর উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল থেকে গত
রোববার দুটি নৌযানে উদ্ধার হওয়া ৪৬৯ জন
অভিবাসীর সংখ্যায় সংশোধনী এনে গতকাল
দেশটির সরকার জানিয়েছে, এ সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে
৫৭৩ জন। উত্তর আচেহর পুলিশপ্রধান আচমাদি
বলেন, তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলতে
থাকায় এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এখান থেকে উদ্ধার হওয়া একজন অভিবাসী
সাংবাদিকদের বলেন, থাইল্যান্ড থেকে
পাচারকারীরা তাঁদের নৌকায় উঠিয়ে
মালয়েশিয়া পাঠাচ্ছিল। পথে নৌকায় সামান্য
জ্বালানি রেখে উত্তর আচেহ উপকূলে ফেলে যায়
তাঁদের।
পুলিশ কর্মকর্তা আচমাদি বলেন, ক্ষুধা-তৃষ্ণায়
অসুস্থ হয়ে পড়া এবং রোগাক্রান্ত অভিবাসীদের
অনেককে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের
রাখা হয়েছে একটি স্পোর্টস সেন্টারে। কেউ কেউ
স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের গভীর জঙ্গলে গণকবর থেকে
৩২ জন অভিবাসীর দেহাবশেষ ও কঙ্কাল উদ্ধার
করার পর দেশটিতে পাচারকারীদের বন্দিশিবির
নির্মূলে অভিযান শুরু করেছে সরকার। বাংলাদেশি
ও রোহিঙ্গা অভিবাসীদের প্রাথমিক এই
গন্তব্যস্থলটিতে এমন অভিযান চলার প্রেক্ষাপটেই
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া উপকূলে এভাবে শত
শত অভিবাসীকে পাচারকারীরা ঠেলে দিচ্ছে বলে
মনে করা হচ্ছে।
সাগরে কয়েক হাজার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা:
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের
(আইওএম) কর্মকর্তারা গতকাল বিবিসিকে বলেন,
থাইল্যান্ডে অভিযানের কারণে মানব
পাচারকারীরা এখন দেশটির স্থলভাগে থাকা
নিরাপদ মনে করছে না। আর তাই স্থলভাগের
কাছাকাছি সাগর এলাকাকে আস্তানা হিসেবে
বেছে নিয়েছে তারা। এতে তাদের পরিচালিত
নৌযানগুলোতে থাকা অভিবাসীরাও কূলে ভিড়তে
পারছেন না। নৌযানে ভাসমান অবস্থায় থাকা
এসব অভিবাসীর সংখ্যা হবে প্রায় আট হাজার।
রোহিঙ্গা অভিবাসীদের ওপর নজরদারিতে
নিয়োজিত সংগঠন আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক
ক্রিস লিউয়া রোববার বার্তা সংস্থাকে জানান,
মালয়েশিয়ার মালাক্কা প্রণালিতে বর্তমানে সাত
থেকে আট হাজার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা
অভিবাসী বিভিন্ন নৌযানে আটকে রয়েছেন।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারীদের
বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান চলতে থাকায়
প্রাথমিক এ দুই গন্তব্যস্থলে ভিড়তে পারছেন না
তাঁরা।
ক্রিস লিউয়া বলেন, নৌযানে ঠাসাঠাসি করে
থাকায় এবং খাবার ও পানির অভাবে এই
অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। গত
কয়েক মাসে তাঁদের কয়েকজন মারাও গেছেন বলে
খবরে জানা গেছে।
ভয়ানক পরিস্থিতিতে অভিবাসীরা: ইন্দোনেশিয়ার
উপকূল থেকে উদ্ধারের পর আচেহর আশ্রয়শিবিরে
নিয়ে আসা হয় দুঃখ ভারাক্রান্ত, ক্লান্ত, অবসন্ন
শত শত অভিবাসীকে। এঁদের অনেকেই একটু সুখের
আশায় মালয়েশিয়ার উদ্দেশে কোলের শিশুকে
নিয়েই উত্তাল সাগরে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
সৌভাগ্যক্রমে পাচারকারীদের বন্দিশিবিরে
পৌঁছার আগেই প্রাণে বেঁচে গেছেন।
একসঙ্গে হঠাৎ করেই এত অভিবাসীকে আশ্রয় দিতেও
হিমশিম অবস্থা আচেহর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয় সমাজকল্যাণ বিভাগের কর্মকর্তা মো.
ইয়ানি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে তাঁদের জন্য আমাদের
কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না। কিন্তু জরুরি অবস্থার
মতো পরিস্থিতি। তাঁদের অনেকে এতই দুর্বল যে,
মেঝের মধ্যে হাঁটুতে মাথা গুঁজে ঘুমানোর চেষ্টা
করা ছাড়া দাঁড়াতেও পারছিলেন না।’
তেগাস নামের আরেক কর্মকর্তা বলেন,
‘অভিবাসীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, দুঃখিত,
ক্লান্ত ও অবসন্ন। তবে আমরা তাঁদের যতটা সম্ভব
উৎফুল্ল করার চেষ্টা করছি। আমরা তাঁদের আমাদের
ভাই-বোনের মতোই গ্রহণ করছি।’
সুত্রঃ প্রঃ আঃ

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত