দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্রি হওয়া টিকিটে ৫ কোটি ডলারের জ্যাকপট
রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা
বিসিএল চ্যাম্পিয়ন ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের স্ট্রাইকার রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং লিগের সেরা ফুটবলার হয়েছেন। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার বিসিএল খেলেছেন তিনি। প্রথম আসরে ছিলেন ভিক্টোরিয়া ক্লাবে ছিলেন গোলরক্ষক। কিন্তু রাফায়েলের বিশ্বাস গোলপোস্টের নিচে থাকলে জীবনে তারকা হওয়া যাবে না। পৃথিবীর সব নামকরা গোলরক্ষকের চেয়ে আক্রমণভাগে যারা খেলেন তারা বেশি আলোচনায় থাকেন। তাদেরকেই ফুটবলের নায়ক, মহানায়ক বলা হয়।
এসব স্বপ্ন, মনের মধ্যে নিজেকে নায়ক মহানায়ক ভাবতে ভাবতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন তিন কাঠির নিচে খেলবেন না। স্ট্রাইকার হবেন। গোল করবেন, ম্যাচ জেতাবেন। ফুটবলের নায়ক হবেন। গোলদাতাদের দিকে সাধারণ মানুষ একটু আলাদা দৃষ্টি দেয়। সেই মোহ হাতছানি দিয়েছিল রাফায়েল টুডুকে। ব্যাস, তারপরই স্ট্রাইকার হওয়ার জন্য ছুটলেন। ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের কর্মকর্তা এবং কোচ স্ট্রাইকিং পজিশনে নামিয়ে দিলেন রাফায়েলকে। লিগে ১২ গোল করলেন, এক ম্যাচে ৪ গোলও করেছেন। এক সঙ্গে দুটো পুরস্কার পেলেন, ইয়ংমেন্সের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মাখন বলছিলেন, এই ছেলেটি এবং গোলরক্ষক সাজুর কারণে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তাদের অবদান অনেক। অথচ দুজনেই সাইড বেঞ্চে ছিলেন।’
৭০০ টাকা পকেটে নিয়ে একরাতে ট্রেনে চড়ে ঢাকায় এসেছিলেন রাফায়েল। চোখে ফুটবলার হবার স্বপ্ন নিয়ে আসা ২২ বছরের তরুণ ফুটবলার এখন বেশ আলোচনায় রয়েছেন। রাজশাহীর ঋষিকুল ইউনিয়নের আমতলী পাড়া গ্রামের ছেলে রাফায়েল। সাঁওতাল আদিবাসী, খ্রিষ্টান ধর্মের ছেলে রাফায়েল। তাদের সাঁওতাল আদিবাসীর মধ্যে একমাত্র ফুটবলার রাফায়েল। পরিবারের চার ভাই কৃষিকাজ করেন। বেঁচে থাকতে বাবাও কৃষি কাজ করতেন। রাফায়েল বললেন, ‘আমাদের আদিবাসীদের মধ্যে কেউ ফুটবল খেলেনি। আমি ফুটবল খেলতাম বলে আমাকে ওরা বলত দুই দিন পর কৃষিকাজ করতে হবে। ফুটবল ছেড়ে দে। ওরাই এখন আমার খোঁজ নিচ্ছে।’
ইয়ংমেন্স ক্লাবে বসে রাফায়েল টুডু বাবার কথা বলতে বলতে তার কণ্ঠ ভারী হয়ে আসছিল। চোখের কোনায় জলের আনাগোনা। বাবার কথা মনে করে এখনো নিজেকে স্থির রাখতে পারেন না। বললেন, ‘বাবাকে বিছানায় অসুস্থ রেখে আমি অনুশীলনে গিয়েছিলাম, বাসায় ফিরে দেখি বাবার নিথরদেহ। বাবার জন্য কান্না আসে।’ রাজশাহীতে কিশোর ফুটবল একাডেমির মামুনুল ইসলামের হাতে গড়ে উঠেছেন রাফায়েল। আমার গ্রামে আমি স্ট্রাইকার পজিশনে খেলেছি। ভালো খেলতাম। আত্মবিশ্বাস ছিল। মেসিকে দেখেই গোলরক্ষক থেকে আমি স্ট্রাইকার হয়েছি। আমার মা মাখরুম হেমরন আমার পুরস্কারের ভিডিও দেখে কেঁদেছেন। অনেক খুশি হয়েছেন মা।’
দেশের ফুটবলেরও খোঁজ রাখেন রাফায়েল। বললেন, ‘ক্লাব ফুটবলে স্ট্রাইকার পজিশনে সবই বিদেশি খেলোয়াড়। দেশি স্ট্রাইকারদেরকে উইংয়ে খেলানো হয়। আর জাতীয় দলের খেলা হলে স্ট্রাইকাররা তাদের পজিশনে খেলতে গিয়ে মানিয়ে নিতে পারেন না।’
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন