আপডেট :

        চুক্তিতে যেতে আগ্রহ নন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন

        গণহত্যার প্রতিবাদে চীন বর্জনের ডাক

        রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আশা

        টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে আবহাওয়ায় ব্যপক পরিবর্তন

        হানিফ ফ্লাইওভারের উপরের যানজটকে সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য সমন্বয় সভা

        মালদায় দেবের হেলিকপ্টারে আগুন

        প্যারিসের সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটি থেকে গাজাপন্থী কিছু শিক্ষার্থীকে সরিয়েছে পুলিশ

        চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা পাকিস্তানের স্যাটেলাইট

        চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা পাকিস্তানের স্যাটেলাইট

        এজলাস কক্ষে এসি স্থাপন সময়ের দাবি

        জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

        জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

        ট্রেনে গুনতে হবে বাড়তি ভাড়া

        রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা

        রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা

        স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নিরুদ্দেশ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব

        কেজরিওয়াল ও রাহুলকে ঘিরে চড়ছে ভোটের পার

        রাজধানী ঢাকায় ঝুম বৃষ্টির সম্ভাবনা

        এক টেবিলে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ১৮ জন!

        এক টেবিলে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ১৮ জন!

পায়ে হেঁটে রাজধানীতে ফিরছেন শত শত পোশাক শ্রমিক

পায়ে হেঁটে রাজধানীতে ফিরছেন শত শত পোশাক শ্রমিক

দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই খুলছে গার্মেন্ট। সীমিত পরিসরে কারখানা খোলা হলেও যথাযথভাবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। কমপ্লায়েন্ট কারখানাগুলো শ্রমিকদের প্রবেশের সময় হাতে ও শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে এবং ভেতরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হলেও ছোট কারখানাগুলোতে নামেমাত্র সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কাজে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত শ্রমিক হেঁটে ঢাকায় ফিরছেন।

শিল্প পুলিশের তথ্য মতে, সারা দেশে সাত হাজার ৬০২টি কারখানার মধ্যে সোমবার এক ৮২০টি কারখানা খুলেছে। আগের দিন রোববার খুলেছিল এক হাজার ৪২৭টি কারখানা। দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি খুলেছে বিজিএমইএভুক্ত কারখানা। একদিনের ব্যবধানে বিজিএমইএ’র ২৩৮টি কারখানা খুলেছে। সোমবার খোলা হয় ৭১৮টি কারখানা। সবচেয়ে বেশি কারখানা খোলা হয় ঢাকা ও গাজীপুর অঞ্চলে।

অন্য দিকে বিকেএমইএভুক্ত কারখানা খোলা ছিল ১৫৭টি। এ বিষয়ে জাতীয় গামেন্ট শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি যুগান্তরকে বলেন, বড় বড় কারখানা নিরাপত্তা দিয়েই শ্রমিকদের ভেতরে প্রবেশ করিয়েছে। কিন্তু ছোট-মাঝারি কারখানাগুলো আগের মতোই তাপমাত্রা না মেপে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে কাজ করাচ্ছে। এতে শ্রমিকদের আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকছে। তাই কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে সরকারের একটি সামগ্রিক নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। যাতে সুরক্ষাবিধি না মানলে মালিকদের কী শাস্তি দেয়া হবে তা উল্লেখ থাকবে। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মে মাস দেশের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সেখানে গার্মেন্ট খুলে শ্রমিকদের হুমকিতে ফেলা হয়েছে। কারখানার বাইরে তো মানাই হচ্ছে না, ভেতরেও সুরক্ষা মানা কঠিন। তাছাড়া শ্রমিকদের কারখানা যেতে পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি, আর গণপরিবহন চালুও করা হয়নি। ফলে তাদের হেঁটে কারখানায় যেতে হচ্ছে, যা অমানবিক।

অবশ্য বস্ত্র ও পোশাক খাতের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ সীমিত পরিসরে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালু করতে মালিকদের গাইডলাইন দিয়েছে। একই সঙ্গে গ্রামে থাকা শ্রমিকদের ঢাকায় না আনার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার পরও গার্মেন্ট খোলার খবর পেয়ে চাকরি বাঁচানোর তাগিদে হেঁটে ঢাকায় ফিরছেন।

আশুলিয়ায় শ্রমিকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবিতে তিনটি কারখানা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। অন্য দিকে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে আশুলিয়া ও সাভারে বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। সোমবার আশুলিয়ার জামগড়া, ইউনিক, নরসিংহপুর ও সাভারের উলাইলে এ বিক্ষোভ হয়।

শ্রমিকরা জানান, আশুলিয়ার নরসিংহপুরে শারমিন গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার পর পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই এমন অভিযোগে কারখানা থেকে বের হয়ে যান। অন্য দিকে ইউনিক এলাকার আঞ্জুমান অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরাও কাজে যোগ দেয়ার পর পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই এমন অভিযোগ তুলে বের হয়ে যান। বিক্ষোভের মুখে বন্ধ করে দেয়া হয় নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের কারখানা। অন্য দিকে জামগড়ার নেক্সট কালেকশন নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকালে কর্মস্থলে হাজির হয়ে কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ করতে চাইলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। পরে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যান। এছাড়াও আশুলিয়ার সিগমা ফ্যাশনসের ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা সকালে কারখানার মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে তাদের চাকরি পুনর্বহাল ও কারখানা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। অন্য দিকে সাভারের উলাইল এলাকার কেএল ডিজাইন কারখানার শ্রমিকরা বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতেও বিক্ষোভ করেন। একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ শুধু হাত ধোয়া ও মাস্কের ব্যবস্থা করে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কাজে যোগ দিতে বললে তারা কারখানা থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ করেন বলেও অভিযোগ করেন। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার জানে আলম বলেন, কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে বের হয়ে চলে গেছেন। তবে কারখানায় পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মালিকপক্ষের।

গার্মেন্ট কর্মীরা নাটোর থেকে হেঁটে ঢাকার পথে : গার্মেন্ট খোলার খবরে রোববার রাত থেকেই দলে দলে নাটোর থেকে ঢাকায় উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন শত শত গার্মেন্টকর্মী। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কেউ ট্রাকে, কেউ মাছের গাড়িতে করে আবার কেউ হেঁটে ছুটছেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। সোমবার সকালে নাটোর বাসস্ট্যান্ড, বনপাড়া বাইপাস, বড়াইগ্রাম থানার মোড়ে ঢাকামুখী গার্মেন্টস কর্মীদের ভিড় দেখা গেছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই জীবিকার তাগিদে কর্মস্থলে ফিরছেন তারা। পথে তাদের নানা বিড়ম্বনায় মধ্যে পড়তে হয়েছে। যারা গাড়িতে ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। গার্মেন্টস কর্মীরা বলছেন, কর্মস্থলে থেকে মেসেস এসেছে, অফিসে হাজির না হলে চাকরি থাকবে না। কেউ কেউ বলছেন, আমাদের ফোন করে বলা হয়েছে রোববার গার্মেন্ট খুলবে, শুনেই বাড়ি থেকে বের হই, কিন্তু রাস্তায় কোনো যানবাহন পাইনি। চাকরিটাই একমাত্র ভরসা, সেটি না থাকলে বউ বাচ্চা নিয়ে কি করে চলব। তাই ঝুঁকি নিয়েই যাচ্ছি।

ঢাকার পথে গার্মেন্ট শ্রমিকরা : টাঙ্গাইল থেকেও গার্মেন্ট কর্মীরা ঢাকার পথে রওয়ানা হয়ছেন। খবর পেয়ে কেউ হেটে, কেউ অটোতে এবং কেউ খোলা ট্রাকে করে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন। সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকরা যে যেভাবে পাড়ছেন ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব, এলেঙ্গা, টাঙ্গাইল বাইপাস, মির্জাপুরে দেখা গেছে ঢাকামুখী গার্মেন্টকর্মীদের ভিড়। গণপরিবহন না পেয়ে বাস না পেয়ে ট্রাক, লেগুনা, পিকআপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বা ভ্যানে গাদাগাদি করে তারা গন্তব্যে যাচ্ছে। কর্মীরা জানান, অফিস থেকে জানানো হয়েছে গার্মেন্টস খোলা। আমাদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে এভাবে যাচ্ছি। তবে মহাসড়কে যানবাহন না থাকায় কিছুটা হেঁটে কিছুটা অটোতে গন্তব্যে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন বলেন, যারা গার্মেন্ট শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের ঢাকায় যেতে দেয়া হচ্ছে। তবে অনেকেই আমাদের অগোচরে ট্রাকে করে যাচ্ছেন। আবার কেউ হেঁটেই যাচ্ছেন। কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না, এমন কথা শোনার পর মানবিক কারণে তাদের যেতে দেয়া হচ্ছে। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত মহাসড়কে এমন পরিস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এন

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত