আপডেট :

        ৮ জুলাই ঢাকায় আসছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পপ্রধান হালুক গরগুন

        জাদুঘরে জুলাই আন্দোলনের স্থিরচিত্র

        আবু সাঈদের রক্তই খুলল আমার কারাগার কেল্লা: রংপুরে এটিএম আজহার

        ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগ

        মোব কালচারে’ নির্বাচনের চেতনা নষ্ট: জামায়াত আমির শফিকুর রহমান

        রেডিয়াল সিদ্ধান্ত: নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে আইএইএ কর্মকর্তাদের তেহরান ত্যাগ

        রেডিয়াল সিদ্ধান্ত: নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে আইএইএ কর্মকর্তাদের তেহরান ত্যাগ

        কারা কফি থেকে বিরত থাকবেন, জেনে নিন—

        পশ্চিমা সমর্থন ছাড়া কি ইসরায়েলের অস্তিত্ব টিকবে? বিশ্লেষকদের মতামত

        নারী ও শিশু নির্যাতন মহামারি পর্যায়েঃ শারমীন মুরশিদ

        ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের তথ্যচিত্র প্রদর্শন ৭ জুলাই

        লিভারপুল ও পর্তুগালের তারকা দিয়াগো জোতা গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত

        জুলাই সনদের দাবিতে অনড় এনসিপি, নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না: নাহিদ

        প্রধানমন্ত্রী থেকে সংস্কৃতিমন্ত্রী: পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার নতুন ভূমিকা

        বিটিএস ফিরছে পুরো দমে: ২০২৬-এ নতুন গান ও গ্লোবাল ট্যুরের প্রতিশ্রুতি

        ‘কফি খাচ্ছিলাম, চিল করছিলাম—হঠাৎ দেখি পাঁচ উইকেট নেই’

        দুপুরে আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

        পহেলগাম হামলার পর নিষেধাজ্ঞা শিথিল, পাকিস্তানি সেলিব্রিটিদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্সেস ফিরল

        করোনার টিকা নিরাপদ, আকস্মিক মৃত্যুর গুজবে জবাব দিল গবেষণা

        জুলাই বিপ্লবের গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ কিছু মানুষঃ বাঁধনের আক্ষেপ

আগামী ৭ দিনে বুঝা যাবে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি

আগামী ৭ দিনে বুঝা যাবে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি গত ১ সপ্তাহ ধরে একইরকম আছে। পাঁচশো’র আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। পরীক্ষাও হচ্ছে ৫ হাজারের আশেপাশে। মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা করলেও একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। যা বলা হয়, তাতে করোনা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি হচ্ছে না। আবার নিম্নগামিতার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি আতঙ্কের এবং উদ্বেগের। কারণ এটা থেকে একটা জিনিস প্রমাণ হয় যে, করোনা পরিস্থিতির সর্বোচ্চ চূড়ায় বাংলাদেশ এখনও পৌঁছেনি বা বাংলাদেশে এখনও করোনার পিক টাইম আসেনি।

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের ৫৩ তম দিন অতিবাহিত হয়েছে। করোনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, আগামী ৭ দিন হলো বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ৬০তম দিনের মধ্যেই বোঝা যায় করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তৃতি হয়েছে কিনা বা করোনার সংক্রমণ চূড়ান্ত অবস্থা বা পিকে পৌঁছেছে কিনা। বিশেষজ্ঞরা এটাও মনে করছেন যে, বাংলাদেশে যেহেতু করোনার পরীক্ষা কম এবং বহু মানুষ এখনও পরীক্ষার আওতা বহির্ভূত আছে, তাই বাংলাদেশের প্রকৃত পরিস্থিতি বুঝতে অনেক সময় লাগবে এবং প্রকৃত পরিস্থিতি হয়তো অনেক দিন বোঝাও যাবে না। নীরবে হয়তো অনেক সময় ধরে করোনা সংক্রমণ আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটা ক্ষত হয়ে থাকবে। কারণ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট পরীক্ষা হয়েছে ৭০ হাজার ২৩৯ জন।

এর আগে, বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন যে, মোটামুটি ১ লাখ যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের একটি অবস্থা বোঝা যাবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই ১ লাখ হতে হবে সারাদেশের পরীক্ষার ভিত্তিতে। কারণ দেশের ৬৩ টি জেলাতেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায়।

আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে বলে হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কাজেই সারাদেশে যদি পরীক্ষার বিস্তৃতি ঘটানো না হয়, সারাদেশ থেকে যদি ন্যূনতম নমুনা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে সামাজিক সংক্রমণের বিস্তৃতি বোঝা যাবে না। সেটা হবে ভয়াবহ।

আমাদের বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে যেয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, আমাদের আগামী ৭ দিন যদি একই রকম পরিস্থিতি থাকে তাহলে আমাদের জন্য এটা আতঙ্কের হবে এবং আমাদের পিকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সাধারণত দেখা গেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬১তম দিনে করোনা পরিস্থিতি পিকে উঠেছিল। অবশ্য ইতালি-স্পেনে ৫০তম দিনের পরই করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। বাংলাদেশে এখনও সেই পরিস্থিতি হয়নি। না হওয়ার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা সীমিত সংখ্যক পরীক্ষার কথা বলছেন।

আজ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫৭৩ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে, যা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে এখনও অনেক কম। তবে বাংলাদেশের জন্য যে তথ্যটি উদ্বেগের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, তা হলো গত ৭ দিন এ দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা একই রকম একটা গণ্ডির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আজ ৫৭১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ৫৬৪ জন। এর আগের দিন ৬৪১ (এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ)। তার আগের দিন ছিল ৫৪৯ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যাটি কয়েকটি বার্তা দিচ্ছে।

প্রথময়; বাংলাদেশে করোনার সামাজিক সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে।

দ্বিতীয়ত; বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেক গভীরে চলে গেছে।

তৃতীয়ত; এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা পিকে পৌঁছেনি।

সাধারণত করোনা পিকে পৌঁছানোর পর যখন এটি নামতে শুরু করে তখনই সরকার লকডাউনসহ বিধি নিষেধগুলো শিথিল করে। কিন্তু আগামী ৭ দিন যদি বাংলাদেশে করোনা শনাক্তকরণের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং এটি যদি কোনোভাবে একদিনে সাতশো’র ঘর অতিক্রম করে, তাহলে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষকরা। কারণ একদিকে ব্যাপকভাবে সামাজিক সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়া, অন্যদিকে সামাজিক দূরত্ব প্রতিপালন না করা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, লকডাউন ইত্যাদি আস্তে আস্তে শিথিল করার ফলে করোনার আরও সংক্রমণের সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলে বাংলাদেশে যে করোনা পরিস্থিতি তৈরি হবে, তা আমাদের যে সীমিত সুযোগ সুবিধা তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে করোনার সঙ্গে বাংলাদেশ যুদ্ধ করতে পারবে না। কারণ আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। আর কিছুদিন পরীক্ষা করলেই আমাদের টেস্টিং কিট শেষ হয়ে যাবে। চিকিৎসকদের সুরক্ষার যে পিপিই, সেটার স্বল্পতা দেখা দেবে। আমাদের যখন রোগী বাড়বে তখন হাসপাতালভিত্তিক রোগী (আমরা যদি ধরি ৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে নিতে হবে) তাদের নিয়ে আমরা একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বো। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা অসুস্থ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি তাদের নিয়ে একটি সংকটের মধ্যে পড়বো।

কাজেই আমাদেরকে দ্রুত এই করোনা সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নাহলে এই সমস্ত কারণে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য কেবল হুমকি নয়, বরং একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এন

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত