একের পর এক বাধা পেরিয়ে এরদোগান
২৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচন না করেই আরো ১৯ মাস ক্ষমতায় থাকতে পারতেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। কিন্তু তুরস্ককে অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে আরো বেশি সমৃদ্ধ করতে সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া হাত খুলে কাজ করার সুযোগ না থাকায় নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনের ফলফল তার পক্ষেই এসেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এতো বড় চ্যালেঞ্জ নেয়ার সাহস কিভাবে সঞ্চয় করলে তিনি?
এই নেতার অতীত জীবনের দিকে তাকেলে দেখা যায়, শৈশব থেকেই নানা বাঁধা মোকাবেলা করে অবস্থ তিনি। কোস্ট গার্ডের সদস্য বাবা যখন পাঁচ সন্তানকে নিয়ে ইস্তান্বুলে আসেন, তখন এরদোগানের বয়স মাত্র ১৩ বছর। সবার পড়াশোনার জন্য যে পরিমাণ অর্থের দরকার তা বাবার বেতন দিয়ে সামলানো যাচ্ছিল না। এই অবস্থায় জীবনের প্রথম চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন নিজের লেখা-পড়ার খরচ জোগার করার জন্য। রাস্তায় রাস্তায় রুটি, তিল আর লেবু বিক্রি করতেন জীবিকা নির্বাহের জন্য! তার শৈশবের অবস্থা তিনি নিজেই বর্ণনা করেন এক সমাবেশে, ‘আমার সামনে তখন লেবু বিক্রি করা ছাড়া আর কোন পথ ছিল না । যা দিয়ে আমি আমার আব্বাকে সাহায্য করতাম এবং আমার প্রাথমিক শিক্ষার খরচ যোগাড় করতাম’।
জীবনযুদ্ধে থেমে না যাওয়া এই মহানায়ক মাদ্রাসার পাঠ চুকিয়ে তুরস্কের মার্মারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন । ছাত্র অবস্থায় ফুটবল খেলা ছিল তার শখ। তুরস্কের বিখ্যাত ক্লাব ফেনারবাচ থেকে ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু বাবা রাজি না হওয়ায় প্রিয় খেলাকে বিদায় জানাতে হয়েছিল তখন।
কর্মজীবনে তিনি ইমাম হিসাবেও বেশ প্রশংসা কুড়িয়ে ছিলেন। তুরস্কের পার্লামেন্ট মসজিদের পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করেছেন। এছাড়া এরদোগান পৃথিবীর একমাত্র কোরানে হাফিজ রাষ্ট্রনেতা, তার উদ্যোগে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক হিফজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় তুরস্কে।
১৯৫৪ সালে জন্ম নেওয়া এই নেতা ২০১৪ সালে তুরস্কে অনুষ্ঠিত প্রথম সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হবার আগ পর্যন্ত এরদোগান ১১ বছর তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
শেয়ার করুন