আপডেট :

        ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ি, আহত ৬

        প্যানোরামা সিটিতে তিন গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ১

        ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্রিন কার্ড আবেদনকারীকে সাক্ষাৎকারের সময় আটক করল আইসিই

        ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল: ভুক্তভোগীদের জন্য ৩৩.৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তায় ট্রাম্পকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান নিউসমের

        অরেঞ্জ কাউন্টিতে বাইবেল স্টাডি নেতা গ্রেপ্তার: নাবালককে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

        ক্যালিফোর্নিয়ায় ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতা ও শীর্ষ সদস্য গ্রেপ্তার: নিখোঁজ সদস্যের হত্যার অভিযোগ

        ট্রাম্পের চাপ উপেক্ষা করে ইন্ডিয়ানা রিপাবলিকানদের ভোটিং মানচিত্র বাতিল

        প্যাসিফিক নর্থওয়েস্টে বন্যা, হাজারো মানুষ সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি

        ক্যালিফোর্নিয়ায় অভিবাসীদের দেয়া ১৭ হাজার বাণিজ্যিক ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল

        মার্কিন ভিসামুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের পাঁচ বছরের সোশ্যাল মিডিয়া ইতিহাস জমা দেওয়ার প্রস্তাব

        ওয়ারেন কাউন্টির নারী ৪,২০০ ডলারের বেশি SNAP সুবিধা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার

        মার্কিন বিচার বিভাগের সিভিল রাইটস ডিভিশন ‘ধ্বংসের মুখে’—২০০’র বেশি সাবেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ

        কেন্টাকি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত, সন্দেহভাজন আটক

        যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ দেশের অভিবাসন স্থগিত — আফগানদের জন্য অনিশ্চয়তা

        ট্রাম্প প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের আভাস: নতুন বছরে বরখাস্ত হতে পারেন নোম, প্যাটেল ও হেগসেথ

        কোরিয়াটাউনে ভাড়াটিয়াদের গাড়ি টেনে নিয়ে পার্কিং স্থানে ঘর বানাতে চায় মালিক

        ট্রাম্প প্রশাসন জানুয়ারি থেকে ৮৫ হাজার ভিসা বাতিল করেছে: স্টেট ডিপার্টমেন্ট

        বস্টনে কয়েক দেশের অভিবাসীদের নাগরিকত্ব শপথ স্থগিত

        মেট্রো কমিটি ৯১ ফ্রি‌ওয়ে প্রসারণের জন্য ৭ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে

        ব্যাংক থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার প্রতারণা: ৭৩ বছরের নারীকে খুঁজছে এফবিআই

যে ৮ কারণে ইইউ ছাড়ার পক্ষে বেশি ভোট

যে ৮ কারণে ইইউ ছাড়ার পক্ষে বেশি ভোট

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন অধিকাংশ ব্রিটিশ (৫২ শতাংশ)। যেসব কারণে ইইউ ছাড়ার পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে তা হলো-

১. ব্রেক্সিটের নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাবে উল্টো ফল

ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে ব্রিটেনের মানুষ আরো গরিব হয়ে যাবে, প্রচার-প্রচারণা পর্বে এমন হুঁশিয়ারি মানুষ ক্রমাগত শুনেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয় মানুষ তা বিশ্বাস করেনি অথবা মনে করেছে সেই ঝুঁকি নিতে তারা প্রস্তুত।

বিশ্বের বড় বড় অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান আইএমএফ, ওইসিডি, ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিবিআই, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ার করেছেন- ইইউ ছাড়লে প্রবৃদ্ধি মুখ থুবড়ে পড়বে, বেকারত্ব বাড়বে, পাউন্ডের দরপতন হবে, দেশ মন্দায় ডুববে, ব্যবসা লালবাতি জ্বালবে, কর বাড়বে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ কমবে। এমনকি এই হুঁশিয়ারিতে কণ্ঠ মিলিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাও।

`রিমেইন` শিবিরের কেউ কেউ বলেছেন এই নেতিবাচক প্রচারণা ‘একটু বাড়াবাড়ি’ হয়ে গেছে। জনগণ হয় তাদের বিশ্বাস করেনি, নয়তো শাসকগোষ্ঠির বিরুদ্ধে এটা তাদের বিদ্রোহের পরিচয়।

২. স্বাস্থ্য খাতে ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের প্রতিশ্রুতি

`লিভ ক্যাম্পেন`-এর স্লোগান ছিল ইইউ ছাড়লে সপ্তাহে ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ বাঁচবে। এই অর্থ স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ করা যাবে।

এমন আকর্ষণীয় স্লোগান সব বয়সের, সব রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষকে টেনেছে। এই স্লোগান ভোটারদের ইইউ ছাড়তে দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে।

`রিমেইন ক্যাম্প` বারবার বলার চেষ্টা করেছে- এ পরিসংখ্যানের ভিত্তি ভুল।

৩. অভিবাসন ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারণী বিষয়

ইইউবিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ইউকিপ নেতা নাইজেল ফারাজের অভিবাসনবিরোধী মন্তব্য এই প্রচারণায় `লিভ ক্যাম্প`-এর জন্য হয়ে উঠেছিল তুরুপের তাস।

জাতীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচিতি ও ঐতিহ্যের বিষয়টি, বিশেষ করে, নিম্ন আয়ের মানুষকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। গত ১০ বছরে ব্রিটেনে ব্যাপক সংখ্যায় অভিবাসী আসা নিয়ে উদ্বেগ, সামাজিক জীবনে তাদের প্রভাব এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী ২০ বছরে কী হবে- এসব তুলে ধরে সফল প্রচার চালিয়েছে `লিভ ক্যাম্প`। এর ফলে ইইউতে থাকার বিপক্ষে একটা শক্ত জনমত গড়ে তুলতে তারা সফল হয়েছে।

 অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়েছে কঠিন ভাষা আর ছবি- এসব নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও ভোটারদের ইইউ ছাড়ার ব্যাপারে মনস্থির করতে সাহায্য করেছে এসব প্রচার।

 ৪. জনগণ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেয়নি

ডেভিড ক্যামেরন দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে জিতেছেন। একটা গণভোটে জয়ের সাফল্যও তিনি পেয়েছেন। কিন্তু এবারে ভাগ্য তার বিপক্ষে গেছে। `রিমেইন ক্যাম্প`-এ নেতৃত্ব দিয়ে এবং এর মধ্যমণি হয়ে তিনি তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত ও ব্যক্তিগত সম্মানকে বাজি রেখেছিলেন।

 ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কে মৌলিক পরিবর্তন আনতে নয় মাস ধরে তিনি যে দেনদরবার চালান, তা অসার বলে নাকচ করে দিয়েছিলেন তার দলেরই ইইউবিরোধী সদস্যরা।

 ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা ব্রিটেনের ভবিষ্যতের জন্য কেন সুফল বয়ে আনবে, প্রচারণায় তা তিনি বারবার জোরের সঙ্গে তুলে ধরলেও যেসব ভোটার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন, তারা প্রধানমন্ত্রীর কথাকে শেষ পর্যন্ত আমল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 ৫. লেবার পার্টি ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে

লেবার পার্টি ইইউতে থাকার পক্ষে যথেষ্ট প্রচারণা চালায়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। `রিমেইন ক্যাম্প`-এ যারা প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, তাদের জেতার জন্য অপরিহার্য ছিল লেবার সমর্থকদের পাশে পাওয়া।
 
লেবার সমর্থকদের শতকরা ৯০ ভাগই ছিল ইইউতে থাকার পক্ষে। কিন্তু তাদের মধ্যে প্রচারণা চালানোর তেমন উদ্যোগ দেখা যায়নি।

গর্ডন ব্রাউন, সাদিক খান, অ্যালান জনসনের মত শীর্ষ লেবার নেতারা ব্রিটেনের ইইউতে থাকার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে কিছু প্রচার চালালেও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন দলের সমর্থকদের যথেষ্ট উদ্বুদ্ধ করতে পারেননি বলে কিছু মহল থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

 ৬. প্রচারে বরিস জনসন এবং মাইকেল গভের মতো ব্যক্তিত্ব

কনজারভেটিভ পার্টির কয়েকজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ব্রেক্সিট অর্থাৎ ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবার পক্ষে, এটা সবাই জানতেন। কিন্তু দলের দুই বড় নেতা লন্ডনের প্রাক্তন মেয়র বরিস জনসন এবং বিচারমন্ত্রী মাইকেল গভ এই ব্রেক্সিট শিবিরে যোগ দেওয়ায় `লিভ ক্যাম্পেন` নতুন মাত্রা পেয়েছিল।

 জনগণের কাছে মাইকেল গভের আকর্ষণ ছিল বিচক্ষণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে আর বরিস জনসন ছিলেন তারকা রাজনীতিক।

 ৭. বয়স্ক মানুষরা বেশি ভোট দিয়েছেন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স্ক মানুষদের ভোট `লিভ ক্যাম্পেন`কে জয়যুক্ত করতে সাহায্য করেছে। এমনিতেই বয়স্ক মানুষের মধ্যে ভোট দেবার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু এই গণভোটে দেখা গেছে ৫৫ বছরের বেশি বয়স্কদের মধ্যেই ব্রেক্সিট সমর্থকের সংখ্যা বেশি।

 
৬৫ এর বেশি বয়েসি ভোটারদের প্রতি ৫ জনের ৩ জনই বলেছেন তারা ইইউতে থাকার বিপক্ষে।

 
৮. ইউরোপ ব্রিটেনের মানুষের কাছে সবসময়ই ছিল বিদেশ

ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কখনই সহজ ছিল না। ইউরোপীয় কমিউনিটিতে যোগ দিতেও ব্রিটেন অনেক বছর সময় নিয়েছিল। ১৯৭৫ সালে যখন এ নিয়ে গণভোট হয়েছিল তখনও অনেকেই এটাকে সমর্থন জানিয়েছিল কিছুটা প্রতিবাদের সঙ্গে এবং শুধুমাত্র অর্থনৈতিক লাভের আশায়।

 
বলা হচ্ছে, তরুণ প্রজন্ম ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে। তবে ভোটের ফলাফল যতক্ষণ না পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্লেষণ করা যাবে, ততক্ষণ বোঝা যাবে না কত শতাংশ বয়স্ক আর কত শতাংশ তরুণ পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।

 
এলএবাংলাটাইমস/ই/এলআরটি

 

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত