নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি রবিবার পদত্যাগ করেছেন। পার্লামেন্টে আস্থাভোটে পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে তিনি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ৯ মাস ক্ষমতায় ছিলেন।
৬৪ বছর বয়সী অলির জায়গায় নেপালের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রচণ্ডই এগিয়ে আছেন বলে জানা গেছে।
দুই শরিক দলক্ষমতাসীন জোট ছেড়ে বের হয়ে যাওয়ায় দেশটির ৫৯৫ সদস্যের পার্লামেন্টে হেরে যাওয়া অনিবার্য হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রী কে পি অলির।
রবিবার সকালে রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি) ও মাধেসি জনঅধিকার ফোরাম নেপাল (ডেমোক্রেটিক) ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়।
উভয় দলই রবিবারের ভোটে বিরোধীদের সঙ্গে থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল।
ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ার দলীয় সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে আরপিপি’র জ্যেষ্ঠ নেতা কিরণ গিরি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের দাম্ভিকতার কারণে আমাদের এ ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না।’
মাধেসি জনঅধিকার ফোরাম নেপালও (ডেমোক্রেটিক) ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ার কথা জানিয়েছে।
নেপালের সাবেক মাওবাদীরা অলির বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ডাক দিয়েছে।
গত অক্টোবরে এই মাওবাদীদের সমর্থনেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন অলি। কিন্তু ক্ষমতার অংশীদারিত্ব চুক্তির প্রতি তিনি সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন অভিযোগ তুলে তারা তার পাশ থেকে সরে যায়।
গত কয়েক বছর ধরে নেপালে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে অলি হেরে গেলে পরিস্থিতি আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১৯৯০ সালে নেপালে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু হওয়ার পর থেকে ২৩তম সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আছে অলির মন্ত্রীসভা।
প্রধানমন্ত্রী অলির সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও তার সহযোগীরা জানিয়েছেন, পার্লামেন্টে বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
গত সেপ্টেম্বরে প্রথম সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর থেকে নেপালে নতুন করে রাজনৈতিক সঙ্কটের সূচনা হয়।
দক্ষিণের সংখ্যালঘু মাধেসিরা সংবিধান প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগ করে, তাদের এলাকা কয়েকটি ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায় তারা সেসব জায়গায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।
মাধেসিদের উদ্বেগ আমলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অলি, পাশাপাশি গত বছরের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপালিদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
অলির সমালোচকরা বলেছেন প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করেননি তিনি। এরপর মে মাসে অলির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে মাওবাদীরা।
শুক্রবার পার্লামেন্টে মাওবাদীদের নেতা প্রচ- বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অহংকারী ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছেন, কোনো কিছুই শুনতে চান না। এ কারণে তার সঙ্গে আর কাজ করে যেতে পারছি না আমরা।’
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
News Desk
শেয়ার করুন