স্বর্ণ মন্দিরের জন্য ভ্যাটিকানের মর্যাদা চায় শিখেরা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিখেরা ভারতের সরকারের সাথে গোপন আলোচনায় তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
শিখ সম্প্রদায় চায় দেশটির সরকার ১৯৮৪ সালে তাদের স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অভিযানের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। সেই সাথে তারা চায় আকাল তাখ্ত ও হারমানদার সাহিব বা স্বর্ণ মন্দিরকে ভারতের সরকার ভ্যাটিকানের মতো বিশেষ মর্যাদা দিবে।
সংশ্লিষ্ট দু'জন ব্যক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বিভিন্ন শিখ সংগঠন শিখ হিউম্যান রাইটস ফোরামের পরিচালক যশদেব সিং রাইয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালে আলোচনার জন্য যোগাযোগ করে। ওই বছরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লন্ডন সফরের আগে তারা কথাবার্তা শুরু করে এবং মোদীর সফরের সময় আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে, 'মোদি সরকার গঠনের আগে থেকেই ভারত আলোচনার আগ্রহ দেখিএছে, কিন্তু এই সরকার ক্ষমতার আসার পর আলোচনার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।'
পরবর্তীকালে সরকারের সাথে যোগাযোগের সময় শিখ সংগঠনগুলি দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান এবং আলোচনার তিনটি প্রধান বিষয় সরকারের কাছে উত্থাপন করে।
শিখেরা সরকারকে প্রধান যে দুটি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে, সেগুলো হচ্ছে বিভিন্ন দেশের উগ্র শিখ আন্দোলন কর্মীদেরকে 'কালো তালিকা থেকে' সরিয়ে নিয়ে তাদেরকে ভারতে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে এবং ২০ জন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।
তাদের তিনটি প্রধান দাবির একটি হচ্ছে, স্বর্ণ মন্দিরে অপারেশন ব্লু স্টারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করবে। স্বর্ণ মন্দিরে আশ্রয় নেয়া শিখ জঙ্গিদের বের করার জন্য পরিচালিত ওই সেনা অভিযানে পাঁচশোরও বেশি লোক মারা যায়।
তাদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে, ভারতের সরকার তাদের ধর্মীয় স্থাপনা আকাল তাখ্ত ও হারমান্দার সাহিবকে খৃস্টানদের ভ্যাটিকানের মত মর্যাদা দিতে হবে, যেন বিভিন্ন দেশের শিখেরা এর সিদ্ধান্তে বিষয়ে মতামত দিতে পারে।
একই সাথে শিখ সংগঠনগুলোর দাবী, সরকারকে অপারেশন ব্লু স্টার, শিখ বিরোধী রায়ট এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সম্পর্কে সব রকম আলোচনার পথ খোলা রাখতে হবে।
১৯৮৪ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ঘাতকের হাতে নিহত হওয়ার পর শিখদের বিরুদ্ধে রায়ট শুরু হয়, কিন্তু তাদের দাবী সেটা ছিল অপারেশন ব্লু স্টারেরই পরিণতি।
ভারতের সরকার জানিয়েছে দেশটির ২০১১ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গার জন্য সংসদে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন,। কিন্তু ওই ক্ষমা শুধু ভারতের শিখদের কাছে চাওয়া হয়েছিল মন্তব্য করে শিখ সংগঠন বলেছে তারা চায় আন্তর্জাতিক কোন প্ল্যাটফর্মে ভারত সারা পৃথিবীর শিখদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
বিভিন্ন দেশের সরকার বাধা প্রদান করা সত্ত্বেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিখ সংগঠনগুলোর সাথে ভারতের সরকার আলোচনা চালিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
শেয়ার করুন