ভুয়া খবর প্রকাশে ১০ বছর কারাদণ্ডের প্রস্তাব
ভুয়া খবর ছড়ালে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রেখে আইন প্রস্তাব করেছে মালয়েশিয়ার সরকার। প্রস্তাবিত খসড়া আইনটিতে বলা হয়েছে, ভুয়া খবর ছাড়ানোর কাজে জড়িত সন্দেহভাজনদের অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৫ লাখ রিঙ্গিত পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় জরিমানার ওই অর্থের পরিমাণ ১ কোটি টাকারও বেশি। সমালোচকরা বলেছেন, বিরোধী মতের কণ্ঠরোধে সরকার ওই আইন কার্যকর করতে যাচ্ছে। বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তহবিল তছরুপ করার ঘটনা আড়াল করতে এমন আইন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন সমালোচকরা।
প্রাস্তাবিত খসড়া আইনে ভুয়া খবরের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘সংবাদ, তথ্য এবং প্রতিবেদন যা সম্পূর্ণ বা আংশিক অসত্য’ তাকে ভুয়া খবর হিসেব বিবেচনা করা হবে। আর দোষী ব্যক্তিকে সংজ্ঞায়িত করতে লেখা হয়েছে, ‘যেকোনও মাধ্যমে জ্ঞাতসারে ভুয়া খবর তৈরি করা, দেওয়ার প্রস্তাব করা, প্রকাশ করা, মুদ্রণ করা, বিতরণ করা, ছড়ানো ও ভুয়া খবর ছড়ানোতে জড়িত থাকা কোনও প্রকাশনা প্রচার করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি’ দোষী হিসেবে বিবেচিত হবেন।
ওই আইনে ব্লগ, ফোরাম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টকেও এখতিয়ারভুক্ত করা হয়েছে। যেহেতু আইনটিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া বা মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত যে কারও ক্ষেত্রে ছাড়ানো ভুয়া খবর ওই আইনের এখতিয়ারভুক্ত, সেহেতু জড়িত ব্যক্তি দেশে থাকুক আর বিদেশে থাকুক তার বিচার করা যাবে। বিবিসি লিখেছে, এর অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি বিদেশি নাগরিক হলেও মালয়েশিয়া তার অনুপস্থিতিতে বিচার করতে পারবে।
সমালোচকরা বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের দমন করার জন্যই সরকার ওই আইন কার্যকর করার কথা ভাবছে। আগস্টের মধ্যে ওই নির্বাচন হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও, তা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা ‘লইয়্যার্স ফর লিবার্টির’ সহ-প্রতিষ্ঠাতা এরিক পউলসেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘এটি শতভাগ বিরোধী মতের কণ্ঠরোধের জন্যই করা হয়েছে... প্রাস্তাবিত শাস্তি অত্যন্ত বেশি এবং ভুয়া খবরের সংজ্ঞার আওতাও অনেক বেশি। তাছাড়া খসড়া আইনটি নির্বাচনের আগে পাস করাতে তারা দ্রুত এগোচ্ছে। মনে হয় খসড়া আইনটি শেষ পর্যন্ত পাস হয়েই যাবে।’
এরিকের মতে, বিভিন্ন বিষয়ে রচিত প্রতিবেদন, যেমন ওয়ানএমডিবি নামে পরিচিত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন তহবিল সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি নিয়ে লেখা প্রতিবেদন প্রকাশ করা কঠিন হয়ে যাবে ওই আইনটি পাস হলে। অভিযোগ উঠেছে ওই তহবিলের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
শেয়ার করুন