আপডেট :

        আবারও একবার টিভি পর্দায় ফিরে এলো ডকুড্রামা ‘হাসিনা

        এশিয়ার ফুটবলে নতুন করে বর্ষপঞ্জি সাজিয়েছে এএফসি

        যারা একবেলা খেতে পারতো না, তারা এখন চারবেলা খায়ঃ শেখ হাসিনা

        এশিয়ার ফুটবলে নতুন করে বর্ষপঞ্জি সাজিয়েছে এএফসি

        দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর

        ১০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে ব্রিটেন

        সহজেই কিছু ফেসপ্যাক বানানোর টিপস

        অন্ততপক্ষে ২০ এমবিপিএসেক আমরা সর্বনিম্ন ব্রডব্যান্ড হিসেবে ঘোষণা করবঃ পলক

        সবজির বাজারে লাফিয়ে বাড়লো কাঁচা মরিচের দাম

        ঝুঁকি বিবেচনায় এআই আইন করা হবে

        গুগল ট্রান্সলেটরে মুখের কথা অন্য ভাষায় অনুবাদ করার পদ্ধতি

        বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ তাই দুই মাস পর পর ঋতু পরিবর্তন

        বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ তাই দুই মাস পর পর ঋতু পরিবর্তন

        বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রহস্যজনক নিষ্ক্রিয়তায় ছাত্রলীগ হলগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ

        বাংলাদেশে আসতে চলেছেণ তুর্কি সুপারস্টার অভিনেতা বুরাক ঔজচিভিত

        পিরামিড তৈরির রহস্য সমাধানের আশা গবেষকদের

        সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ঋষি সুনাকের

        সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ঋষি সুনাকের

        ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি

        ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি

সালমানের নতুন চমক, রাজকন্যার নেতৃত্বে ফ্যাশন জগতে সৌদি নারীরা

সালমানের নতুন চমক, রাজকন্যার নেতৃত্বে ফ্যাশন জগতে সৌদি নারীরা

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এএফপি ফাইল ছবিসৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এএফপি ফাইল ছবিচমক দেখিয়েই চলেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নিযুক্ত হওয়ার পর তাঁর সংস্কারের হাওয়া লেগেছে দেশটির প্রায় সব দিকে। সেই হাওয়ায় রক্ষণশীল সমাজের দেশটিতে নারীরা নানা ক্ষেত্রে অনেক কিছুতেই প্রথমবারের মতো অধিকার পাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ফ্যাশন জগতেও পা রাখলেন সৌদি নারীরা—তাও আবার এক রাজকন্যার নেতৃত্বে!

এই সৌদি রাজকন্যা হলেন নওরা বিনতে ফয়সাল আল সৌদ। ৩০ বছর বয়সী রাজকন্যা নওরা গত ডিসেম্বরে আরব ফ্যাশন কাউন্সিলের অনারারি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। এরপর গত মাসে সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো ‘আরব ফ্যাশন উইক’ আয়োজন করা হয়। সেই আয়োজনে ভালোভাবেই যুক্ত ছিলেন রাজকন্যা নওরা।

সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আবদুলআজিজ আল সৌদ রাজকন্যা নওরার প্রপিতামহ (দাদার বাবা)। নওরা জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। জাপানে ফ্যাশন সম্পর্কে ভালোই ধারণা পান তিনি। সম্ভবত এ কারণে তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে সৌদি নারীদের ফ্যাশনের ব্যাটন।

আয়োজনের সঙ্গে রাজকন্যা নওরা জড়িত থাকলেও নানা কারণে ‘আরব ফ্যাশন উইক’ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দুই সপ্তাহ দেরিতে। সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো এই আয়োজন বলে অনেকের নজর ছিল এই ফ্যাশনের দিকে। কিন্তু এই আয়োজন প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত ছিল। শুধু আমন্ত্রিত নারীরাই সেখানে উপস্থিত থাকতে পেরেছিলেন। অনুষ্ঠানে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। আরব ফ্যাশন কাউন্সিল অবশ্য ওই অনুষ্ঠানের ছবি তুলেছে। সৌদি আরবের বিনোদন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে ওই অনুষ্ঠানের কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

‘সংরক্ষিত এই আয়োজন’ নিয়ে রাজকন্যা নওরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এমন আয়োজনে প্রবেশাধিকার সীমিত করার বিষয়টি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। যে নারীরা এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন, তাঁরা যেন এটা ভেবে উদ্বিগ্ন না হন যে কেউ তাঁর ছবি তুলছে।’ নওরা বলেন, ‘আমরা চেয়েছি উপস্থিত নারীরা দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই অনুষ্ঠান উপভোগ করুক।’ সার্বিক বিষয়ে রাজকন্যা নওরা বলেন, ‘সৌদি আরবের নারী হিসেবে এই সংস্কৃতি ও ধর্মের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ আছে। পোশাকের কারণে কেউ আমাদের রক্ষণশীল ভাবতে পারে...কিন্তু এটাই আমাদের সংস্কৃতির অংশ।’

যত সংরক্ষিতভাবে এই আয়োজন হোক না কেন, প্রথমবারের মতো ফ্যাশন উইকের আয়োজন করে সৌদি আরব যে মাইলফলক ছুঁয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যে দেশের নারীরা কয়েক বছর আগেও গাড়ি চালানোর অনুমতি, ফুটবল মাঠে বসে খেলা দেখা কিংবা সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারগুলো কল্পনাই করতে পারতেন না, তাঁদের ফ্যাশন জগতে যুক্ত হওয়া তো ছিল দূর আকাশের কল্পনার মতো।

বলা হচ্ছে, এগুলো সম্ভব হচ্ছে ৩২ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেওয়া সংস্কারের উদ্যোগে। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ গত বছরের জুনে তাঁর ভাতিজা মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে দিয়ে ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে উত্তরসূরি নিযুক্ত করেন। শুধু তাই নয়—যুবরাজকে উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও দেওয়া হয়। এরপর থেকে দেশটিতে বইতে শুরু করে সংস্কারের হাওয়া। অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির পাশাপাশি নারীদের অধিকারের বিষয়ে উদ্যোগ নেন তিনি। এই উদ্যোগে সেপ্টেম্বরে নারীরা গাড়ি চালানোর অধিকার পান, যা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হবে আগামী মাস থেকে। একই মাসে নারীদেরও ফতোয়া জারির অধিকার এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মোবাইল ব্যবহারের অধিকার দেওয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া ও ফ্যাশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ারও অনুমতি মিলল সৌদি নারীদের। যুবরাজ সালমান নারীদের আরও স্বাধীনতা দিতে কাজ করার আভাস দিয়েছেন। তিনি ইঙ্গিত দেন, অদূর ভবিষ্যতে সৌদি নারীদের আর মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে চলতে হবে না।সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব ফ্যাশন উইকের ফ্যাশন শো-তে দুই মডেল।সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব ফ্যাশন উইকের ফ্যাশন শো-তে দুই মডেল। তবে গত কয়েক সপ্তাহের নারী অধিকার কর্মীদের আটক করায় প্রশ্ন উঠেছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ আসলে নারীদের অধিকার দেওয়ার বিষয়ে কতটা আন্তরিক? এ বিষয়ে কোনো কোনো বিশ্লেষকের মত হলো, এটা করা হচ্ছে আসলে রাজপ্রাসাদ থেকে সবাইকে একটা বার্তা দেওয়ার জন্য। সেই বার্তা হলো নারীদের অধিকারসহ সামাজিক নানা বিষয়ে কিছুটা উদার হলেও, সৌদি নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার সংকুচিতই থাকবে।

যুগ যুগ ধরে রক্ষণশীল সমাজের আদলে চলতে থাকা সৌদি আরবে নারীদের এত অধিকার দেওয়ার কাজটা যুবরাজ সালমান খুব সহজে করতে পারছেন বলে মনে হয় না। শুধু নারী অধিকারের ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনীতি-পররাষ্ট্রনীতি ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান নিয়ে যুবরাজের নেওয়া পদক্ষেপে যে অনেকে ক্ষুব্ধ, তা এর মধ্যেই প্রকাশও পেয়েছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে বেশ কয়েকজন রাজপুত্র ও অনেক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে আটক করে একটি পক্ষকে ‘শত্রু’ বানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি খবর প্রকাশ হয়, সৌদি রাজপ্রাসাদে এক অভ্যুত্থানে যুবরাজ সালমান নিহত হয়েছেন। পরে সৌদি কর্তৃপক্ষ ছবি প্রকাশ করে ওই খবর নাকচ করে দেয়। তবে এ কথা স্বীকার করে যে, রাজপ্রাসাদের কাছে একটি ড্রোন এসেছিল, সেটা গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।

শুরু থেকেই সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে নানা ধরনের চাপ বজায় রয়েছে যুবরাজ সালমানের ওপর। তিনি তাঁর লক্ষ্যে কতটা সফল হতে পারবেন, তা সময়ই বলে দেবে। তবে তাঁর এই সংস্কারের পথ যে বন্ধুর, তা নিশ্চিত করে বলা যায়।

এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত