আপডেট :

        বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি যুবক নিহত

        অ্যাস্ট্রাজেনেকা বৈশ্বিকভাবে নিজেদের সব করোনা টিকা তুলে নেওয়ার ঘোষণা

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু

        আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট উপলক্ষে ১৪১টি উপজেলায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে

        ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি মুজিবুল হক চুন্নুর

        ভুড়িভোজের আয়োজন, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

        যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এক সেনা সার্জেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়া

        জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্র, দুই ইউক্রেনীয় কর্নেল আটক

        দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুতল ভবনধস, এখনো নিখোঁজ ৪৮

        ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করলে কারাদণ্ড হতে পারে ট্রাম্পের বিচারক

        পুলিৎজার পেল রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট

        ছয় বছরের রাষ্ট্রপতির মেয়াদের জন্য পঞ্চমবারের মতো শপথ নিয়েছেন পুতিন

        গাজা থেকে মিসরে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ

        মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেন ভারতীয়রা

        হাসপাতালেই স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করলেন এক ব্যক্তি

        হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল

        কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপ

        নিরপেক্ষভাবে সেবা প্রদানের জন্য নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন আইজিপি

        দেশের পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ে পূর্বাঞ্চলে রেল দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে

নিউ ইয়র্কে একাত্তরের গল্প শোনালেন মার্কিন সাংবাদিক লেভিন লেয়ার

নিউ ইয়র্কে একাত্তরের গল্প শোনালেন মার্কিন সাংবাদিক লেভিন লেয়ার

উনিশ’শ একাত্তরের যুদ্ধকালীন সময়ে
বাংলাদেশের ভয়াবহ ঘটনা বর্ণনা করতে
গিয়ে আবেগাপ্লুত হলেন বাংলাদেশের
অকৃতিম বন্ধু মার্কিন সাংবাদিক লেভিন লেয়ার।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কনসুলেট
জেনারেল ভবনে মহান বিজয় দিবসের এক
জমকালো অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির
ভাষনে যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশে তাঁর
কর্ম অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি রোমন্থন করতে
গিয়ে নিজে এবং সকলকে আবেগাপ্লুত
করে তোলেন। বাংলাদেশ কনসুলেট
জেনারেল আয়োজিত এ বিজয় উৎসবে
নানা শ্রেনী পেশার প্রবাসী
বাংলাদেশিদের সমাগম ঘটে।
বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেলের হেড
অব চ্যান্সারি চৌধুরী সুলতানা পারভিনের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের এ
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত
পরিবেশন করেন কনসুলেট পরিবারের
সদস্যরা। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের
প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন
করা হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন কনসাল
জেনারেল শামীম আহসান এনডিসি। তাঁর
আমন্ত্রনে এবারের প্রবাসীদের ব্যাপক
সাড়া ও প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। দলমত
নির্বিশেষে নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন
শ্রেনীপেশার মানুষ বাংলাদেশ কনসুলেট
জেনারেল ভবনে উপস্থিত হয়ে বিজয়ের
আনন্দ উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ
বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান
সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার ভূমিকা বিশ্ব নেতৃবৃন্দদের কাছে
গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে বলেই তিনি
বারবার পুরুস্কৃত হচ্ছেন। এ কারনেই
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে
লিপ্ত রয়েছেন একাত্তরের পরাজিত
অপশক্তি। ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এই অপশক্তি
উৎখাতে প্রবাসীদেরকেও এগিয়ে
আসতে হবে। তাহলেই সোনার বাংলা গড়ার
স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক
শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের
পাশাপাশি বিশ্বে ব্যাপক সুনাম অর্জন
করেছে বাংলাদেশ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন
লক্ষ্যসমূহ অর্জনে টেকসই উন্নয়ন
লক্ষ্য অর্জনেও বাংলাদেশ বিশ্বে
নেতৃত্ব দেবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের
উন্নয়নে প্রবাসীদের যথেষ্ট অবদান
রয়েছে। পদ্মাসেতুর নির্মাণ ছিল
বাংলাদেশর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর
নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। সেতুর নির্মাণ
কাজ শেষ হলে বাংলাদেশ আরও অনেকদূর
এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
এ ধরনের বহুমুখী সাফল্যে দেখে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তাকে পুরস্কৃত
করেছেন। অতি সাম্প্রতি তিনি জাতিসংঘের
সাধারন অধিবেশনে যোগ দিতে এসে
চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরুস্কার গ্রহন
করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন
এবং জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন
পুরোপুরি বাস্তবায়নে সকল প্রবাসী
বাঙালিকে আরো অবদান রাখার আহ্বান জানান
তিনি।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের অকৃতিম বন্ধু
মার্কিন সাংবাদিক লেভিন লেয়ার বলেন,
বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ দুর্দশা আমি
নিজের চোখে দেখেছি। যুদ্ধকালীন
ও পরবর্তী সময় বাংলাদেশের মানুষ কত
কষ্ট করেছে তা দেখার ও জানার সৌভাগ্য
হয়েছে আমার। যুদ্ধাকালীন সময়ে আমি
বাংলাদেশে সাংবাদিকতার কাজ করেছি। সে
কারনের অনেক ঘটনাই স্বচক্ষে
দেখেছি। বাংলাদেশ সম্পর্কে আমার
যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে স্বাধীনতার
জন্য মানুষের কত রক্ত ঝরেছে। এর
জন্য আমি নিজেও অনুতপ্ত বোধ করি।
এসব স্মৃতি বর্ণনা করতে গেলেই আমি
আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। পরবর্তীতে তিনি
চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও ক্যাথেরিন
মাসুদের সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ নামক একটি
ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল, যদিও
ছবিটি মুক্তি পায়নি।
কনসাল জেনারেল শামীম আহসান এনডিসি
তার বক্তব্যে বলেন, যাঁদের
আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের অর্জিত এ
বিজয় সেইসব বীর শহীদদের কাছে
আমরা চিরকৃতজ্ঞ। বাঙালি জাতি হিসেবে মহান
মুক্তিযুদ্ধের ৪৫তম বিজয় দিবস পালন করতে
পেরে আমরা গর্ববোধ করছি।
তিনি বলেন, নিউ ইয়র্কের পার্শ্ববর্তী
অঙ্গরাজ্য নিউ জার্সির প্যাটারসন শহরের সিটি
মেয়র হোজে টোয়েসের ব্যক্তিগত
উদ্যোগে সিটি হলের সামনে গত সাতদিন
ধরে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়ছে।
তাঁর এ উদ্যোগের জন্য তিনি প্যাটারসন সিটি
মেয়র হোজে টোয়েসকে
আন্তঅরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও বাংলাদেশ
কনসুলেট জেনারেল আয়োজিত বিজয়
উৎসবে আগত সকল অতিথি, শিল্পী ও
কলাকুশলীদেরকেও তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ
জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পৃথক
দু’গ্রুপের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.
আব্দুল বাতেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা
আব্দুল মুকিত চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী
লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান,
ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ,
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক
আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, বাংলাদেশের
অকৃতিম বন্ধু লেভিন লেয়ার, শিক্ষাবিদ ও
সমাজসেবী নাঈমা খান ও শহীদ পরিবারের
সন্তান সাংবাদিক ফাহিম রেজা নুর প্রমুখ বক্তৃতা
করেন। এছাড়াও নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের
প্যাটারসন সিটি মেয়র হোজে
টোয়েসের পাঠানো বাণী পড়ে
শোনান স্থানীয় কমিউনিটি আক্টিভিষ্ট
দেওয়ান বজলু। আশরাফুল হাসান বুলবুলের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে এক
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত
পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার
কেন্দ্রের দুই শিল্পী কাদেরি কিবরিয়া ও
শহীদ হাসান। তাঁদের পরিবেশনায় উপস্থিত
দর্শকশ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে উঠেন।
অন্য শিল্পীদের মধ্যে গান করেন শফি
চৌধুরী, শাহ মাহবুব, কৌশলী ইমা, সবিতা দাস,
রওশন হাসান ও ডা. শাহনাজ আলম। কয়েকটি
দেশাত্ববোধক সঙ্গীতে অংশ নেন
কসসুলেট পরিবারের সদস্য যথাক্রমে
শামীম আহসান, পেন্ডোরা চৌধুরী,
শাহেদুল ইসলাম, তাসনিম এ জিন্নাত, চৌধুরী
সুলতানা পারভিন, সৈয়দা জেসমিন সুলতানা
মিল্কী, চন্দন সাহা, সর্বানী সাহা, শেখ
তারেক আলী, মনির হোসেন, শামীমা
সুলতানা তম্বী, রফিকুল ইসলাম, কবির
হোসেন, আসিব আহমেদ ও সোহেল
গাজী। কোরাস গানে শিল্পীদের
সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ পারফর্মিং
আর্টসের কর্ণধার ও সঙ্গীতশিল্পী
সেলিমা আশরাফ। শিল্পীদের তবলায় সঙ্গত
করেন পিনাক গোস্বামী ও
কীবোর্ডে সহযোগিতা করেন মাসুদুর
রহমান।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন শামীমা
সুলতানা তন্বী, সোহেল গাজী ও ছোট
শিশু তাহমিদ আল হাসান। নৃত্য পরিবেশন
করেন বাফার শিল্পী নিশু ও মৃদুলা।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত