ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত ও হেফাজত আমিরের বৈঠক: শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি
বাঁধ নির্মাণে জরিপ শুরু
চলতি বোরো মৌসুমে সিলেট বিভাগের চার জেলা সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজারের ‘হাওর রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণে জরিপকাজ শুরু হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জরিপকাজ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। একই সময়ের মধ্যে প্রকল্প নির্ধারণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের কাজও শেষ করার কথা। আগামী ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু ও ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাধ নির্মাণকাজ শেষ হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওরে এই বাঁধ নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে প্রকল্প প্রণয়ন ও ব্যয় নির্ধারণের জন্য জরিপ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার জানান, গত ৬ নভেম্বর থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ১২টি উপজেলায় ২৬টি দল কাজ করছে। তিনি জানান, এবার প্রাথমিক পর্যায়ে বাঁধ নির্মাণকাজের জন্য চার জেলার জন্য ১০৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিলেটে ৩ কোটি ৮৩ লাখ, হবিগঞ্জে ৪ কোটি ২২ লাখ, মৌলভীবাজারে ৬৮ লাখ ও সুনামগঞ্জে ৯৫ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
সিলেট বিভাগে প্রতি বোরো মৌসুমে প্রায় ৫ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়ে থাকে। এবার ৪ লাখ ৯২ হাজার ৯৭০ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে। উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা ২০ লাখ টন চাল।
২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার সমুদয় ধান তলিয়ে গেলে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়। এরপর ঠিকাদারি প্রথা বাদ দিয়ে পিআইসি (প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টশন কমিটি) প্রণয়ন করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন ও তদারকিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও জেলার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে (পওর বিভাগ-১) সদস্য সচিব করে জেলা কমিটি এবং প্রতিটি উপজেলায় ইউএনও সভাপতি ও পাউবোর উপজেলা পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, অনেক বছর পিআইসি গঠনে দেরি হয়। তাই কাজ শুরু করতেও দেরি হয়। এতে অনেক সময় বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। শেষে তাড়াহুড়ো করে প্রকল্প শেষ করতে যেয়ে বাঁধের কাজ ঝুঁকিতে পড়ে। অনেক সময় হাওরে জলাবদ্ধতার দরুন কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়।
‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের নেতারা বলছেন, হাওরে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়। তারা দ্রুত পিআইসি গঠন করে সময় মতো কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মকসুদ চৌধুরী বলেন, বাঁধ নির্মাণকাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এ বিষয়ে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, এবার অপ্রয়োজনীয় বাঁধ হবে না।
বোরো প্রধান সুনামগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি বোরো চাষ হয়। গত বার সুনামগঞ্জ জেলায় ৭৪৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজে মোট প্রকল্প ছিল ১ হাজার ৬৪টি। এতে প্রাক্কলন ধরা হয়েছিল ২০৩ কোটি টাকা। তবে কাজের শেষে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত বিল ধরা হয় ১৫৫ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত পিআইসিদের বিল দেওয়া হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। এখনো গত বছরের কাজের ২২ কোটি টাকা বিল বকেয়া আছে। পাউবো কর্মকর্তা বলছেন, অর্থ ছাড় হলেই বকেয়া বিল পাবে পিআইসিগুলো।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন