আপডেট :

        ডিজাব’র নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক

        দেশের শাসন কাঠামোর সব জায়গায় শ্রমিকদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার দাবি

        সাঁথিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের কারাদণ্ড

        সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন

        ঘুমের যত্নে প্রাকৃতিক উপায়

        গাড়িতে অযাচিত স্টিকার ব্যবহার

        অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

        উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যার সম্ভাবনা

        বর্তমান সরকার শ্রমিকদের জন্য যা করেছে, অন্য কেউ করেনি

        ২ ভাইকে পিটিয়ে হত্যা: জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি

        ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারও নাই, আমারও নাই

        মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তারের কারন জানা গেলো

        সেচের অভাবে মরছে ২৪২ বিঘা ধান

        তীব্র গরমে ছাতা, ক্যাপ, বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার স্যালাইন বিতরণ করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ

        তীব্র গরম উপেক্ষা করে বিএনপির সমাবেশ

        যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী এবং ইসরায়েলি প্রতিরোধকারীদের সংঘর্ষ

        কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের একটি একাডেমিক ভবনে আটকে থাকা ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার

        মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ

        হাসপাতালে খালেদা জিয়া

        শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের

ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনঃ

ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনঃ

শুধু শাহবাগে নয়, প্রতিটি পরিবারে, পাড়ায়, মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন ধর্ষণ বিরোধী। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে জলাশয়- কোথায় হচ্ছে না ধর্ষণ? পাঁচ বছরের শিশু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, কেউই এসব জানোয়ারদের ছোবল থেকে বাঁচতে পারছে না। কিছু দিন আগে মেয়ের ধর্ষণের বিচার না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন একজন বাবা। আর বাকিরা যারা বেঁচে আছে, তারা না মরে বেঁচে আছে ঠিক যেমনটি বেঁচে আছে তনুর মতো কন্যাদের বাবারা ।
আমাদের অন্যায্য পুরুষ শাষিত সমাজে ধর্ষকরা নন্দিত, ধর্ষিতারা নিন্দিত। ধর্ষনের সমস্ত দায়ভার, সমস্ত লজ্জ্বা, সমস্ত অপমান আর উপহাসের ভারী পাহাড় সমাজ তুলে দেয় নারীর উপর, আর পশুর ন্যায় ধর্ষক পুরুষরা পৈশাচিক অত্যাচার করেও তাদের ক্ষমতা, উপর তালার মানুষদের সহযোগিতা আর অর্থের বলে পার পেয়ে যায় তাদের অপরাধ থেকে। সমাজে লজ্জিত, লাঞ্ছিত হয় ধর্ষিতা নারী, অত্যাচারিত হয়েও মুখ ঢেকে চলতে হয় সমাজের উপহাস এড়াতে- কারণ কলঙ্ক শুধু নারীর জন্য, পুরুষের জন্য নয়। সমাজের এই কলঙ্কজনক পরিস্থিতির মোকাবেলা সম্মিলিতভাবে না করা পর্যন্ত সমাজে, দেশে এসব অত্যাচার চলতে থাকবেই। সামাজিক অবহেলায় তিল তিল করে মরে যাওয়া ধর্ষিতা্দের অভিশাপগ্রস্ত দেশটির নাম বাংলাদেশ। মাঝে মাঝে ভয় হয়, ধর্ষকের অভয়ারণ্য কি হয়ে যাচ্ছে আমার আপনার প্রিয় বাংলাদেশ !
যারা আমাদের চারপাশের সমাজকে নারীর বসবাসের অযোগ্য করে যাচ্ছে, মানুষ নামের সেই সব হিংস্র পশুদের আর ছাড় দেবেন না- এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞ। প্রতিটি মানুষ মেরুদন্ড সোজা করে এদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান, যারা ভাবে ধর্ষণ করার লাইসেন্স তাদেরকে বিত্তবান পিতা বা বিচারহীন সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্র তাদেরকে দিয়েছে। যেহেতু রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা চোখে ঠুলি আর মুখে কুলুপ দিয়ে বসে আছে তাই আমাদের সন্তানের দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে ।
ধর্ষণ প্রতিটি নারীর মেধা, বল, আশা, স্বপ্ন, লক্ষ্য, ও সম্ভ্রমকে ধূলায় মিশিয়ে দেয়। ধর্ষিতা মায়ের সন্তানের বেদনা, ধর্ষিতা বোনের ভাইয়ের কষ্ট, ধর্ষিতা কন্যার পিতার শোক, নারীর সর্বস্ব হারানো অপরিমেয় মরম-জ্বালা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন । বর্বর ধর্ষকদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলাতেই হবে।
গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের পার্টিতে নিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের এই মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ দেশের শীর্ষস্থানীয় অলঙ্কারের ব্র্যান্ড ‘আপন জুয়েলার্স’র মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে। নারীর সম্মানে যারা হাত দিয়েছে তাদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে আসুন প্রতিজ্ঞা করি কোনো নারী আর নিজেকে সাজাবে না “আপন জুয়েলার্স' অলঙ্কারে”- যদি সেই অলংকার বিনামূল্যেও হয় , তবুও না।ঠিক তেমনি ভাবে ধর্ষক ও ধর্ষক পরিবারকেও সামাজিকভাবে প্রত্যাখ্যান করুন| পৃথিবীর যেই প্রান্তেই তারা পালাক না কেন তাঁদেরকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করুন|
আমরা যদি একটু পিছনের দিকে দেখি একটা সময় নারীর প্রতি “এসিড সন্ত্রাস” একটা মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছিল| তথ্য উপাত্ত অনুসারে বাংলাদেশে প্রথম এসিড সন্ত্রাস ঘটনা ঘটে ১৯৬৭ সালে। এর পর আবার এসিড সন্ত্রাস আলোচনায় আসে ১৯৯৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরে শামিমার নামক এক ১৪ বছর বয়সীর প্রতি এসিড নিক্ষেপ করায়। এসিড সারভাইভাল ফাউন্ডেশনের হিসাবে ১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ৩ হাজারেরও বেশি এসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০০২ সাল। ওই বছর ৫০০টি এসিড হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই হামলার ঘটনা কমতে থাকে। ২০১১ সালে ৯১টি ও ২০১২ সালে ৭১টি হামলা হয়েছে। ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার এসিড সন্ত্রাস দমনে কঠোর আইন প্রণয়ন করে। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের পাশাপাশি এসিডের ব্যবহার, মজুত ও বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এসিড নিক্ষেপকারীর জামিন নামঞ্জুর ও এক বছরের মধ্যে তাদের বিচার শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়, আগে যেখানে বছরের পর বছর লেগে যেত। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি দেয়ায় বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী এসিড ছোড়ার শাস্তি হিসেবে রয়েছে সর্বনিন্ম ৭-১২বছরের জেল বা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এই পরিসংখ্যানে দেখলে বুঝা যায় বাংলাদেশের এসিড নিক্ষেপের ঘটনা যেভাবে কঠোর হাতে দমন করা হয়েছ দেরিতে হলেও, তাহলে ধর্ষনের ক্ষেত্রে কেন হচ্ছে না ? নাকি আরো কিছু নারীর অভিশাপে অভিশপ্ত হতে হবে আমাদের? আমি এটাও স্বীকার করছি, আইন বিদ্যমান থাকলেও অনেক সময় আইনের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ না করার কারনে এসিড নিক্ষেপকারী দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। তার পরেও এসিড সন্ত্রাস শূন্যের কোঠাতে না নামলে ও অনেক মাত্রায় নিবারণ করা হয়েছে । যে হারে ধর্ষনের মাত্রা বাড়ছে এটা একটা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে । নারীকে ঘরে বসিয়ে রাখলে বা ছালার বস্তা পড়িয়ে রাখলেও যারা শকুন তাদের চোখ ঠিক খুঁজে বের করবেই। এদের প্রতিহত করতে পারে শুধু মাত্র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে । এই সব ধর্ষিতারা আমার আপনার সন্তান নয়, কিন্তু তাতে কি? কাল যে এই বিষাক্ত সাপের ছোবল থেকে আপনার সন্তানকে বাঁচাতে পারবেন তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? এবার যদি এই বিত্তশালী পিতার কুপুত্ররা রেহাই পেয়ে যায়, তবে বলবো সামনের দিন আরো ভয়াভয়! তাই আর দেরি নয়, আসুন আমাদের সমাজের নারীদের সম্মান, তাদের স্বপ্নের সূর্য্য স্নাত দিন আর চন্দ্রিমার আলোয় স্নাত নিরাপদ রাত আমরা ফিরিয়ে আনবোই।
ধন্যবাদ সমস্ত সংবাদ মাধ্যম কে/সংবাদ কর্মীকে যারা ধর্ষিতার ছবি প্রকাশ করেননি ।

ভার্জিনিয়া

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত