বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো পাস হলো জাতীয় পর্যায়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি আইন
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো একটি বড় ধরনের জাতীয় ক্রিপ্টোকারেন্সি আইন পাস হয়েছে, যা দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বহু বছর ধরে নিয়মনীতি চেয়ে লবিং করে আসা এই শিল্প এখন একটি স্বীকৃত কাঠামোর মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
‘জিনিয়াস অ্যাক্ট’ নামে পরিচিত এই বিলটি মূলত স্থিতিশীল মুদ্রা (Stablecoin) বিষয়ক নিয়মনীতি নির্ধারণ করে। স্থিতিশীল মুদ্রা হলো এমন একধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি, যা মার্কিন ডলারের মতো নিরাপদ ও স্থিতিশীল সম্পদ দ্বারা সমর্থিত।
এই বিলটি ট্রাম্প-সমর্থিত তিনটি ক্রিপ্টো বিলের একটি এবং তিনি শুক্রবার আইনটিতে স্বাক্ষর করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিলটি বৃহস্পতিবার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস হয় এবং গত মাসে এটি সিনেটেও অনুমোদিত হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সময় ক্রিপ্টোকে "প্রতারণা" বলে আখ্যা দিলেও, এখন তিনি এই খাতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি World Liberty Financial-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন এবং তাঁর পরিবার নিজস্ব ক্রিপ্টো কয়েনও প্রচার করেছে।
আইনটির পক্ষে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করবে এবং খাতটির জন্য স্পষ্ট নিয়ম প্রতিষ্ঠা করবে। এই আইনের অধীনে, প্রতিটি স্থিতিশীল মুদ্রা এক-এক করে মার্কিন ডলার বা অন্যান্য ঝুঁকিমুক্ত সম্পদ দিয়ে সমর্থিত হতে হবে।
তবে সমালোচকরা মনে করছেন, আইনটি ভোক্তাদের জন্য যথেষ্ট সুরক্ষা প্রদান না করেই স্থিতিশীল মুদ্রাকে বৈধতা দিচ্ছে, যা আর্থিক ব্যবস্থার জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাঁরা বলেন, এটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংক-সদৃশ কার্যক্রম চালাতে দেবে, অথচ তাদের ওপর ব্যাংক-মানের নজরদারি থাকবে না।
এছাড়া বিরোধীরা যুক্তি দিয়েছে, এই বিলের পক্ষে ভোট দেওয়া মানে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করা। তবে রিপাবলিকানদের বড় একটি অংশ এবং অর্ধেকেরও বেশি ডেমোক্র্যাট সদস্য বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এপ্রিলে কংগ্রেসে পাঠানো এক চিঠিতে বেশ কিছু ভোক্তা ও অধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছিল, "এই বিলটি পাস হলে জনগণ এমন সম্পদকে নিরাপদ মনে করবে যা আসলে ঝুঁকিপূর্ণ।"
বাকি দুটি বিল এখন সিনেটের সামনে রয়েছে—একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা চালু বন্ধ করবে এবং অন্যটি ক্রিপ্টোকারেন্সির আরও বিস্তৃত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নির্ধারণ করবে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা ব্যক্তিগত বিনিয়োগ যেমন ক্রিপ্টো, স্বর্ণ ও প্রাইভেট ইক্যুইটিতে অবসর তহবিল বিনিয়োগের সুযোগ দিতে পারে।
অন্যদিকে, বিটকয়েনের দাম নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে—$১,২০,০০০ মার্কিন ডলার।
তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান পাঙ্গেয়া পলিসির টেরি হেইনস বলেন, “ক্রিপ্টোর আসল জয় এখানেই শেষ। স্থিতিশীল মুদ্রার মতো অপেক্ষাকৃত সহজ একটি বিষয় নিয়েও আইন পাস করতে ৪–৫ বছর লেগে গেল—এটা কোনো বড় সাফল্য নয়।”
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন