আনাহাইমে কার ওয়াশ ও হোম ডিপোতে অভিবাসন অভিযান, আটক একাধিক ব্যক্তি
ট্রাম্প-রাশিয়া তদন্ত: গ্র্যান্ড জুরি শুনানির নির্দেশ দিলেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ভূমিকা তদন্তে গ্র্যান্ড জুরি শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন।
BBC-এর অংশীদার CBS News জানিয়েছে, প্রসিকিউটররা এখন সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে গঠিত একটি গ্র্যান্ড জুরির কাছে তথ্য প্রমাণ পেশ করবেন। এই গ্র্যান্ড জুরি সিদ্ধান্ত নেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করা হবে কিনা।
তবে এখনো স্পষ্ট নয় কার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হতে পারে বা ঠিক কী ধরনের অভিযোগ তোলা হবে।
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি বরাবরই “রাশিয়াগেট” অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের smear campaign বলে দাবি করে আসছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা দল “বহুবছরের ষড়যন্ত্র” করে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা চালিয়েছেন।
তাঁর দাবি, ওবামা প্রশাসন রাশিয়ার নির্বাচনী হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে ট্রাম্পকে রাশিয়ার সঙ্গে জড়িত দেখানোর চেষ্টা করে।
এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প ওবামাকে "রাষ্ট্রদ্রোহের" অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। ওবামার একজন মুখপাত্র এই দাবিকে “বিজার” বা “উদ্ভট” বলে অভিহিত করেন।
ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্যাবার্ডের বক্তব্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের সারবত্তা নাকচ করার মতো কিছু নেই। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, রাশিয়া হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এবং ট্রাম্পকে সাহায্য করতে চেয়েছিল।
২০২০ সালে সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির এক দ্বিদলীয় রিপোর্টেও বলা হয়, রাশিয়া ট্রাম্পের প্রচারণাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিল।
গত মাসে Fox News জানায়, সাবেক CIA পরিচালক জন ব্রেনান ও সাবেক FBI পরিচালক জেমস কমিকে ট্রাম্প-রাশিয়া তদন্ত সংশ্লিষ্ট ফৌজদারি তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। যদিও তারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারব্যবস্থা অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।
ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্সির অর্ধেক সময়জুড়েই চলেছে তাঁর নিজস্ব বিচার বিভাগ পরিচালিত তদন্ত, যাতে যাচাই করা হচ্ছিল তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করতে রাশিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন কিনা।
ফলাফলের ভিত্তিতে প্রকাশিত মুলার রিপোর্টে ট্রাম্প বা তাঁর প্রচারণা দলের রাশিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং কাউকে এ সংক্রান্ত অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি।
এই “রাশিয়াগেট” বিতর্ক আবারও সামনে চলে আসে যখন বিচার বিভাগ পরিচালিত আরেকটি তদন্তের সংযুক্ত পরিপূরক অংশ প্রকাশ করা হয়।
John Durham-এর নেতৃত্বাধীন ওই বিশেষ কৌঁসুলির তদন্তের ২৯ পৃষ্ঠার অ্যাপেনডিক্সে বলা হয়, ২০১৬ সালের মার্চে একটি ইউএস ইন্টেলিজেন্স মেমোতে দাবি করা হয়, হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পকে রুশ চর হিসেবে তুলে ধরার একটি smear campaign অনুমোদন দিয়েছিলেন।
একটি ইমেইলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যা রুশ গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট হ্যাকাররা জনৈক এনজিও কর্মীর কাছ থেকে পেতে পারে বলে আশঙ্কা। এটি Open Society Foundations-এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লিওনার্ড বেনার্ডোর বলে মনে করা হয়।
২০১৬ সালের ২৬ জুলাই তারিখের ওই ইমেইলে লেখা, “জুলি বলেছে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রচার, যার লক্ষ্য পুতিন ও ট্রাম্পকে বদনাম করা। এখন এটি কনভেনশন পরবর্তী সাড়া পাওয়ার জন্য ভালো। পরে FBI আরও আগুনে ঘি ঢালবে।”
যদিও রাজনৈতিক অপপ্রচার আইনত অপরাধ নয়, ট্রাম্পপন্থীরা বলছেন এই ইমেইল প্রমাণ করে যে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন। তবে Durham কোনো প্রমাণ পাননি যে FBI এ ধরনের কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল।
Durham-এর অনুসন্ধানে বেনার্ডো জানান, তাঁর মনে নেই এমন কোনো ইমেইল পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে, যদিও ইমেইলের কিছু অংশ তাঁর বলা ভাষার সঙ্গে মিল রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। একইসঙ্গে, জুলি স্মিথ বলেন, তিনি এমন কোনো ইমেইল স্মরণ করতে পারছেন না।
Durham তাঁর অ্যাপেনডিক্সে এই ইমেইলগুলো আসল নাকি রুশ গোয়েন্দাদের তৈরি করা নকল, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি।
তবে তাঁর মূল ৩০৬ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয়, FBI যে তদন্ত শুরু করেছিল তা “বিশ্লেষণাত্মক গভীরতা থেকে বঞ্চিত ছিল” এবং “কাঁচা, যাচাই না করা ও অসমর্থিত তথ্যের” ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অবশ্য স্বীকার করেছেন যে ২০১৬ সালে রাশিয়া ভোটে হস্তক্ষেপ করেছে — বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া বট ফার্ম ও ডেমোক্র্যাট ইমেইল হ্যাকের মাধ্যমে। তবে তারা মনে করেন, এই হস্তক্ষেপ নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তনে সক্ষম হয়নি।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন