আপডেট :

        ২০০৯ সালের পর সর্বনিম্ন নিয়োগ পরিকল্পনা, চাকরির বাজারে অনিশ্চয়তা

        ইনল্যান্ড এম্পায়ারে আবারও অস্ত্রধারীর খবর, তৃতীয় স্কুলে লকডাউন

        কৃষ্ণাঙ্গ শিশুর ছবি নিয়ে বিতর্কে লং বিচের শিক্ষক বরখাস্ত

        মার্কিন পার্কগুলোতে সতর্কতা: শাটডাউনে ভ্রমণ না করার আহ্বান সংরক্ষণবাদীদের

        শিশু নির্যাতনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত টেক্সাসের খ্যাতনামা পাদ্রী

        ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক আহমদ রফিকের জীবনাবসান

        প্রতিমা বিসর্জন আজ, সিঁদুর খেলে দেবীকে বিদায়

        সিলেটের পর্যটন উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যা

        কাশ্মীরে হিংসাত্মক বিক্ষোভ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮

        বৈশ্বিক ফ্লোটিলা অভিযান: ৪৭ দেশের ৪৪৩ স্বেচ্ছাসেবীর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বেআইনি কার্যক্রম

        “গাজার খুব কাছে চলে এসেছি”—শহিদুল আলমের উদ্বেগজনক বার্তা

        আ.লীগ কর্মী পরিচয়ে এসএমপি কমিশনারকে ফোনে হুমকি, প্রশ্ন: ‘রাস্তায় থাকতে দিচ্ছেন না কেন?’

        মাস দুয়েকের মধ্যে পুনরায় শুরু হচ্ছে সিলেটের পরিত্যক্ত হাসপাতালের কার্যক্রম

        গভীর নিম্নচাপ সত্ত্বেও বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের আশঙ্কা নেই

        ব্যাটারি শেষ হওয়ার সমস্যা? স্মার্টফোন সুরক্ষার উপায়গুলো জানুন

        ডলারের দর ২২ বছরের নীচে, মার্কিন শাটডাউনের চাপ বৃদ্ধি

        দুর্গাপূজার ভোজে বৈচিত্র্যের ছটা, সাত-সতেরো পদে সাজানো পাতে

        সন্তান জন্মদানের প্রসঙ্গ টেনে পুরুষদের নিয়ে মন্তব্য: ‘তাহলেই যুদ্ধহীন হতো দুনিয়া’

        কারো ফোন কলেই কোহলির কাছে গিয়েছে অভিযোগ, জানালেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

        “এই ত্রাণবহর ফিলিস্তিনিদের উপকারে আসবে না”—মেলোনি

ট্রাম্প প্রশাসন পুরনো অভিবাসন মামলা আবার খুলছে, মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ

ট্রাম্প প্রশাসন পুরনো অভিবাসন মামলা আবার খুলছে, মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ

ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহু বছর ধরে বৈধভাবে বসবাস ও কাজ করে আসা হাজারো অভিবাসী ভেবেছিলেন, তাদের মামলা স্থগিত থাকায় তারা বহিষ্কারের ঝুঁকিমুক্ত। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন আবারও এসব পুরনো মামলা খুলে অভিবাসীদের বৈধ মর্যাদা কেড়ে নিচ্ছে এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) ব্যাপক বহিষ্কার কার্যক্রম আরও জোরদার করছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসন আইনজীবীরা দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে জানিয়েছেন, সরকার এমনকি যাচাইও করছে না যে যাদের মামলা পুনরায় খোলা হচ্ছে তারা জীবিত কিনা—আইনি সুরক্ষা পাওয়া তো দূরের কথা।

উদাহরণ হিসেবে, নির্মাণকর্মী হেলারিও রোমেরো আরসিনিয়েগার মামলা একজন অভিবাসন বিচারক আগেই বন্ধ করেছিলেন। তিনি একবার ধাতব স্প্রিংকলার হেড দিয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলেন এবং অপরাধের শিকারদের জন্য বিশেষ ভিসার যোগ্য ছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে সরকার আবারও তার মামলা খুলে দেয়, অথচ এলএ কাউন্টি করোনারের তথ্যমতে তিনি জানুয়ারিতেই মারা গিয়েছিলেন।

অভিবাসন আইনজীবী প্যাট্রিসিয়া কোরালেস বলেন, “তারা তাদের কাজ ঠিকমতো করে না। এভাবে মামলা পুনঃতালিকাভুক্ত করতে গিয়ে তারা মারাত্মক অবহেলা করছে।” কোরালেস, যিনি আগে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাচারালাইজেশন সার্ভিস ও DHS-এ অ্যাটর্নি ছিলেন, জানান এসব পদক্ষেপ আসলে “বয়লারপ্লেট মোশন”—যেখানে DHS আদালতে ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দেয়।

তিনি জানান, DHS গত ১০ জুলাই একটি মোশন দাখিল করেছিল, কিন্তু সেখানে উল্লেখ করা হয়নি তার মক্কেল জীবিত আছেন কিনা, কোথাও সরে গেছেন কিনা, এমনকি মৌলিক তথ্যও যাচাই করা হয়নি।

আরেক ঘটনায়, আদান রিকো—যিনি সদ্য বাবা হয়েছেন এবং HVAC টেকনিশিয়ান হওয়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন—জানতেই পারেননি তার বহিষ্কার মামলা আবার খোলা হয়েছে। তার আগের আইনজীবী মারা গিয়েছিলেন, এবং মেয়ের ফোন কল না পেলে তিনি বিষয়টি জানতেই পারতেন না। রিকো বলেন, “হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কখনোই আমাকে কোনো নোটিশ দেয়নি।”

DHS-এর সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন “আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করছে” এবং বাইডেন প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেন মামলাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করে অপরাধীদের দেশে অবৈধভাবে থাকতে দেওয়ার জন্য।

তবে কোরালেস জানান, রিকো ‘ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস’ (DACA)-এর অধীনে বহিষ্কার সুরক্ষায় আছেন, যা ২০২৭ সালের আগে নবায়নের প্রয়োজন হবে না।

এই বছরের জানুয়ারি থেকে ট্রাম্প প্রশাসন কার্যত ১০ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিল করেছে। এতে এমনকি যারা নিয়ম মেনে আইসিই চেক-ইন, আদালতের শুনানি এবং অভিবাসন দপ্তরের অ্যাপয়েন্টমেন্টে হাজির হচ্ছেন, তারাও সহজে গ্রেফতার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ছেন।

অভিবাসন আদালত ফেডারেল জেলা আদালতের মতো স্বাধীন নয়; এগুলো অ্যাটর্নি জেনারেলের অধীনে পরিচালিত হয়। DHS অনেক ক্ষেত্রে আদালতে গিয়ে মামলাগুলো খারিজের আবেদন করছে, আর বিচারকদের সঙ্গে সঙ্গে তা মঞ্জুর করতে বলা হচ্ছে। এতে অভিবাসীরা বহিষ্কারের আওতায় চলে আসছেন, এবং দেশজুড়ে আদালতকক্ষ থেকে মুখোশধারী আইসিই এজেন্টদের মানুষ ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।

আমেরিকান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেলি স্টাম্প এসব গ্রেফতারকে “আদালতের দুর্নীতি” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “এগুলো বিচার ব্যবস্থাকে ন্যায়বিচারের ফোরাম থেকে গণ-বহিষ্কারের যন্ত্রে পরিণত করছে।”

গত এপ্রিল মাসে ইওআইআরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সিয়ার্স ই. ওউইন বহিষ্কার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখাকে “বাস্তবিক অর্থে সুবিধাসহ সাধারণ ক্ষমা” বলে উল্লেখ করেন। তার তথ্যমতে, এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৩,৭৯,০০০ মামলা অভিবাসন আদালতে প্রশাসনিকভাবে বন্ধ ছিল, যা ইতিমধ্যেই ৪ মিলিয়নের বেশি মামলার জট আরও বাড়িয়েছে।

আইনজীবী এডগার্দো কুইন্টানিলা জানান, তিনি ২০১০-এর দশকের মামলাসহ ৪০টি মামলা পেয়েছেন। “মানুষের সবসময় আশঙ্কা থাকে যে আদালতে গেলে তারা গ্রেফতার হতে পারে, আর বর্তমান পরিস্থিতিতে এ আশঙ্কা যথার্থ,” তিনি বলেন।

অন্য আইনজীবী মারিয়েলা কারাভেত্তা জানান, গত এক মাসে তার প্রায় ৩০ জন মক্কেল নতুন করে সরকারের টার্গেটে পড়েছেন, যাদের মামলা প্রায় এক দশক ধরে স্থগিত ছিল। আইনের নিয়মে তার হাতে জবাব দেওয়ার জন্য মাত্র ১০ দিন সময় থাকে, ফলে স্থান পরিবর্তন করা ক্লায়েন্টদের খুঁজে বের করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

“মানুষ ন্যায্য বিচার পাচ্ছে না,” তিনি বলেন। “এটি খুবই অন্যায্য, কারণ এই মামলাগুলো ১০ বছর ধরে অচল অবস্থায় ছিল।”

এলএবাংলাটাইমস/ওএম

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত