আল্লাহর রহমতে আ.লীগের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সাধারণত রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে অনেক সময় সরকার ধীরে ধীরে মানুষের কাছ থেকে হারিয়ে যায় বা তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে জনগণের আস্থা বিশ্বাস আমরা অর্জন করেছি, জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ’র আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। দলটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের সঞ্চালনায় সভায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রায় সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে অনেক সময় সরকার ধীরে ধীরে মানুষের কাছ থেকে হারিয়ে যায় বা তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে জনগণের আস্থা বিশ্বাস আমরা অর্জন করেছি, জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
জনপ্রিয়তা বাড়ার কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এবারের নির্বাচন, যেটা হয়ে গেলো; যদি নির্বাচনের দিক তাকান দেখবেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। যেটা অতীতে কখনো দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, এবার সব শ্রেণী-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানায়। এমনকি ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, ছাত্র; সবচেয়ে বড় কথা যারা প্রথমবারের ভোটার, নবীন ভোটার সবাই আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার চেয়েছে, তাদের সেবা করার জন্য, মানুষ ভোট দিয়েছে।
আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করতে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে উপদেষ্টা পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ একসাথে বসেছি। সেই সাথে সাথে আমরা আর একটি কাজ করতে চাই, ইতিমধ্যে আমাদের প্রেসিডিয়াম মিটিং করেছি, ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করেছি। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রেসিডিয়াম কার্যকরী সদস্যের নিয়ে আটটি বিভাগে কমিটি গঠন করেছি।’ ‘যে কমিটির দায়িত্ব থাকবে আমাদের সংগঠনগুলো একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে নতুন করে ঢেলে সাজানো। কোথায় কমিটি আছে না আছে সেগুলো দেখা। সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগকে আরও মজবুত করে গড়ে তোলা। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটের ভরাডুবির কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অপরদিকে বিএনপি-জামায়াতের অবস্থান যেহেতু মিলিটারি ডিকটেটর ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় গিয়ে এসব দল গঠন করেছে, খুব স্বাভাবিকভাবে এরা হচ্ছে পরজীবীর মতো। নির্বাচনকে তারা মনে করেছে ব্যবসা। টিকিট বেচে কিছু পয়সা তারা কামাই করে নিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের প্রতি তাদের খুব একটা নজর ছিল না।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয়, আর্ন্তজাতিকভাবে যখন সার্ভে করা হয়েছিল, সেই সার্ভেতে তখন থেকে স্পষ্ট ছিল আওয়ামী লীগকে জনগণ চায়। জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে এবং আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। তারা নির্বাচন করার জন্য একটা নির্বাচন বাণিজ্য করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। যার জন্য তাদের এই হাল।
আওয়ামী লীগ সরকারের সরকার উন্নয়নের কথা তুলে ধরে টানা তিনবার মিলিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতা আসে আওয়ামী লীগ, এরপর ২০০৮ সালে নির্বাচনে আবারো বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করি এবং পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। বাংলাদেশ আজ ক্ষুধামুক্ত, বাংলাদেশ আজ দারিদ্র্যমুক্ত হওয়ার পথে। আমরা প্রায় ৪০ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে দারিদ্র্যের হার নামিয়ে এনেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের ছোঁয়া আজ গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আজ গ্রামের মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হচ্ছে, মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়ছে। এটাই জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল।
১৫ আগস্ট পরবর্তী দুই দফায় ২৯ বছরের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর জাতির জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। এ সময় মানুষের কোনো অগ্রগতি হয়নি। কেবল আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখনই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে। ৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতা আসে আওয়ামী লীগ, এরপর ২০০৮ সালে নির্বাচনে আবারো বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করি এবং পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। বাংলাদেশ আজকে ক্ষুধা মুক্ত, বাংলাদেশ আজকে দারিদ্র মুক্ত হবার পথে। আমরা প্রায় ৪০ ভাগ থেকে ২১ ভাগে দারিদ্রের হার নামিয়ে এনেছি।’
এবারের নববর্ষ সবাই উৎসাহ-উদ্দীপনায় উদযাপন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার ব্যাপকভাবে নববর্ষ উদযাপন হয়েছে। শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবটা করেছে। আমরা কিন্তু নববর্ষ ভাতাও দিচ্ছি। বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন