মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত চায় এইচআরডব্লিউ
বাংলাদেশে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি আব্দুল হান্নানসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা-হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ আন্তর্জাতিক সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা যেকোনো দেশে, যেকোনো পরিস্থিতিতেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে।
বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে হবে বিশেষ করে যখন কারো জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে এবং এখানে কোনো সন্দেহ বা ভুলের সুযোগ থাকতে পারে না।’
২০০৪ সালে সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজারের বাইরে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনোয়ার চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ছাড়া নিহত হয় অন্তত তিনজন।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হরকতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন আসামির রিভিউ আবেদন ১৯ মার্চ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দেন।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে এখন আর মুফতি হান্নানসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে জেল কর্তৃপক্ষের সামনে আর কোনো আইনগত বাধা নেই।’
এখন শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া ডিরেক্টর ব্রাড অ্যাডামস সংস্থার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অপরাধীদের শাস্তি হতে হবে কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগ করে বাংলাদেশ ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিনজনের বিরুদ্ধে যে প্রমাণাদি তার মূল ভিত্তি তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যেটা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তারা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা পরে বলেছেন, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন করে তাদের কাছ থেকে ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দাবি, তারা অতীতে অনেক মামলায় জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় ও বিচার কার্যক্রমে সঠিক প্রক্রিয়া লঙ্ঘনের তথ্য পেয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আদালতের ডকুমেন্ট থেকে দেখা যায় স্বীকারোক্তি দেওয়ার আগে মুফতি আব্দুল হান্নান ৭৭ দিন এবং অন্য দুই আসামি শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপন ৪০ দিন করে পুলিশি হেফাজতে ছিল।
যদিও বাংলাদেশের আদালত পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অনেক অভিযোগই গ্রহণ করেছে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রায়শই এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করে থাকে।
ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি হামলাগুলোর ঘটনায় দায়ীদের বিচারে সমর্থন দিয়ে আসছে। কিন্তু আমরা বারবারই বলে আসছি যে এসব বিচার অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে এবং বাংলাদেশকে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন