প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
শান্তির জন্য আকুতি
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ রোববার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শেষ হয়েছে। আখেরি মোনাজাতে মহান আল্লাহপাকের দরবারে দুই হাত তুলে কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি শান্তি ও রহমত কামনা করেছেন লাখো মুসল্লি।আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বরাবরের মতোই ভোর থেকেই ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে বেশুমার মানুষ ইজতেমা মাঠের দিকে যাত্রা শুরু করেন। টঙ্গী শহর, ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এরই মাঝে বেলা ১১টা ২২ মিনিটে শুরু হয় আখেরি মোনাজাত। শেষ হয় ১১টা ৫৪ মিনিটে।আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দিল্লির মওলানা সা’দ। তিনি আবেগময় কণ্ঠে আরবি ও উর্দুতে প্রার্থনা করেন ‘হে আল্লাহ হাম সবকো মাপ ফরমাদে, তুঁম তো মাপ করনেওয়ালা। তুঁ হামছে রাজি হো জা। হে আল্লাহ সবকো কবুল ফরমালে। না রাজি কামছে হেফাজত ফরমাদে। হাম সবকো হেফাজত ফরমাদে। ইয়া আল্লাহ তুঁ হামারা দোয়া কবুল ফরমাদে। ইয়া আল্লাহ হামারি ইমানকি হাকিকত হাসিল নসিব ফরমাদে। হামারি দোয়াকো কবুল ফরমাদে। গুনাহ মাপ ফরমাদে। ’প্রতিটি বাক্যের পর লাখো মুসল্লি ‘আমিন’, ‘আমিন’ বলে পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া কবুলের জন্য মিনতি করেন। বিশ্ব ইজতেমার ময়দান ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো মাইকে সেই ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে তুরাগ নদের চারপাশের এলাকায়। মোনাজাতে ব্যক্তিজীবনের গুনাহ মাফ, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং দেশ, জাতি ও বিশ্বের শান্তি কামনা করা হয়।ইজতেমাস্থলে পৌঁছাতে না পেরে অনেক মুসল্লি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ও আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়কে অবস্থান নেন। তাঁরা পুরোনো খবরের কাগজ, পাটি, সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিন বিছিয়ে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। পার্শ্ববর্তী কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাসাবাড়ি, কলকারখানা, অফিস, দোকান ও যানবাহনের ছাদ এবং তুরাগ নদে অনেক নৌকায় অবস্থান নেন মুসল্লিরা।আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ বিভিন্ন অফিস আজ ছুটি। মোনাজাত শেষে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা দেন মুসল্লিরা।টঙ্গীর তুরাগতীরে ৯ জানুয়ারি শুরু হয় এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয় ১১ জানুয়ারি। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে ১৬ জানুয়ারি শুরু হয় ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ তা শেষ হলো।ঢাকার রমনা উদ্যানসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে ১৯৪৬ সালে প্রথম ইজতেমার আয়োজন করা হয়। মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৪৮ সালে ইজতেমার স্থান পরিবর্তন করে বর্তমান হাজি ক্যাম্পের স্থলে নেওয়া হয়। ১৯৫৮ সালে ইজতেমা হয় সিদ্ধিরগঞ্জে। মুসল্লি আরও বাড়তে থাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর তুরাগতীরের মাঠে ইজতেমার স্থান নির্ধারণ করা হয়। সেই মাঠের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শেয়ার করুন