উগ্রপন্থা ছড়াচ্ছে বলে সন্দেহে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ৫৫টি মুসলিম চ্যারিটিকে (দাতব্য সংস্থা) নজরদারির তালিকায় রাখা হয়েছে। নজরদারি করছে দেশটির চ্যারিটি কমিশন। এমন দুটি প্রতিষ্ঠান ‘মুসলিম এইড’ ও ‘এইড কনভয়’। এগুলো বাংলাদেশে বড় পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বুদ্ধিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ক্লেস্টোন’-এর এক প্রতিবেদনে মুসলিম চ্যারিটিগুলোর ওপর নজরদারির খবর উঠে আসে। তারা যুক্তরাজ্যে মুসলিমদের নানা বিষয়ে গবেষণা করে থাকে। তথ্য অধিকার আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠানটি এ তালিকা সংগ্রহ করে।
ক্লেস্টোনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, চ্যারিটি কমিশন ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে দাতব্য সংগঠনগুলোর কার্যক্রম দেখতে ‘চরমপন্থা ও উগ্রবাদ’ নামে নতুন একটি কোড চালু করে। চলতি বছরের ৮ মে পর্যন্ত মোট ৫৫টি মুসলিম চ্যারিটিকে এ কোডের তালিকায় রাখা হয়েছে। এসব সংগঠনের অজান্তে তালিকাটি করে গোপনে নজরদারি করছে কমিশন।
তালিকায় থাকা ‘এইড কনভয়’সহ পাঁচটি দাতব্যপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে কমিশন। বাকি সংগঠনগুলো হলো আল ফাতিহা গ্লোবাল, চিলড্রেন ইন নিড, হিউম্যান এইড ও সিরিয়া এইড। এ পাঁচটি সংগঠনই সিরিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করে।
গত বছরের ৩০ আগস্ট এইড কনভয় ও একই বছরের ২০ নভেম্বর মুসলিম এইডকে নজরদারির তালিকায় নেওয়া হয়। এ দুটি সংগঠনের বিষয়ে এখনো কমিশনের অনুসন্ধান চালু রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারির কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি কমিশন। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সন্ত্রাসবাদ বা উগ্রপন্থা ছড়ানোর কাজে লিপ্ত রয়েছে—এমন সন্দেহে থাকা সংগঠনগুলোকে ‘সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা’ কোডের অধীনে রাখা হয়। এ কোডের অধীনে রাখার কারণগুলো তথ্য অধিকার আইনে অব্যাহতিপ্রাপ্ত।
তবে এক বিবৃতিতে মুসলিম এইড বলেছে, মানবিক ত্রাণ ও উন্নয়নসহায়তা প্রদানকারী সংগঠন হিসেবে মুসলিম এইড তার কাজের স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী।
মুসলিম দাতব্যপ্রতিষ্ঠানগুলো ‘ক্লেস্টোন’ কমিশনের সমালোচনা করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, এই কোডভুক্ত বা এ থেকে নাম প্রত্যাহার করার কোনো নীতিমালা চ্যারিটি কমিশনে নেই। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগ, চ্যারিটি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান স্যার উইলিয়াম শক্রস দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্যপ্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গত মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন চ্যারিটি কমিশনের জন্য ৮০ লাখ পাউন্ড বরাদ্দের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের তহবিল কোথায় খরচ করছে, এ বিষয়ে কমিশনকে নিশ্চিত হতে হবে।
শেয়ার করুন