আপডেট :

        ধর্ষণ মামলায় হার্ভকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০২০ সালে দেওয়া রায় বাতিল

        ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের জেরে স্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল করল সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

        ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

        যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে মারমুখী পুলিশ

        ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেফতার শতাধিক

        পশ্চিম ভারত মহাসাগর অঞ্চলে মাদক পাচার এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে

        গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর যুক্তরাষ্ট্রের !

        রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করার নির্দেশ

        জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান কখনোই ভুলবার নয়

        ৮৮ আসনে দুপুর পর্যন্ত কত ভোট পড়লো

        ২৬ জেলার ওপর তাপপ্রবাহ

        চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

        চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

        কেন্দ্রীয় কি ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে, প্রশ্ন টিআইবির

        ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

        বিমান হামলায় নিহত এক নারীর গর্ভ থেকে প্রসব হওয়া সন্তানটি মারা গেছে

        ফেনীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কিশোর গ্যাং গ্রেফতার

        তাপ্প্রবাহে ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড

        তিন দিনের সফরে বর্তমানে চীনে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        ভারতীয় দলে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বিরাট কোহলি নেই

শীতে বাড়ে শ্বাসকষ্টের সমাধান

শীতে বাড়ে শ্বাসকষ্টের সমাধান

আসছে শীতকাল। শুষ্ক আবহাওয়া ও শীতের কারণে
শ্বাসতন্ত্রে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা
দিতে পারে। বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও
বয়স্ক এবং যাদের আগে থেকেই শ্বাসতন্ত্র-
সংক্রান্ত রোগ আছে তারা। অনেক
ক্ষেত্রে শ্বাসতন্ত্রের রোগের চিকিৎসা
যথাসময়ে করা না হলে নিউমোনিয়ার মতো
মারাত্মক জটিলতাও তৈরি হতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের
বক্ষব্যাধি বিভাগের প্রধান ও অধ্যাপক ডা.
উত্তম কুমার বড়ুয়া
জ্বরের মতো শ্বাসকষ্ট নিজে কোনো রোগ
নয়। এটি অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবে
দেখা দেয়। সাধারণত নাক বন্ধভাব, সর্দি,
চোখে চুলকানি ও পানি ঝরা, বুকে চাপ চাপ
বোধ, কাশি, হাঁচি, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস
ইত্যাদি উপসর্গ শ্বাসকষ্টের সঙ্গে থাকে।
শ্বাসকষ্ট সাধারণত দুই ধরনের।
অ্যাকিউট বা তীব্র ধরনের, যা খুব অল্প
সময়ের মধ্যেই তীব্র শ্বাসকষ্টে রূপান্তরিত
হয়। এতে অতি দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
দ্বিতীয়টি ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি
শ্বাসকষ্ট, যার তীব্রতা প্রথমে কম থাকে,
পরে বাড়তে থাকে।
শীতে কেন বাড়ে?
বিশেষজ্ঞদের মতে শীতকালে দুটি কারণে
শ্বাসতন্ত্র জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত হয় বেশি।
তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম
দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পরিবেশের
শুষ্কতার কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার
বা আর্দ্রতা কমে যায়। এ কারণে জীবাণু
সহজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের
ভেতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শরীর তাদের
সহজে বের করে দিতে পারে না। তখন
জীবাণুরা বংশ বিস্তার করে ও শ্বাসতন্ত্র
আক্রমণ করে।
সাধারণভাবে ফুসফুসের অভ্যন্তরের গাত্রে
এক ধরনের তরল নিঃসৃত হয়, যা ব্রঙ্কিয়াল
নিঃসরণ বলে পরিচিত। এই তরলের সাহায্যে
শ্বাসতন্ত্রের অভ্যন্তরে থাকা সিলিয়ারি
কোষ শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে পড়া
ধুলাবালি ও জীবাণুকে বের করে দেয়।
কিন্তু বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার
কারণে শ্বাসতন্ত্রেও শুষ্কভাব তৈরি হয়।
আবার পিপাসা কম লাগে বলে শীতকালে
পানিও পান কম করা হয়। তাই বঙ্কিয়াল
নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্টসহ
বহু ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়।
আবার যাদের আগে থেকেই শ্বাককষ্টের
সমস্যা আছে বা শ্বাসতন্ত্রের অসুখ আছে,
তাদের ঠিক একই কারণে রোগের প্রকোপ
বাড়ে। দেখা যায়, এমনিতে যারা সারা বছর
শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে না, তাদেরও
কাউকে কাউকে শীতকাল ও শুষ্ক মৌসুমে
ইনহেলার নিতে হয়।
শ্বাসকষ্টের কারণ
শ্বাসকষ্টের মূল কারণ শ্বাসনালির সংকোচন
ও অ্যালার্জেনের কারণে ইরিটেশন। এ
কারণে ফুসফুসে প্রয়োজনীয় বাতাস ঢুকতে
বাধা পায়। রোগীকে ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিতে
হয়। ফুসফুসের ভেতরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নালির
অনেকগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে। রোগী
অক্সিজেনের অভাবে বহু ধরনের শারীরিক
জটিলতার মুখোমুখি হয়।
সাধারণভাবে, সর্দি-কাশি হলেও শ্বাসকষ্ট
হয়। অনেকের সাইনোসাইটিস হলেও
শ্বাসকষ্টের প্রকোপ বাড়ে।
সাইনোসাইটিসের ক্ষেত্রে ঠিক ফুসফুস
শ্বাসকষ্টের জন্য দায়ী নয়। এ ক্ষেত্রে
নাকের ভেতরের গাত্র প্রদাহে আক্রান্ত
হয়ে ফুলে যায়, তাই প্রয়োজনীয় বাতাস নাক
দিয়ে ফুসফুসে ঢুকতে পারে না।
কিছু অসুখের কারণে শ্বাসকষ্ট হয়। যেমন-
পালমোনারি ইডিমা বা ফুসফুসে পানি জমে
গেলে, হৃৎপিণ্ডের বাম নিলয়ের
কার্যকারিত কমে গেলে, অ্যাজমা বা
হাঁপানি থাকলে, ব্রঙ্কাইটিসের কারণে
ফুসফুসের ব্রঙ্কিউলের কিছু কিছু অংশ বন্ধ
হয়ে গেলে, কোনো কারণে ফুসফুসের
ভেতরের ছোট ছোট রক্তনালির অভ্যন্তরের
রক্ত জমাট বেঁধে গেলে, ডায়াবেটিসজনিত
জটিলতা যেমন ডায়াবেটিস
কিটোএসিডোসিস হলে, রক্তে এসিডের
মাত্রা বেড়ে গেলে ইত্যাদি।
রোগ নির্ণয়
রোগের ইতিহাস ও লক্ষণের ওপর ভিত্তি
করেই শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করা হয়। এ
ক্ষেত্রে অনেক ধরনের পরীক্ষা আছে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পালমোনারি ফাংশন
টেস্ট বা ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষা
করা হয়। এ ধরনের পরীক্ষার মধ্যে আছে
স্পাইরোমেট্রি ও মেথাকোলিন চ্যালেঞ্জ।
স্পাইরোমেট্রি খুব সহজ পরীক্ষা। এতে
দেখা হয়, রোগী শ্বাস ছাড়ার সময় কতটা
বাতাস বের করে দিতে পারে, সেটা।
মেথাকোলিন চ্যালেঞ্জ পরীক্ষাটি মূলত
অ্যাজমার জন্য করা হয়।
কিছু ক্ষেত্রে বুকের এক্স-রে, সিটি
স্ক্যানও প্রয়োজন হয়।
অনেক সময় অ্যালার্জি পরীক্ষার মাধ্যমেও
শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করা যায়।
অ্যালার্জি টেস্টের মধ্যে আছে প্রিক
টেস্ট, আরএএসটি বা
রেডিওঅ্যালার্জেসরবেন্ট টেস্ট ইত্যাদি।
শ্বাসকষ্ট হলে খেয়াল রাখুন
* শ্বাসকষ্ট যদি দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকে,
তা সাধারণত ব্রঙ্কাইটিস, টিবি বা যক্ষ্মা,
অ্যাজমা, অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার
কারণে হয়। তাই দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট যদি
থাকে, তা যদি অল্প পরিমাণেও হয়, তবু
ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
* শৈশবে বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে থেকে
যদি শ্বাসকষ্টের ইতিহাস থাকে, তা
সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির জন্য হয়। এ
ধরনের রোগীরা বয়স বেশি হলে তীব্র
ধরনের অ্যাজমায় আক্রান্তের ঝুঁকিতে
থাকে।
* সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানিজনিত
শ্বাসকষ্ট রাতে বা ভোরে বেশি হয়। আবার
কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের কিছু অসুখের
প্রকোপও রাতে বাড়ে।
* শ্বাসকষ্টের সঙ্গে যদি জ্বর থাকে, বুকে
ব্যথা হয়, শ্বাস নিতে শোঁ শোঁ শব্দ হয়, তা
সাধারণত ফুসফুসের মারাত্মক জটিলতা,
যেমন-নিউমোনিয়ার জন্য হয়। এ ধরনের লক্ষণ
প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে
হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।
* যাদের এমনিতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নেই,
কিন্তু কিডনি-সংক্রান্ত জটিলতা আছে,
তাদের হঠাৎ যদি শ্বাসকষ্ট হয়, অবশ্যই
সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কারণ কিডনি জটিলতায় অনেকের রক্তে
এসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শ্বাসকষ্টসহ
প্রাণঘাতি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
চিকিৎসা
যে রোগের কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে সেটার
যথাযথ চিকিৎসা করা জরুরি। এ ছাড়া
শ্বাসকষ্টের যেসব সাধারণ কারণ আছে তা
থেকে নিজেকে দূরে রাখাও চিকিৎসারই
অংশ। যাদের অ্যালার্জেন থেকে শ্বাসকষ্ট
হয়, তাদের ওই বিশেষ অ্যালার্জেন থেকে
দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। যেমন-
ঘরবাড়িতে কার্পেট সরিয়ে ফেলতে হবে।
ঘরদোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
গাঁদাগাঁদি করে একই ঘরে বেশি মানুষ
বসবাস করা যাবে না। তেলাপোকা ও
পোকামাকড় মুক্ত পরিবেশে বসবাস করতে
হবে। ধূমপান করা যাবে না।
সাধারণ শ্বাসকষ্টে ওষুধ হিসেবে
অ্যান্টিহিস্টামিন, ন্যাসাল ডিকনজেস্টেন্ট
ব্যবহার করা যেতে পারে। শ্বাসকষ্ট বেশি
হলে, এমনকি অ্যাজমা না থাকলেও
প্রয়োজনে স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার
করতে হবে।
বাড়িতে চিকিৎসা হিসেবে মেনথলযুক্ত গরম
পানির ভাপ শ্বাসের মাধ্যমে নিলে উপকার
পাওয়া যায়। আরাম পাওয়া যায় আদা চা
খেলেও।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত