আপডেট :

        আদালতে হাজির হবেন ইউনূসসহ সকল আসামি

        রাজবাড়ীতে ট্রেন চলাচল বন্ধ

        ডিজাব’র নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক

        দেশের শাসন কাঠামোর সব জায়গায় শ্রমিকদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার দাবি

        সাঁথিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের কারাদণ্ড

        সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন

        ঘুমের যত্নে প্রাকৃতিক উপায়

        গাড়িতে অযাচিত স্টিকার ব্যবহার

        অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

        উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যার সম্ভাবনা

        বর্তমান সরকার শ্রমিকদের জন্য যা করেছে, অন্য কেউ করেনি

        ২ ভাইকে পিটিয়ে হত্যা: জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি

        ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারও নাই, আমারও নাই

        মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তারের কারন জানা গেলো

        সেচের অভাবে মরছে ২৪২ বিঘা ধান

        তীব্র গরমে ছাতা, ক্যাপ, বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার স্যালাইন বিতরণ করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ

        তীব্র গরম উপেক্ষা করে বিএনপির সমাবেশ

        যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী এবং ইসরায়েলি প্রতিরোধকারীদের সংঘর্ষ

        কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের একটি একাডেমিক ভবনে আটকে থাকা ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার

        মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ

অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের বৈধতার পথ রুদ্ধ ব্রিটেনে

অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের বৈধতার পথ রুদ্ধ ব্রিটেনে

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধ অভিবাসীদের প্রায় নিয়মিত বিরতিতে সাধারন ক্ষমা সহ বিভিন্ন মানবিক বিবেচনায় বৈধতা দেয়া হচ্ছে। মঞ্জুর হচ্ছে এসাইলাম সিকারদের আবেদন।  কিন্তু,ব্রিটেনের অবৈধ অভিবাসীদের জন্য এভাবে ঘোষনা দিয়ে সাধারন ক্ষমার আদলে আর  সুযোগ দেবে না দেশটি। 
ব্রিটেনে অভিবাসন আইনের খ্যাতিমান আইনজীবি, সাংবাদিক ব্যারিষ্টার তারেক চৌধুরী এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান,প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের ক্ষমার সুযোগ দিলে প্রকারান্তরে অবৈধ অভিবাসনে উৎসাহিত করা হয়, ব্রিটেনের নীতিনির্ধারকদের এমন ভাবনা থেকেই ব্রিটেনে ফের সাধারন ক্ষমা ঘোষনার সম্ভবনা নেই। এছাড়া এরকম ঘোষনা দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেয়া হলে পাশ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে ব্রিটেনে প্রবেশ করেও অনেকে এ সুযোগ নেন। 
নাগরিতত্বের আশায় ব্রিটেন ছেড়ে পাশ্ববর্তী ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যারা আবেদন করেছেন,তারাও ফিরে এসে আবেদন করতে পারেন এমন শংকা থেকেই প্রকাশ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতার বিষয়ে সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করার সম্ভাবনা নেই ব্রিটিশ সরকারের তরফে। 
এছাড়া ব্রিটেনে অবৈধ ইমিগ্রান্টদের বিয়ে করে বৈধ হবার পথও এখন প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেছে। ইংলিশ ম্যারেজ রেজিষ্ট্রির ক্ষেত্রে বর কনের আনুসাঙ্গিক তথ্য আগেই জমা দেবার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ব্রিটেনে। আর সেসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হচ্ছে ইউকে বর্ডার এজেন্সির কাছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিয়ের আসর থেকে ব্রিটেনে সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসী বর-কনেকে আটকের বেশ কয়েকটি ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটেনের গণমাধ্যমে। 
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে লেবার পার্টি ব্রিটেনে ক্ষমতাশীন থাকার সময় সরাসরি সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করা না হলেও লিগেসীর আওতায় ২০০৭ সালের আগ পর্যন্ত যারা ব্রিটেনে বসবাসের জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আবেদন করে ব্যার্থ হয়েছেন,তাদের রেগুলারাইজেশনের সুযোগ দেয় ব্রিটেন। 
ব্রিটেনে এখন ঠিক কী পরিমান ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রেন্ট রয়েছে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই খোদ ইউকেবিএর কাছেই। তবে ২০১২ সালে প্রকাশিত লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের প্রকাশিত এক গবেষনা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটেনে সে সময় পর্যন্ত প্রায় আট লাখ ৬০ হাজার অবৈধ অভিবাসী বসবাস করতেন। এর মধ্যে প্রায় ছয় লাখেরই বসবাস ছিল লন্ডন ও এর আশপাশের এলাকায়। 
আর চলতি বছরে ব্রিটেনের অভিবাসন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্পর্কে ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ভিন্স কেবল বলেছেন,চলতি অর্থ বছরে ব্রিটেনের অভিবাসন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। বর্তমানে ব্রিটেনের জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধি ও শ্রমচাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর গড়ে ২ লক্ষ মানুষের অভিবাসন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত আছে।
ভিন্স কেবল মনে করেন, ব্রিটেনের নতুন অভিবাসন আইন এ বাস্তবায়নের  গতি একেবারেই শ্লথ হয়ে পড়েছে। ব্রিটেনের ন্যাশন্যাল ষ্টাটিষ্টিকসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত  ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে ব্রিটেনে মাইগ্রেশনের হার দুই লাখ ৬০ হাজার। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭৮ হাজার বেশি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইউ থেকে থেকে ব্রিটেনে অভিবাসন বন্ধের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষনা দিলেও এখনো এর কার্যকারীতা দৃশ্যমান হয়নি। 
আর দেশটিতে এখন অবৈধ অভিবাসীদের আটকের পর নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। নতুন আইনে ইল্লিগ্যাল ইমিগ্যান্টদের আপিল সুযোগও সীমিত করা হয়েছে। আপিলের ক্ষেত্র বা কারনও ১৭ টি থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে ৪টিতে। এছাড়া অবৈধদের বাড়িভাড়া দিলে জরিমানার বিধানও কার্যকর করেছে ব্রিটেনে।  ব্রিটেনে ইল্লিগ্যাল ইমিগ্র্যান্টদের বিরুদ্ধে শিগগিরই শুরু হতে পারে বড় ধরনের অভিযান। ব্রিটেনের ২০১৫ সালের আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অন্যতম প্রধান ইস্যু হিসেবে ইতিমধ্যেই মাঠে গড়িয়েছে ব্রিটেনে অভিবাসন,অবৈধ অভিবাসীর বিষয়টি। একদিকে ব্রিটেনের জব মার্কেটের সংকট,ইউরোপের মন্দার প্রভাবে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সংকট,বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া সহ নানামুখী বাস্তবতায় ইমিগ্রেশনের বিষয়টি ব্রিটেনের রাজনীতিতে এখন অন্যতম ইস্যুতে পরিনত হয়েছে। 
এর আগের আমলে লেবার পার্টি লিগেসীর আওতায় যেহেতু ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসীদের শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব দিয়েছিল,সে কারনে আগামী নির্বাচনে লেবার পার্টি ফের ক্ষমতায় এলে সুযোগ মিলতে পারে আকাংখিত নাগরিতত্বের,এমন আশায়ও দিন গুনছেন বহু ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রান্ট। 
ব্রিটেনে ইউরোপের বুলগেরিয়া,রোমানিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার ইউরোপিয়ান ন্গারিক ব্রিটেনে প্রবেশ করছেন। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইনের কারনে তাদের ব্রিটেনে আসা ঠেকাতে পারছে না ব্রিটেন।আর ব্রিটেনের অভিবাসন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউকে বর্ডার এজেন্সিও অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কার্যত কার্যকর ব্যাবস্থা নিতে পারছে না,এমন অভিযোগ খোদ ব্রিটেনের রাজনীতিকদের। বিভিন্ন অভিযানের ক্ষেত্রে ইউকেবিএর বিরুদ্ধে বর্নবাদী আচরনের অভিযোগও উঠেছে ব্রিটেনের বিভিন্ন এথনিক মাইনোরিটি কমিউনিটি থেকে। 
আর বাস্তবতা যখন এমন,তখন গত সপ্তাহে অবৈধ অভিবাসীরা সেচ্ছায় দেশে গেলে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে-বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় এমন লিফলেটও বিলি করা হয় লন্ডনে। এর আগে ইউকে বর্ডার এজেন্সির কর্মকর্তারা অবৈধ অভিবাসীদের কাজ না দিতে প্রচারনা চালান বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্টানে। এর মধ্যেও থেমে নেই ইউকে বর্ডার এজেন্সির অভিযান। রেষ্টুরেন্ট সহ বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্টানে প্রায় প্রতিদিনই ইউকেবিএ অভিযান চালিয়ে আটক করছে অবৈধ অভিবাসীদের।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত