আপডেট :

        টানা ছয় ম্যাচ জিতে শেষ চার নিশ্চিত করলো ফাফ ডুপ্লেসিসের দল

        কিরগিজস্তান থেকে দেশে ফিরবেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

        মানুষকে বিশ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া

        মানুষকে বিশ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া

        শ্রমিকদের প্রতি সকলকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

        শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে না

        কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেশীয় পতাকা নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন আদনান আল রাজীব

        ইসরাইল-হামাস তুমুল লড়াই

        ইসরাইল-হামাস তুমুল লড়াই

        ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা

        পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয়ব

        ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংকঃ বিজেপি নেতা অমিত শাহ

        ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাস

        দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে

        দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে উপজেলায় থাকবেন একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট

        বার্সেলোনার সঙ্গে লিওনেল মেসির চুক্তির গল্পটা সবারই জানা

        সেকেন্ড হ্যান্ড পণ্য কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে

        চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত

        চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত

        চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত

চিহ্নিত হচ্ছে ফাহিম সালেহর হত্যাকারী

চিহ্নিত হচ্ছে ফাহিম সালেহর হত্যাকারী

এলএ বাংলা টাইমস


যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। নৃশংসভাবে খুন হওয়া তরুণ উদ্যোক্তা পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ ও দুই সপ্তাহ আগে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক উমাইর সালেহর হত্যাকাণ্ডে আতঙ্কিত প্রবাসীরা। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দুজনের হত্যাকারীকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারলেও নিউইয়র্ক পুলিশ ফাহিমের হত্যাকারীকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করা এখন সময়ের ব্যাপার বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

বড় ধরনের কোনো ব্যবসায়িক লেনদেনের জেরে ফাহিম সালেহকে হত্যা করা হয়েছে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাবে না। করোনা মহামারির বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসা নিউইয়র্কের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সঙ্গে নানা উৎকণ্ঠা তাড়া করছে লোকজনকে। বাংলাদেশি মা-বাবারা সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। নিজেরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। 

ম্যানহাটনে নিজের অভিজাত অ্যাপার্টমেন্টে খুন হয়েছেন ফাহিম সালেহ (৩৩)। নিজের সৃষ্টিশীলতা দিয়ে অল্প বয়সে সারা বিশ্বের নজরে এসেছিলেন তিনি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও তাঁর এগিয়ে যাওয়া অনুসরণ করতেন। ম্যানহাটনের সোয়া দুই মিলিয়ন ডলারের অ্যাপার্টমেন্টে একাই থাকতেন তিনি। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে শুধু জানানো হয়েছে, ফাহিম সালেহকে খুন করা হয়েছে।

সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে ফলাও হয়ে প্রচারিত ফাহিম সালেহর হত্যাকাণ্ড নিউইয়র্ক পুলিশের জন্য হাইপ্রোফাইল মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে কয়েকটি বিষয় নিয়ে মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। ফাহিম সালেহকে খুন করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। পেশাদার খুনি শুরু থেকে বলা হলেও পেশাদার খুনি কাজটি পেশাদারের মতো শেষ করতে পারেননি। ফাহিম সালেহর সঙ্গে লিফটে ওঠা ব্যক্তিকে ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টেই ঢুকতে দেখা গেছে। অ্যাপার্টমেন্টের দরজা দিয়ে লিফটে করে নেমে আসার কোনো ভিডিও চিত্র পাওয়া যায়নি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফাহিমের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় তাঁর এক প্রতিবেশী অস্বাভাবিক শব্দ শুনেছেন এবং ফাহিমের বোনকে তা ফোনে জানিয়েছেন বলে এখন জানা গেছে। হত্যার পর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে ফাহিমের দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। ব্লিচ দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ নির্মাণকাজে ব্যবহার করা ভারী প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরানোর সময় লবি থেকে বা বাইরে থেকে কেউ ফাহিমের খোঁজ করতে আসেন। এ সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকারী তাঁর কাজ শেষ করতে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনওইয়াইপিডির এসব তদন্তকাজের সঙ্গে জড়িত একজনের মতে, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে দুটি লক্ষ্য থাকে। একটি হচ্ছে, মাফিয়া স্টাইলে অন্যদের ভয়াবহতার বার্তা দেওয়া। অন্যটি হচ্ছে, ব্যক্তিকে একদম শেষ করে দেওয়া। শেষের যুক্তিটিই এখানে প্রাধান্য পাচ্ছে। হত্যাকারী ফাহিমের মরদেহ টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভর্তি করে। এ ফাঁকে ধুয়ে মুছে রক্ত পরিষ্কার করে। ঘটনাস্থলে তেমন রক্ত পাওয়া যায়নি। কেউ আসছে বা দরজায় বেল দিচ্ছে, এমন ঘটনার পর হত্যাকারী সাত তলা অ্যাপার্টমেন্টের পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নেমে যায়। এ জন্য তাঁকে চাবি ব্যবহার করতে হয়েছে। 

ফলে এ ধরনের এক্সিট পরিকল্পনা আগে থেকেই নেওয়া ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে ইলেকট্রিক করাতে ও অন্যত্র আঙুলের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নামলেও নিউইয়র্ক নগরী সর্বত্র এখন সিসি ক্যামেরার আওতায়। এসব ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও চিত্র দেখে হত্যাকারীকে চিহ্নিত করা গেছে। অনেকটা করোনাভাইরাসের কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মতো হত্যাকারীকে ধরে ফেলতে পারবে বলে নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে। ফাহিম সালেহর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কিছু খোয়া যায়নি। ঘরের মালামাল পরিপাটি ছিল। কোনো তছনছের চিহ্নও পায়নি পুলিশ। তাই শুরু থেকেই এ ঘটনা যে নিছক ডাকাতি, তা মনে করা হচ্ছে না। নিহত ফাহিম সালেহর পরিবারের পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক পুলিশের কাছে এ অপরাধের তদন্তের গভীরে যাওয়া এবং ফাহিমের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

তদন্তের কোনো হালানাগাদ বিবরণী না পাওয়া গেলেও নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিদের এ হত্যাকাণ্ড বিমর্ষ করে দিয়েছে। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি তরুণদের কাছে ফাহিম সালেহ রোল মডেল হয়ে উঠেছিলেন। অনেকেই নিউইয়র্কের ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছেন। অনেকে বলছেন, ফাহিম সালেহর মতো খ্যাতিমান এক তরুণের হত্যাকাণ্ডের পরও নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটি সমন্বিতভাবে তাদের ক্ষোভটাও দেখাতে পারেনি। প্রতিদিন নানা সভা-সমিতি করলেও বাংলাদেশি কোনো নাগরিক সংগঠককে এ নিয়ে প্রতিবাদী বা ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায়নি।

ফাহিম সালেহর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে করোনা বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানো নিউইয়র্কের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। প্রতিদিন মানুষ খুন হচ্ছে। গুলি হচ্ছে নগরীর এখানে-ওখানে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন। সবচেয়ে নিরাপদ নগরী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্কের পরিস্থিতি করোনা বিপর্যয়ের পরই যেন পাল্টে গেছে। গত সপ্তাহান্তে নগরীতে ৫৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর আগে ফোর্থ জুলাই সপ্তাহান্তে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছে ৬৪ জন। ১২ জুলাই পর্যন্ত নগরীতে ৬৬৪টি গুলির ঘটনা ঘটেছে।

এলএ বাংলা টাইমস/এম/বিএইচ

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত