আপডেট :

        সিডনিতে হনুক্কা অনুষ্ঠানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ১৬; দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নিরাপত্তা জোরদার

        হলিউড পরিচালক রব রাইনার ও স্ত্রী মিশেল লস এঞ্জেলেসের বাড়িতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার

        ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে গুলির ঘটনায় ‘পার্সন অব ইন্টারেস্ট’ আটক, জানিয়েছে পুলিশ

        ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ি, আহত ৬

        প্যানোরামা সিটিতে তিন গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ১

        ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্রিন কার্ড আবেদনকারীকে সাক্ষাৎকারের সময় আটক করল আইসিই

        ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল: ভুক্তভোগীদের জন্য ৩৩.৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তায় ট্রাম্পকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান নিউসমের

        অরেঞ্জ কাউন্টিতে বাইবেল স্টাডি নেতা গ্রেপ্তার: নাবালককে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

        ক্যালিফোর্নিয়ায় ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতা ও শীর্ষ সদস্য গ্রেপ্তার: নিখোঁজ সদস্যের হত্যার অভিযোগ

        ট্রাম্পের চাপ উপেক্ষা করে ইন্ডিয়ানা রিপাবলিকানদের ভোটিং মানচিত্র বাতিল

        প্যাসিফিক নর্থওয়েস্টে বন্যা, হাজারো মানুষ সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি

        ক্যালিফোর্নিয়ায় অভিবাসীদের দেয়া ১৭ হাজার বাণিজ্যিক ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল

        মার্কিন ভিসামুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের পাঁচ বছরের সোশ্যাল মিডিয়া ইতিহাস জমা দেওয়ার প্রস্তাব

        ওয়ারেন কাউন্টির নারী ৪,২০০ ডলারের বেশি SNAP সুবিধা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার

        মার্কিন বিচার বিভাগের সিভিল রাইটস ডিভিশন ‘ধ্বংসের মুখে’—২০০’র বেশি সাবেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ

        কেন্টাকি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত, সন্দেহভাজন আটক

        যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ দেশের অভিবাসন স্থগিত — আফগানদের জন্য অনিশ্চয়তা

        ট্রাম্প প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের আভাস: নতুন বছরে বরখাস্ত হতে পারেন নোম, প্যাটেল ও হেগসেথ

        কোরিয়াটাউনে ভাড়াটিয়াদের গাড়ি টেনে নিয়ে পার্কিং স্থানে ঘর বানাতে চায় মালিক

        ট্রাম্প প্রশাসন জানুয়ারি থেকে ৮৫ হাজার ভিসা বাতিল করেছে: স্টেট ডিপার্টমেন্ট

বুকপকেটে নন্দিতা দাশ

বুকপকেটে নন্দিতা দাশ

লেমন কালারেই জীবনটা আটকে আছে। তাই তো লেবুপাতা পেলেই ছিঁড়ে ঘ্রাণ নেই বুকভরে। আহ কী মিষ্টি ঘ্রাণ!

তাকে প্রথম দেখি ৯৩ সালের মাঝামাঝি কোনো এক সময়। সকালবেলা। তার ক্লাস ছিল সকাল আটটায়। আমারও। তবে ভিন্ন সাবজেক্ট। আমি মাস্টার্স, সে অনার্স। আটটার ক্লাসে ঠিক সময়ে আসার জন্যে বেশ তড়িঘড়ি করেই রিকশা থেকে নেমেছিল কলাভবনের নিচতলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের ফটকের সামনে। পরে নিচতলার করিডোর দিয়ে দ্রুতপায়ে হেঁটে ঢুকেছিল ক্লাসে। পরনে ছিল লেমন কালারের সেলোয়ার-কামিজ আর ওড়না। সকালে গোসল করে চুলগুলো ঠিকমতো শুকাতে পারেনি। পেছনের দিকের চুলের আগায় জমে থাকা বিন্দু বিন্দু পানিতে কামিজের পেছনে পিঠের কিছুটা অংশ ভেজা ছিল।

শ্যামলা বরণ। মুখখানিতে একরাশ মায়া। চোখ দুটিতে কি জাদু ছিল? নাকি চুম্বক। জাদুর কারণেই হয়তো কারো দিকে আর মু্গ্ধতা নিয়ে তাকানো হয়নি। আটকে আছি সেই একজোড়া চোখেই। কী সাংঘাতিক ক্ষমতা একজোড়া চোখের!

সেদিন ভালো লাগার অনুভূতি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। কিছুদিন পর জেনেছিলাম দু’অক্ষরের তার নামটি। জেনেছিলাম ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করবে অনার্সে। আরো জেনেছিলাম একই বিভাগের এক সিনিয়রের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। কলাভবনটা সেই মুহূর্তে কয়েক সেকেন্ডের জন্যে কি নড়েচড়ে উঠেছিল? কেউ টের না পেলেও পেয়েছিলাম আমি।

পাক্কা দু’বছর দূর থেকে তাকে দেখেছি, আর মুগ্ধ হয়েছি। কখনো দোতলা থেকে দেখতে না পেলে নিচে নেমে দাঁড়িয়ে থেকেছি তার বিভাগের সামনে। এখনো ঐ বিভাগের একজনের সঙ্গে দেখা হলেই বলে, আপনি কেন আমাদের বিভাগের সামনে গিয়ে মাঝেমাঝে দাঁড়াতেন, প্লিজ বলেন না?

ভালোবেসেই বিয়ে করেছিল একই বিভাগের সেই সিনিয়রকে। তারপর কেটে গেছে বিশ বছর।

কাজ করি মিডিয়ায়। সম্পাদনার কাজ। একদিন একটা সংবাদ এলো আমার হাতে, ঢাকার বাইরের। আত্মহত্যার খবর। পুরো সংবাদটা পড়ে সহকর্মীকে সেটা দিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যাই। শরীর খারাপ লাগছে বলে। পরদিন সব কাগজেই আত্মহত্যার খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল। কারণ আগেই বলেছি, সে খুব ব্রিলিয়ান্ট ছিল। তার পেশার ক্ষেত্রেও ছিল খুব জনপ্রিয়।

তার ছবি আমার কাছে থাকার কোনো কারণ নেই। কোনোদিন কথাও হয়নি। ভালো লাগার বিষয়টি জানানো তো দূরের কথা। তারপরও কেন জানি তার মুখখানি মনে রাখার জন্যে ভারতের নামকরা অভিনেত্রী নন্দিতা দাশের ছোটবেলার একটি ছবি দেখি। এত মিল দুজনের! হঠাত্ মনে পড়ে গেলে সেই মুখখানি গুগলে গিয়ে দেখি নন্দিতা দাশের হাসিমুখটা। বুকের মধ্যে নন্দিতা দাশকে নিয়ে ঘুরি। ভালোবাসার কথা উঠলে তাচ্ছিল্য করেই বলি ভালোবাসিনি, ভালো লাগত একজনকে। সে হচ্ছে নন্দিতা দাশ।

বুকপকেটে নন্দিতা দাশকে রাখি, আকাশের তারা হয়ে যাওয়া যে মানুষটি কখনো জানেনি কেউ একজন কলাভবনের দোতলা থেকে নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকা তাকে দেখত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজো যাওয়া পড়ে। নিজের বিভাগের সামনে যাই। একবার হলেও দোতলার মাঝামাঝি গিয়ে নিচতলার সেই বিভাগের করিডোর দেখি। যেখানে নন্দিতা দাশ দাঁড়িয়ে থাকত ২৬/২৭ বছর আগে। চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই লেমন কালারের সেলোয়ার-কামিজ আর ওড়নার সেই নন্দিতা দাশকে। চুলের আগার বিন্দু বিন্দু পানিতে পিঠের কাছে কামিজের কিছু্টা অংশ ছিল ভেজা।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত