আপডেট :

        দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্রি হওয়া টিকিটে ৫ কোটি ডলারের জ্যাকপট

        ক্যালিফোর্নিয়ার হান্টিংটন বিচে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা: আহত ৫ জন হাসপাতালে

        প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের রেডিয়েশন থেরাপি চলছে

        টেনেসিতে বিস্ফোরক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ: ১৬ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা, কেউ বেঁচে নেই

        মিসিসিপিতে ফুটবল খেলার পর গণগুলি: নিহত ৪, আহত ১২

        পুতিনের মন্তব্য: ট্রাম্প বঞ্চিত হওয়ায় নোবেল পুরস্কারের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ

        সমুদ্রের তলায় ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক হুমকি

        ইশরাক হোসেনের জীবনের নতুন অধ্যায়: কে তিনি বিয়ে করছেন?

        জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য রাখতে হবে ১ হাজার টাকার মধ্যে

        চুয়েটের ‘টিম এসরো’ নাসার গ্লোবাল স্পেস চ্যালেঞ্জ ২০২৫-এর বিশ্বজয়ী

        নির্বাচনের ফেব্রুয়ারি তাং নিয়ে মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস: মন্তব্য

        সিরিজে রশিদের স্পিনে বাঙালিরা হেরেছে

        আসল নকল মিলছে? আপনার ফোন নকল কিনা জানতে এই উপায়গুলো অনুসরণ করুন

        হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার ১ থেকে ৩৮

        দারুল উলুম দেওবন্দ পরিদর্শনে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী, উষ্ণ অভ্যর্থনা

        যুক্তরাষ্ট্রে অগ্নিসংঘর্ষে নিহত চারজন

        পিআর প্রক্রিয়া নিয়ে উচ্চকক্ষে একমত হওয়ার চেষ্টা

        শাহরুখ খানের ফিটনেস রহস্য: দিনে চারবার খাবার

        ইয়ামালের সমর্থনে এমবাপ্পের বক্তব্য: ‘১৮ বছরের শিশু’

        বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম ভাবাই আমাদের মূল নীতি

বুকপকেটে নন্দিতা দাশ

বুকপকেটে নন্দিতা দাশ

লেমন কালারেই জীবনটা আটকে আছে। তাই তো লেবুপাতা পেলেই ছিঁড়ে ঘ্রাণ নেই বুকভরে। আহ কী মিষ্টি ঘ্রাণ!

তাকে প্রথম দেখি ৯৩ সালের মাঝামাঝি কোনো এক সময়। সকালবেলা। তার ক্লাস ছিল সকাল আটটায়। আমারও। তবে ভিন্ন সাবজেক্ট। আমি মাস্টার্স, সে অনার্স। আটটার ক্লাসে ঠিক সময়ে আসার জন্যে বেশ তড়িঘড়ি করেই রিকশা থেকে নেমেছিল কলাভবনের নিচতলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের ফটকের সামনে। পরে নিচতলার করিডোর দিয়ে দ্রুতপায়ে হেঁটে ঢুকেছিল ক্লাসে। পরনে ছিল লেমন কালারের সেলোয়ার-কামিজ আর ওড়না। সকালে গোসল করে চুলগুলো ঠিকমতো শুকাতে পারেনি। পেছনের দিকের চুলের আগায় জমে থাকা বিন্দু বিন্দু পানিতে কামিজের পেছনে পিঠের কিছুটা অংশ ভেজা ছিল।

শ্যামলা বরণ। মুখখানিতে একরাশ মায়া। চোখ দুটিতে কি জাদু ছিল? নাকি চুম্বক। জাদুর কারণেই হয়তো কারো দিকে আর মু্গ্ধতা নিয়ে তাকানো হয়নি। আটকে আছি সেই একজোড়া চোখেই। কী সাংঘাতিক ক্ষমতা একজোড়া চোখের!

সেদিন ভালো লাগার অনুভূতি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। কিছুদিন পর জেনেছিলাম দু’অক্ষরের তার নামটি। জেনেছিলাম ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করবে অনার্সে। আরো জেনেছিলাম একই বিভাগের এক সিনিয়রের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। কলাভবনটা সেই মুহূর্তে কয়েক সেকেন্ডের জন্যে কি নড়েচড়ে উঠেছিল? কেউ টের না পেলেও পেয়েছিলাম আমি।

পাক্কা দু’বছর দূর থেকে তাকে দেখেছি, আর মুগ্ধ হয়েছি। কখনো দোতলা থেকে দেখতে না পেলে নিচে নেমে দাঁড়িয়ে থেকেছি তার বিভাগের সামনে। এখনো ঐ বিভাগের একজনের সঙ্গে দেখা হলেই বলে, আপনি কেন আমাদের বিভাগের সামনে গিয়ে মাঝেমাঝে দাঁড়াতেন, প্লিজ বলেন না?

ভালোবেসেই বিয়ে করেছিল একই বিভাগের সেই সিনিয়রকে। তারপর কেটে গেছে বিশ বছর।

কাজ করি মিডিয়ায়। সম্পাদনার কাজ। একদিন একটা সংবাদ এলো আমার হাতে, ঢাকার বাইরের। আত্মহত্যার খবর। পুরো সংবাদটা পড়ে সহকর্মীকে সেটা দিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যাই। শরীর খারাপ লাগছে বলে। পরদিন সব কাগজেই আত্মহত্যার খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল। কারণ আগেই বলেছি, সে খুব ব্রিলিয়ান্ট ছিল। তার পেশার ক্ষেত্রেও ছিল খুব জনপ্রিয়।

তার ছবি আমার কাছে থাকার কোনো কারণ নেই। কোনোদিন কথাও হয়নি। ভালো লাগার বিষয়টি জানানো তো দূরের কথা। তারপরও কেন জানি তার মুখখানি মনে রাখার জন্যে ভারতের নামকরা অভিনেত্রী নন্দিতা দাশের ছোটবেলার একটি ছবি দেখি। এত মিল দুজনের! হঠাত্ মনে পড়ে গেলে সেই মুখখানি গুগলে গিয়ে দেখি নন্দিতা দাশের হাসিমুখটা। বুকের মধ্যে নন্দিতা দাশকে নিয়ে ঘুরি। ভালোবাসার কথা উঠলে তাচ্ছিল্য করেই বলি ভালোবাসিনি, ভালো লাগত একজনকে। সে হচ্ছে নন্দিতা দাশ।

বুকপকেটে নন্দিতা দাশকে রাখি, আকাশের তারা হয়ে যাওয়া যে মানুষটি কখনো জানেনি কেউ একজন কলাভবনের দোতলা থেকে নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকা তাকে দেখত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজো যাওয়া পড়ে। নিজের বিভাগের সামনে যাই। একবার হলেও দোতলার মাঝামাঝি গিয়ে নিচতলার সেই বিভাগের করিডোর দেখি। যেখানে নন্দিতা দাশ দাঁড়িয়ে থাকত ২৬/২৭ বছর আগে। চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই লেমন কালারের সেলোয়ার-কামিজ আর ওড়নার সেই নন্দিতা দাশকে। চুলের আগার বিন্দু বিন্দু পানিতে পিঠের কাছে কামিজের কিছু্টা অংশ ছিল ভেজা।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত