আপডেট :

        বিমান হামলায় নিহত এক নারীর গর্ভ থেকে প্রসব হওয়া সন্তানটি মারা গেছে

        ফেনীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কিশোর গ্যাং গ্রেফতার

        তাপ্প্রবাহে ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড

        তিন দিনের সফরে বর্তমানে চীনে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        ভারতীয় দলে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বিরাট কোহলি নেই

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭৩ জনকে সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার

        ভারতে ভোটারদের আগ্রহ বাড়াতে বিনামূল্যে খাবার

        থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আশা প্রধানমন্ত্রীর

        বাজারে বেড়েই চলছে অস্থিরতা

        ইংরেজ গায়ক, গীতিকার ও সঙ্গীতজ্ঞ জন লেননের গিটার

        ইংরেজ গায়ক, গীতিকার ও সঙ্গীতজ্ঞ জন লেননের গিটার

        ভারতে আজ চলছে ৭ দফা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল

        মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য উন্নতি

        প্রচণ্ড এই গরম থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়ে দোয়া

        যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার

        এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো

        মার্কিন বিমান আটকে দিলো ‘যুদ্ধবিরোধী’ কুমির!

        চিতাবাঘের আক্রমণে আহত জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হুইটাল

        যুক্তরাষ্ট্রে গরুর দুধেও বার্ড ফ্লু শনাক্ত

সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের কাছে জিম্মি আমেরিকার ফোবনা সম্মেলন

সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের কাছে জিম্মি আমেরিকার ফোবনা সম্মেলন

ফোবানা সম্মেলন উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাংলাদেশী সংগঠনগুলোর সর্ববৃহৎ আয়োজন। যা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার সবচেয়ে বড় মঞ্চ।

তবে উত্তর আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্ববৃহৎ এই মিলনমেলায় অস্তিত্ব এখন চরম হুমকির মুখে। একদিকে অভ্যন্তরীন স্বার্থানেষী গোষ্টি ও অন্যদিকে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এই দুই শ্রেণীর নীলনকশায় ফোবানা সম্মেলন আজ অস্তিত্ব সংকটে পরেছে।
জানা গেছে, ৩০শে আগস্ট থেকে ১লা সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৩দিন ব্যাপী ৩৩তম ফোবানা সম্মেলন নিয়ে যখন উত্তর আমেরিকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের উৎসব মুখর থাকার কথা। তবে আজ সেখানে তারা দ্বিধাবিভক্ত ও ফোবানা সম্মেলনের সফলতা ও সার্থকতা নিয়ে শংকাগ্রস্থ।
কারণ একদিকে মূল ফোবানা সমর্থিত ‘ড্রামা সার্কেল, নিউ ইউর্ক’ ৩৩তম ফোবানা সম্মেলন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সপন্ন করেছে। অন্যদিকে ফোবানার মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া স্বার্থনেষী একটি সমর্থনে বাংলাদেশ আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি নামে একটি তথাকথিত সংগঠন নিউ ইয়র্ক শহরে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে পৃথক একটি ফোবানা সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। আর ধোঁয়াশাপূর্ণ পরিবেশ বিদ্যামান সংকটকে ব্যবহার করে স্বার্থনেষী একটি মহল তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, যখন সবাই মূলত ব্যস্ত ৩৩তম ফোবানা সম্মেলনের সফলতা নিশ্চিত করতে এবং উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী সংগঠনগুলোকে একতাবদ্ধ করতে। তখন এই স্বার্থনেষী গোষ্ঠী কার্যরত একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের হাতে পরবর্তী ফোবানা সম্মেলনকে তুলে দিতে ব্যস্ত।তাদের নীলনকশা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ফোবানা সম্মেলন এর আয়োজন করার অনুমতি দেয়া হবে ওয়াশিংটন ডিসির একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রকে যার কেন্দ্র রয়েছে ‘আমেরিকান বাংলাদেশ বিসনেস এসোসিয়েশন’ নামে একটি বাণিজ্যিক সংগঠন। যার নতুন নাম হয়েছে বাংলাদেশ আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি সংগঠন। এই সংগঠনটি পূর্বেও স্বার্থনেষী মহলের সহযোগিতায় ২০০৯ ও ২০১১সালে দুইবার ফোবানা সম্মেলন আয়োজন করে যা ভুয়া ফোবানা সম্মেলন হিসাবে বহুল পরিচিত বলে দাবি রয়েছে।
আরো জানা গেছে, ফোবানা সম্মেলন এর মত একটি তাৎপর্যপূর্ণ/গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন এ স্বার্থানেষী কিছু ব্যাক্তি ও প্রতারকচক্র সক্রিয় থাকবে এটাই স্বাভাবিক, তবে সম্মেলনটিই যখন কুক্ষিগত হয় তখন আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। বাংলাদেশ আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি নামক সংগঠনটির পরিচালক অথবা মূলব্যাক্তি স্টল বরাদ্দ, বিজ্ঞাপনের অঙ্গীকার, ব্যাবসায়িক অঙ্গীকার, ভুয়া কাগজে মানুষ পাচার এমন কোন কর্মকান্ড নেই যা ২০০৯ ও ২০১১ সালের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে করেনি।
শুধুমাত্র সম্মেলনের নামে বিভিন্ন সময় প্রবাসী বাংলাদেশীদের থেকে এই প্রতারক চক্র বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয়। যার মধ্যে প্রবাসী রেজাউল করিম নামক একব্যক্তি থেকে ১০ হাজার, গোলাম ফরিদ আক্তার থেকে ১২ হাজার, রফিকুল ইসলাম থেকে ৭ হাজার, জাকির হোসেন থেকে ১৫ হাজার, রুমন নামক এক ব্যাক্তি থেকে ২৩ হাজার, শামীম আলী থেকে ৩৯ হাজার ও মাইনুল ইসলাম তাপস থেকে ৭ হাজার মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।
এমনকি ফোবানা সম্মেলন শেষ করে ভেনু ভাড়া না দিয়ে শুধুমাত্র ফোবানা সম্মেলন নয় বরং পুরো বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের মুখে চুনকালি দিয়ে এই প্রতারক পরবর্তীতে ফেডারেল কোর্টে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে পিটিশিন পর্যন্ত দাখিল করেছে। আলেক্সান্ড্রিয়া ফেডারেল কোর্ট তাকে এবং তার স্ত্রীকে দেউলিয়া হিসাবে রায়ও দেয়।
এ ব্যাক্তির প্রতারণা শুধু ফোবানা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সীমাবদ্ধ নয়। বরং প্রতারণাই তার পেশা। কখনো সে ব্যাবসার কথা বলে প্রতারণা করা, কখনও রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে প্রতারণা করা, কখনও বা সমাজ সেবা বা ধর্মের নামে প্রতারণা করে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। 
এ প্রতারক উত্তর আমেরিকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের ব্যবসার কথা বলে ও ব্যবসায় অংশীদারিত্ত দেয়ার প্রতিশ্রুতি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাক্তিকে তার ফাঁদে ফেলেছে। যার মধ্যে নাইমা রহমান থেকে ২৬ হাজার, হানিফ পিপলস টেক থেকে ১৮ হাজার, মেজর আলম থেকে ২০ হাজার, ড. রাজ্জাক থেকে ৮০ হাজার মার্কিন ডলার হাতিয়ে নেয়ার কথা জানা যায়।
তার প্রতারণা এ তালিকায় আছে নাম না জানা আরো অসংখ্য বাংলাদেশী এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন অভিযোগ রয়েছে। এ মানুষগুলো এ প্রতারকের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকদের ভয়ে এক সময় চুপ থাকলেও পরবর্তীতে অনেকেই তাদের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের ও প্রতারণার বর্ণনা দেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক হল ড. রাজ্জাক এর ঘটনা । তার স্ত্রী ড. নাজমা জাহান থেকে জানা যায়, ড. রাজ্জাক এই প্রতারককে কয়েক দফায় প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার দেয় ব্যাবসায়িক কারণে। পরবর্তীতে যখন তিনি বুঝতে পারেন তিনি এক সংবদ্ধ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন তখন তার আর করার কিছু ছিল না। ড. রাজ্জাক মানসিক ভাবে প্রচন্ডভাবে ভেঙে পড়েন এবং এই মানসিক যন্ত্রনায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এই প্রতারক এতটাই কৌশলী ও চতুর যে তার খপ্পরে যে পরে সে সর্বশান্ত হওয়ার আগে তার জাল থেকে বের হতে পারে না। এই প্রতারক মসজিদ উন্নয়ন তহবিল এ অনুদান এর কথা বলে আলেক্সান্ড্রিয়া বাংলাদেশী সম্প্রদায় এর মসজিদ উন্নয়ন তহবিল থেকে ৬০ হাজার মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছে।
এছাড়াও জানা যায়, বাংলাদেশে অনেক দরিদ্র পরিবারকে উত্তর আমেরিকায় এনে কাজ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিবারগুলোকে সর্বশান্ত করেছে।
যারা ফোবানার সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত তাদের সকলেই কমবেশি জানেন এ প্রতারকের কুকীর্তির কথা। কিন্তু এতকিছু জেনেও ফোবানার অভ্যান্তরিন একটি স্বার্থনেষী মহল শুধুমাত্র তাদের ব্যাক্তিগত লাভের জন্য ফোবানা সম্মেলনকে আবার এই প্রতারকের হাতে তুলে দেবার নীলনকশা করছে।
এ প্রতারক তার কুকীর্তির আড়াল করতে তার মতো আরো কয়েকটি পকেট সংগঠনকে নিয়ে একটি আয়োজক গোষ্ঠী তৈরি করেছে। আর শিকড়বিহীন ব্যাঙের ছাতার মত এ সংগঠনগুলো কখনো সামাজিক আন্দোলন ও সমাজমুলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিল না। তাই তাদের থেকে সর্তক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজন বলে দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর