আপডেট :

        দীপিকা-রণবীরের বেবি দুয়া: মায়ের চোখ নিয়ে ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে ছবি

        সরকারে দলীয় কেউ থাকলে সরিয়ে দিতে হবে: রিজভী

        গ্রিন টি না কি লাল চা, কোনটিতে উপকার বেশি

        থাইল্যান্ড সীমান্তে স্টারলিংকের অবৈধ ব্যবহার: মিয়ানমার স্ক্যাম সেন্টারের নতুন শক্তি।

        নিউইয়র্কের পেন স্টেশনে নবজাতক ফেলে যাওয়া মা গ্রেপ্তার

        অভিষেকে ৫ উইকেট ‘বুড়ো’ আফ্রিদির

        উবার ও লিফট চালকদের জন্য বাধ্যতামূলক ইউনিয়ন আলোচনার আইন পাশ করলো ক্যালিফোর্নিয়া

        যমুনায় এনসিপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ: ছাত্র-নাগরিক দলের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা

        দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় সাবেক প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে দম্পতির কারাদণ্ড

        ভয়াবহ ফ্রিওয়ে দুর্ঘটনায় অন্তত ৩ জন নিহত, ট্রাক চালক মাদকাসক্ত অবস্থায় গ্রেপ্তার

        পুতিনের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত করল হোয়াইট হাউস, ‘সময় নষ্ট’ করতে চান না ট্রাম্প

        ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম নির্মাণে কে দিচ্ছেন অর্থ? ঘিরে রহস্য ও বিতর্ক

        পুতিনের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত করল হোয়াইট হাউস

        অশোভন বার্তা ফাঁসের পর ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী পল ইঙ্গ্রাসিয়ার পদত্যাগ

        এইচ-১বি ভিসাধারী কর্মী নিয়োগ বন্ধ রাখলো ওয়ালমার্ট

        ম্যাকগাইভার এখন কোথায়?

        হোয়াইট হাউসের একাংশ ভেঙে ফেলছেন ট্রাম্প

        LAX-এর টার্মিনাল ৫-এ পরিবর্তন, ২০২৮ অলিম্পিকের জন্য সংস্কার শুরু

        ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পটনে নারী ক্রেতার গুলিতে দোকানে এক ব্যক্তি নিহত

        মাত্র ২৯ বছর বয়সে প্রয়াত আমেরিকান দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার ড্যানিয়েল নারডিটস্কি

ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম নির্মাণে কে দিচ্ছেন অর্থ? ঘিরে রহস্য ও বিতর্ক

ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম নির্মাণে কে দিচ্ছেন অর্থ? ঘিরে রহস্য ও বিতর্ক

ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ২৫ কোটি ডলার (প্রায় ১৮৭ মিলিয়ন পাউন্ড) ব্যয়ে হোয়াইট হাউসের বলরুম নির্মাণ শুরু হলেও, এই বিশাল প্রকল্পের অর্থদাতাদের পরিচয় এখনো রহস্যে ঢাকা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) ইস্ট উইংয়ের একটি অংশ ভেঙে ৯০,০০০ বর্গফুট (৮,৩৬০ বর্গমিটার) জায়গাজুড়ে এই বিশাল বলরুমের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে এর একটি বড় অংশের অর্থ দেবেন। এছাড়াও কিছু নাম-না-জানা ধনী দাতা ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পে ২ কোটি ডলারের বেশি অনুদান দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

তবে এই অর্থায়নের মডেল নিয়ে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন আইনি বিশেষজ্ঞরা।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের প্রশাসনে নৈতিকতা বিষয়ক উপদেষ্টা রিচার্ড পেইন্টার বিবিসিকে বলেন, “আমি এই বিশাল বলরুম প্রকল্পকে নৈতিকতার এক দুঃস্বপ্ন হিসেবে দেখি। এটি হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকারের বিনিময়ে অর্থ সংগ্রহের এক উপায় বলে মনে হচ্ছে। এইসব করপোরেশনগুলোর প্রত্যেকেরই সরকারের কাছ থেকে কিছু না কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।”

১৫ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে সম্ভাব্য দাতাদের জন্য এক ডিনারের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে ব্ল্যাকস্টোন, ওপেনএআই, মাইক্রোসফট, কয়েনবেস, প্যালান্টিয়ার, লকহিড মার্টিন, অ্যামাজন এবং গুগলের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্ক জেটস দলের মালিক উডি জনসন এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টাম্পা বে বুকানিয়ার্সের মালিক শ্যারি ও এডওয়ার্ড গ্লেজার।

সিবিএস নিউজ–এর হাতে পাওয়া একটি প্রতিশ্রুতি ফর্মে উল্লেখ ছিল, অনুদানদাতারা তাদের অবদানের জন্য “বিশেষ স্বীকৃতি” পেতে পারেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেই স্বীকৃতি বলরুমের কাঠামোতে দাতাদের নাম খোদাই করে প্রদর্শন করা হতে পারে।

প্রাথমিকভাবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, বলরুমে ৬৫০ জনের বসার ব্যবস্থা থাকবে। তবে ট্রাম্প সম্প্রতি জানান, এটি ৯৯৯ জন পর্যন্ত ধারণ করতে পারবে।

এখন পর্যন্ত মাত্র একজন দাতার নাম প্রকাশ করা হয়েছে। আদালতের নথি অনুযায়ী, ইউটিউব ২.২ কোটি ডলার দিচ্ছে ট্রাম্পের সঙ্গে ৬ জানুয়ারি ২০২১ সালের ক্যাপিটল দাঙ্গার পর তার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা নিয়ে মামলার নিষ্পত্তির অংশ হিসেবে।

তবে বাকি দাতারা কারা এবং তারা কত অর্থ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দাতাদের পূর্ণ তালিকা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। সিবিএস-এর প্রাপ্ত নথি অনুযায়ী, এই অর্থ Trust for the National Mall নামে একটি অলাভজনক সংস্থা পরিচালনা করবে, যা ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের সঙ্গে যৌথভাবে তহবিল সংগ্রহ করে।

অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, “অনেক উপস্থিত অতিথি অত্যন্ত উদার ছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “কেউ কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, ২৫ মিলিয়ন ডলার কি যথেষ্ট অনুদান হবে? আমি বলেছি—অবশ্যই, আমি তা গ্রহণ করব।”

হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলেছে যে এই অর্থ সংগ্রহে কোনো অনিয়ম নেই এবং নতুন বলরুমটি ভবিষ্যৎ প্রশাসনগুলোরও ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া, এটি নির্মাণে মার্কিন করদাতাদের অর্থ এক সেন্টও ব্যয় হবে না।

সাবেক হোয়াইট হাউস এক্সিকিউটিভ শেফ ও ক্যাম্প ডেভিডের জেনারেল ম্যানেজার মার্টিন মঙ্গিয়েলো বিবিসিকে বলেন, “এই বলরুমে বিনিয়োগ শেষ পর্যন্ত নিজেই তার খরচ তুলে নেবে। এখন বাইরে অস্থায়ী তাঁবু বসিয়ে বড় ইভেন্ট আয়োজন করতে ১০ লাখ ডলারেরও বেশি খরচ হয়।”

তবে রিচার্ড পেইন্টার সতর্ক করে বলেন, এটি “পে-টু-প্লে” (অর্থের বিনিময়ে প্রভাব কেনা) কেলেঙ্কারিতে পরিণত হতে পারে—যেমনটি অতীতে উভয় দলের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

১৯৯০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনও লিংকন বেডরুমে অতিথিদের থাকার সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ গ্রহণের অভিযোগে সমালোচিত হয়েছিলেন।

সম্প্রতি ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের বার্ষিক Easter Egg Roll ইভেন্টের জন্য করপোরেট স্পন্সরও খুঁজেছিলেন, যা নিয়েও অনেকে একই ধরনের প্রশ্ন তুলেছিলেন।

ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের দাবি, নতুন বলরুম নির্মাণ প্রয়োজনীয়, কারণ হোয়াইট হাউসে বর্তমানে বড় মাপের রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ বা বিদেশি নেতাদের সংবর্ধনা দেওয়ার মতো স্থায়ী স্থান নেই। বর্তমানে এসব ইভেন্ট সাধারণত সাউথ লনে তাঁবুতে আয়োজন করতে হয়।

তবে পেইন্টার সতর্ক করেন, “এই নতুন বলরুম রাজনৈতিক অর্থসংগ্রহের জন্য বিশাল প্রলোভন সৃষ্টি করবে। এখন পর্যন্ত সীমিত স্থান থাকার কারণে সবাইকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো সম্ভব হয় না—যা আসলে ভালোই, কারণ এটি অন্তত ‘অর্থের বিনিময়ে প্রভাব’ সংস্কৃতিকে সীমিত রাখে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এখানে সরাসরি কোনো দুর্নীতি প্রমাণ করা কঠিন হবে। কিন্তু নিঃসন্দেহে ট্রাম্প প্রশাসন নৈতিকতার সীমারেখা অতিক্রম করছে।”

  এলএবাংলাটাইমস/ওএম

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত