আপডেট :

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

        বাল্টিমোরে সেতুধসে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের সব ক্রু ভারতীয়

        কে হচ্ছেন নতুন বন্ড

        জাহাজের ধাক্কায় বাল্টিমোরে সেতু ধসের সর্বশেষ

        শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো করা উচিত: সাকিব

        রিকশাওয়ালাদের গেম শো

        আর্জেন্টিনায় ৭০ হাজার সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত

        সর্বজনীন পেনশন স্কীম কার্যক্রমের উদ্বোধন

        ভুটানের রাজাকে গার্ড অব অনার ও বিদায়ী সংবর্ধনা

        গাজায় মানবিক বিপর্যয় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে পরিণত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান

        ভুয়া পিতৃপরিচয় দিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে প্রতারণা

        বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়সী প্রশংসায় ডোনাল্ড লু

        মস্কোতে আইএসের হামলা চালানো, বিশ্বাস হচ্ছে না মারিয়া জাখারোভার

        নগরীর অচল ১১০টি সিসি ক্যামেরা হল সচল

        একনেকে ১১ প্রকল্পের অনুমোদন

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

বাংলাদেশ আর সংঘাত চায় না, জীবনযাত্রার মানের উন্নতি চাই: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ আর সংঘাত চায় না, জীবনযাত্রার মানের উন্নতি চাই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আর কোনো সংঘাত চায় না, বরং জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি চায়। দেশে বিরাজমান টেকসই ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থসামাজিক অগ্রগতির একমাত্র কারণ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রোববার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে দেশে বিরাজমান অব্যাহত শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ১৪ বছরে বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, সরকার ২০০৮ সালের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে আমরা দারিদ্র্যের হার ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস এবং শিক্ষার হার ও মানুষের গড় আয়ু বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। একটি শান্তিপূর্ণ টেকসই পরিবেশ জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে সহায়ক এবং সবাইকে এটি মনে রাখতে হবে।

‘জনগণই শক্তি, জনগণই শক্তির উৎস’-বঙ্গবন্ধুর এই উক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই বিশ্বাস নিয়েই আমার পথচলা। বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষায় অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এক নম্বর দেশ হিসাবে আমরা বিশ্বজুড়ে শান্তি বজায় রাখছি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ শতাংশ। সরকার তা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এদেশে কোনো মানুষ দরিদ্র, গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষ অন্তত তাদের মৌলিক অধিকার-খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান পাবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে সব বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ যে কাজটি ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে করেছে।

তিনি বলেন, এখন কেন এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা (চলছে)? অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে না কেন? এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য হাজার হাজার শিশু ও নারী বিশ্বজুড়ে অমানবিক জীবনযাপন করছে। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তারা নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছিল, যা তাকে ১৯৭১ সালের পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, আমরা চাই পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক, কোনো ধরনের অশান্তি থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। প্রতিমুহূর্তে আমাদেরকে তাদের (স্বাধীনতাবিরোধীদের) বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন, সারা জীবন শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। কিন্তু তাকে জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে। আমাদের কী দুর্ভাগ্য, যে মানুষটি সারা জীবন শান্তির কথা বলেছেন, তাকে তার জীবন দিতে হয়েছিল-এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আজ তিনি আমাদের মধ্যে নেই, তবে আমরা চাই যে তার দেশ উন্নত এবং সমৃদ্ধ হিসাবে গড়ে উঠুক। দেশে-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করছেন, তাদের স্বীকৃতি দিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শান্তি পুরস্কার’ প্রবর্তনেরও ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং মূল বক্তব্য দেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও গবেষক মোনায়েম সরকার। মূল বক্তব্যের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও তার জুলিও-কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তির ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকিট ও প্রথম দিনের কভার উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি স্যুভেনির প্রকাশনার প্রচ্ছদও উন্মোচন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।

বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত-প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত দুই দেশের আরও উন্নয়ন। রোববার চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। চীনের মন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও হাইটেক সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ চীনের উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দ করেছে এবং তারা সেখানে শিল্প স্থাপন করতে পারে। চীনের উপমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর এম্বাসাডর-এটলার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ওআইসির দৃঢ় প্রতিশ্রুতির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে দৃঢ় প্রতিশ্রুতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। রোববার গণভবনে ওআইসি মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এম্বাসেডর এটলার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র বিষয়ক ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন। ওআইসির সহকারী মহাসচিব রাষ্ট্রদূত আসকার মুসিনভও উপস্থিত ছিলেন।



এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত