শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ , পত্রিকা অফিসে আগুন
৪১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়
এলএবাংলাটাইমস
চলতি অর্থবছর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বছর। বিশ্ববাজারে জ্বালানি মূল্যের অস্থিরতা, আইএমএফের শর্ত, ডলার সংকট, লোডশেডিং, ভর্তুকি সমন্বয়, দফার দফায় বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এ খাতে তৈরি করেছে অস্থিরতা। এমনই এক সংকটময় সময়ে আসছে নতুন অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রস্তাবিত বাজেট।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য প্রস্তাব করা হচ্ছে ৪১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। বাজেটে গুরুত্ব পাবে বিদ্যুৎখাতে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন। পাশাপাশি জ্বালানি খাতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে অভ্যন্তরীণ উৎস্য থেকে গ্যাস উত্তোলন, সঞ্চালন ও পাইপলাইন বৃদ্ধি।
এবারের বিদ্যুৎখাতের জন্য মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার ২০ কোটি ৬ লাখ টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এ খাতে ৬১টি প্রকল্পে এ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ১১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৬৯ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৪ হাজার ১৯৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা (ইসিএ ৭৭৮.১৫ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩ হাজার ৪১৬ কোটি ৮১ লাখ) এবং প্রকল্প সাহায্য (পিএ) ২২ হাজার ৩৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। মোট ৩৮ হাজার ২০ কোটি ৬ লাখ টাকার মধ্যে পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি ৬ লাখ টাকা।
অপরদিকে বাজেটে জ্বালানি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এ খাতে ৪১টি প্রকল্পে এ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ৫২০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা, নিজস্ব অর্থায়নে ২৫ প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৪১২ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে ৭৬৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা বাজেটে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে। জ্বালানি খাতে থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে ২৬ কোটি ৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ বাজেটে চাওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রকল্প ছাড়াও পরিচালনা ব্যয় হিসেবে প্রস্তাব থাকবে ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
বিগত ২০২২-২৩ বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের জন্য বরাদ্দ ছিল ২৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা এবং জ্বালানি খাতের বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।
কিন্তু বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় (বিদ্যুতে ২৪ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা এবং জ্বালানিতে ১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা), যা প্রস্তাবিত বাজেটের চাইতে ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা কম ছিল। সেবার মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮ শতাংশ এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। যদিও সংশোধিত বাজেটে তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩২ হাজার কোটি টাকায়।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এবারের বরাদ্দের অর্ধেকেরও বেশি রাখা হয়েছে বিদ্যুতের সঞ্চালন এবং বিতরণ খাতে। তাছাড়া আমরা স্টিল বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। এসমস্ত ঘাটতি পূরণেই এ বাজেট দেওয়া হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাজেটের পরিমাণ বৃদ্ধি ছিল অবশ্যম্ভাবী।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এজাজ আহমেদ বলেন, সরকারের হাতে এখন বেশ কয়েকটি বিগ প্রজেক্ট রয়েছে। সেগুলো সমাপ্ত করা প্রথম প্রায়োরিটি। এছাড়া ট্রান্সমিশন লাইনেও খরচ, তাই এবারের বাজেটের পরিমাণ বেড়ে গেছে। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, গ্যাস উত্তোলনে খুবই কম বাজেট রাখা হয়েছে। দেশীয় খাতে মনোযোগ না বাড়ালে কিন্তু সংকট সহযে কাটবে না। আমি বলেছিলাম যে অন্তত ১০টা গ্যাসকূপ ড্রিলিং করা হোক। তখন মন্ত্রী বলেছিলেন, ২০০ মিলিয়ন ডলার লাগবে। সুতরাং সেটা দিতে হবে। আর এ খাতে এখনো ভর্তুকি লাগবেই। আপাতত সেখান থেকে বের হওয়া যাবে না।
এলএবাংলাটাইমস/এজেড
শেয়ার করুন