ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে
সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রচলিত আদালতের বদলে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্ভব কিনা, তা নিয়ে আইনজ্ঞদের দ্বিমত থাকলেও ১৪ আগস্ট বুধবার হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে শেখ হাসিনা সরকার ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। জামায়াতের কয়েকজন শীর্ষ নেতাসহ শতাধিক স্বাধীনতাবিরোধীকে সাজা দেয় ট্রাইব্যুনাল। এই প্রথম স্বাধীনতাবিরোধী নয়, এমন কারও বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ পড়ল। ১৪ আগস্ট সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও গুলির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হতে পারে। এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি, যারা আদেশ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইনে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব। তবে ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত সমকালকে বলেন, ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রবাসী সরকার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। আইন হয় ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই। আইনটির উদ্দেশ্যই ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা। তাই ট্রাইব্যুনালে বর্তমান সময়ে সংঘটিত অপরাধের বিচার হতে পারে না। ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার জন্য দণ্ডবিধি এবং সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য নয়। শুধু যুদ্ধাপরাধীর বিচারের উদ্দেশ্যে এ বিধান রাখা হয়েছে। এসব কারণে ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারের যৌক্তিকতা নেই। শেখ হাসিনা সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি, হত্যার নির্দেশ ও পরিকল্পনাকারী আখ্যা দিয়ে গতকালই তিনিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন